ছবি: সংগৃহীত।
চিনের আগ্রাসনের প্রশ্নে মোদী সরকারকে কতটা আক্রমণ করা উচিত, তা নিয়ে কংগ্রেসের মধ্যে টানাপড়েন ছিলই। রাহুল গাঁধী লাগাতার আক্রমণ চালিয়ে গেলেও কংগ্রেসের অনেক নেতার মত, এতে লাভ হচ্ছে না। উল্টে কংগ্রেসের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিজেপি।
আজ রাহুল গাঁধী ভিডিয়ো বার্তায় জানান, চিন যে ভারতের জমি দখল করে রেখেছে, তা তিনি বলেই যাবেন। এ জন্য নিজের ‘রাজনৈতিক কেরিয়ার’ জলাঞ্জলি দিতে হলেও তিনি তৈরি। রাহুল বলেন, “যদি কেউ চায় যে চিন এ দেশে ঢোকেনি— এমন মিথ্যে কথা আমি বলি, আমি তাতে রাজি নই। আমি সেটা কিছুতেই করব না। তার জন্য আমার গোটা কেরিয়ার যদি জলে যায়, তারও পরোয়া করি না। কিছুতেই আমি মিথ্যে বলব না!”
কংগ্রেসের শিবির মনে করছে, রাহুলের এই একরোখা অবস্থান যতটা না মোদী সরকারের বিরুদ্ধে, তার থেকে অনেক বেশি তাঁর দলের নেতাদের একাংশ বিরুদ্ধে। কারণ কংগ্রেসের অনেক নেতাই মনে করেন, লাদাখে চিনা অনুপ্রবেশ নিয়ে মোদী সরকারের সমালোচনা না-করে চিনকে নিশানা করা উচিত। না-হলে জাতীয়তাবাদ, দেশপ্রেমের প্রশ্ন তুলে কংগ্রেসকেই প্যাঁচে ফেলার চেষ্টা করবে বিজেপি। তা ছাড়া রাহুল যে ভাবে চিন নিয়ে ইংরেজিতে একেবারে তাত্ত্বিক কথা বলছেন, তা মানুষের মধ্যে সাড়া ফেলবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘পাশে আছি, পাশে থাকুন’, মোদীকে বার্তা মমতার
আরও পড়ুন: কলকাতা, মুম্বই এবং নয়ডায় বিশ্বমানের কোভিড পরীক্ষাকেন্দ্রের উদ্বোধন
রাহুল তা মানতে নারাজ। তাঁর যুক্তি, “আমি মনে করি, চিনের অনুপ্রবেশ নিয়ে যাঁরা মিথ্যে বলছেন, তাঁরাই জাতীয়তাবাদী নন। দেশপ্রেমী নন।” চিন ভারতের ভূখণ্ড দখল করে রয়েছে ভাবলেই তাঁর রক্ত গরম হয়ে ওঠে, জানিয়েছেন রাহুল। কংগ্রেসের অনেক নেতাই ঘরোয়া আলোচনায় বলছেন, রাহুল যেটা বিশ্বাস করেন, সেটাই বলছেন। কিন্তু তার রাজনৈতিক লাভ-ক্ষতির দিকটাও ভাবতে হবে।
লকডাউন পর্বের গোড়া থেকেই রাহুল নেট-দুনিয়ায় সক্রিয়। প্রথমে রঘুরাম রাজন, অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে রাহুলের আলাপচারিতার ভিডিয়ো সামনে আনা হয়েছে। তার পরে দেশ-বিদেশের কোভিড বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। এর পর ১৭ জুলাই থেকে রাহুলের চিন্তাভাবনা তুলে ধরতে তাঁর বিভিন্ন বিষয়ের
ভিডিয়ো ফেসবুক-টুইটারে ছাড়া হচ্ছে। সেখানে সাদা কুর্তা-পাজামার বদলে সাদা বা নীল শার্ট পরে হাজির হচ্ছেন রাহুল। আজ তাঁর চতুর্থ ভিডিয়ো ফেসবুক-টুইটারে এসেছে। কিন্তু লাইক, শেয়ার, রিটুইট-এর হিসেবই বলছে, সাড়া ক্রমশ কমছে। বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা আগেই বলছেন, কংগ্রেস সভাপতি পদে রাহুলকে ‘রিলঞ্চ’-এর চেষ্টা হচ্ছে। বিজেপি নেতাদের কটাক্ষ, এ সব আসলে রাহুলের ‘পাপ্পু’-র ভাবমূর্তি বদলানোর চেষ্টা।
লোকসভা ভোটের আগে রাফাল-দুর্নীতি নিয়ে রাহুল গাঁধীর ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ বলে আক্রমণের কৌশল নিয়েও কংগ্রেসের অন্দরমহলে সংশয় ছিল। ভোটে ভরাডুবির পরে রাহুল নিজেই অভিযোগ তুলেছিলেন, তাঁর পাশে গোটা দল দাঁড়ায়নি। এ বার লাদাখ নিয়েও একই প্রশ্নের মুখে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে রাহুল বলেছেন, তিনি কড়া সুরেই নিশানা করবেন। ওয়ার্কিং কমিটির আপত্তি থাকলে তাঁকে বারণ করতে পারে। আজও রাহুলের মন্তব্য, “ভারতের জমি দখল নিয়ে আমি সত্যিটাই বলব। তাতে রাজনৈতিক মূল্য চোকাতে হবে কি না, তা নিয়ে ভাবনি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy