প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র ।
নরেন্দ্র মোদীর গড়ে দাঁড়িয়ে তাঁকে কড়া চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। আজ আমদাবাদে দলীয় কর্মীদের সভায় এক বক্তৃতায় রাহুল বলেন, ‘‘কংগ্রেস গুজরাতে জিতবে। এই গুজরাত থেকেই নতুন কংগ্রেসের জন্ম হবে। কংগ্রেসের জন্ম হয়েছিল কোথা থেকে? আমাদের সবচেয়ে বড় নেতা মহাত্মা গান্ধী ব্রিটিশ শাসনকালে লড়াইয়ের রাস্তা দেখিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ভয় পেয়ো না, ভয় দেখিও না। এই চিন্তা গুজরাত থেকেই শুরু হয়। ওরা আমাদের কার্যালয়ে ভাঙচুর করেছে। আমরা সুযোগ পেয়ে গিয়েছি। এ বার ওদের সরকার ভাঙব। বিজেপিকে শিক্ষা দেব।’’
লোকসভায় রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা নিয়ে বিতর্কে বিজেপি নেতাদের দিকে দেখিয়ে রাহুল বলেছিলেন, ‘যারা নিজেদের হিন্দু বলে দাবি করে, সেই বিজেপি সারা দিন হিংসা ও বিদ্বেষ ছড়িয়ে বেড়ায়’। এর পরে বিজেপি ও বজরং দল আমদাবাদে কংগ্রেস দফতরে হামলা করে। কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষও হয়। যার জেরে উল্টে পাঁচ কংগ্রেস নেতাকে আটক করেছে গুজরাতের বিজেপি সরকারের পুলিশ। আজ আমদাবাদে এসে জেলবন্দি নেতাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন রাহুল। পাশাপাশি দলীয় কর্মিসভায় বক্তৃতা দিয়ে গুজরাত জয়ের চ্যালেঞ্জ ছোড়েন। দলীয় বৈঠকের পরে, রাজকোট গেম জ়োন অগ্নিকাণ্ড, বরোদায় নৌকাডুবি, মোরবি সেতু ভাঙা, সুরাতের অগ্নিকাণ্ডে নিহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও দেখা করেছেন তিনি।
আজ গুজরাত জয়ের প্রশ্নে আত্মবিশ্বাসী রাহুল অযোধ্যায় বিজেপির পরাজয়ের ভাষ্যটিকে বারবার সামনে রেখে কর্মীদের বলেছেন, ‘‘আমি আপনাদের ভিতরের খবর দিচ্ছি। নরেন্দ্র মোদী বারাণসী নয়, অযোধ্যা থেকেই প্রথমে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ওদের দলের পক্ষ থেকে বারবার সমীক্ষা করে তাঁকে জানানো হয়, তিনি যদি অযোধ্যা থেকে দাঁড়ান, তা হলে হারবেন। তাঁর রাজনৈতিক জীবন শেষ হয়ে যাবে। তাই বারাণসী থেকেই তাঁকে দাঁড়াতে হয়। সেখানে আমরা একটা-দুটো ভুল করেছি, না হলে মোদীকে হারিয়ে দিতাম। কোনও মতে দেড় লাখ ভোটে জিতে নিজের মানসম্মান বাঁচিয়েছেন।’’ রাহুলের বক্তব্য, ‘‘যে রামমন্দির আন্দোলন লালকৃষ্ণ আডবাণী শুরু করেছিলেন, তার কেন্দ্রে ছিল অযোধ্যা। সেই অযোধ্যায় ইন্ডিয়া জোট বিজেপিকে হারিয়ে দিয়েছে। এটা কম বড় কথা নয়।’’
গুজরাত নির্বাচনে কংগ্রেসের পক্ষে যে জেতা সম্ভব, আজ সেই বিশ্বাস স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চেয়ে রাহুলের বক্তব্য, ‘‘আপনারা ভাবতে পেরেছিলেন অযোধ্যায় বিজেপি হারবে? নরেন্দ্র মোদী কোনও মতে সম্মান বাঁচাবেন? এই গুজরাতেও অযোধ্যার মতোই হারবে বিজেপি। আপনাদের শুধু গুজরাতের জনতাকে বলতে হবে, ভয় পাবেন না। কৃষক, শ্রমিক, ছোট ব্যবসায়ীদের কাছে গিয়ে বলতে হবে। গত নির্বাচনে আমরা মোদীর সঙ্গে ঠিক মতো লড়াই দিইনি। কিন্তু ২০১৭-র বিধানসভা ভোটে জান দিয়ে লড়েছি চার মাস। তাতে মাত্র ১৬ আসনের ব্যবধানে হেরেছি। পরের ভোটের এখনও তিন বছর বাকি আছে। আমরা বিপুল ভাবে জিতব। মোদীর ভিশন-এর বেলুন ফেটে গিয়েছে!’’ সংসদের প্রসঙ্গ তুলে রাহুল বলেন, ‘‘আমি সংসদ কক্ষে মোদীর উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে বলেছি, আপনি নিজেই বলেছেন যে আপনি বায়োলজিকাল নন। আপনার সঙ্গে ঈশ্বরের সরাসরি সংযোগ রয়েছে। তা-ই যদি থাকবে, তা হলে অযোধ্যায় হারলেন কী ভাবে?’’ তাঁর কথায়, লোকসভা ভোটের ন্যায়পত্র বানানোর সময় এক লাখ মানুষের মতামত শোনা হয়েছিল। তাই এত জোরালো হয়েছিল কংগ্রেসের ইস্তাহার। গুজরাত ভোটের ইস্তাহার তৈরির সময়েও রাজ্যের সবার কথা শোনা হবে। মোদীকে নিশানা করে রাহুল বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি নিজেকে ঈশ্বর ভাবেন আর বাকিদের নশ্বর মানবপ্রজাতি, তিনি গুজরাতের সাধারণ মানুষকে দিগদর্শন দেবেন কী করে?’’ পরে তিনি তাঁর সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন, “বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবার হিংসা আর ঘৃণার প্রচার চালাচ্ছে। কিন্তু অযোধ্যায় যে ভাবে ইন্ডিয়া তাদের হারিয়েছে, সে ভাবে গুজরাতেও হারাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy