Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪

রাহুলের খোঁচা, বিক্ষোভ সংসদে

গণতন্ত্র, সংবিধানকে শিকেয় তুলে মহারাষ্ট্রে সরকার গড়েছে বিজেপি এবং এখনও বিরোধী দলের বিধায়ক কেনার খেলায় নেমেছে— এই অভিযোগ তুলে আজ সংসদ স্তব্ধ করার কৌশল আগেই তৈরি করেছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী।

অধিবেশনে যোগ দিতে সংসদে রাহুল গাঁধী। সোমবার। পিটিআই

অধিবেশনে যোগ দিতে সংসদে রাহুল গাঁধী। সোমবার। পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৫৮
Share: Save:

ঠিক এক মাসের মাথায় প্রত্যাবর্তন ঘটল রাহুল গাঁধীর। সংসদ শুরু হতেই তাতিয়ে দিলেন দলের সাংসদদের। বিশেষ করে ‘নিজের’ রাজ্য কেরলের সাংসদদের। আর তার জেরে আজ তুলকালাম হল লোকসভায়। মার্শালদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ফলে চলতি লোকসভায় আজ প্রথম বার সভা স্থগিত করতে হল স্পিকারকে। কংগ্রেস সাংসদদের শাস্তি দেওয়া নিয়েও চলছে রাজনৈতিক টানাপড়েন।

গণতন্ত্র, সংবিধানকে শিকেয় তুলে মহারাষ্ট্রে সরকার গড়েছে বিজেপি এবং এখনও বিরোধী দলের বিধায়ক কেনার খেলায় নেমেছে— এই অভিযোগ তুলে আজ সংসদ স্তব্ধ করার কৌশল আগেই তৈরি করেছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। সকালে ১০, জনপথে তাঁর বাড়িতে এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়। সংসদ চত্বরে পৌঁছেও গাঁধী মূর্তির সামনে ধর্নায় শামিল হন স্বয়ং সনিয়া। এরপর সকাল ১১টায় অধিবেশন শুরু হতেই এলেন রাহুল। রোদে পোড়া চেহারা। প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রথম প্রশ্নটি ছিল তাঁরই। স্পিকার তাঁর নাম ডাকতেই রাহুল উঠে বললেন, ‘‘স্পিকার মহোদয়, আমি আজ প্রশ্ন করতেই এসেছিলাম। কিন্তু প্রশ্ন করার কোনও অর্থই নেই। কারণ, মহারাষ্ট্রে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে।’’ ‘ধন্যবাদ’ বলে তিনি নিজের আসনে বসে পড়েন। আর ওয়েলে নেমে তেড়েফুঁড়ে প্রতিবাদ জানান কংগ্রেসের অন্য সাংসদেরা।

স্পিকার ওম বিড়লা সাধারণত লোকসভার অধিবেশন মুলতুবি করতে চান না। কিন্তু কংগ্রেস সাংসদেরা বড় বড় প্ল্যাকার্ড, ব্যানার মেলে ধরায় তাঁর মুখ ঢেকে যায়। সঙ্গে ‘মোদী সরকার হায় হায়’ স্লোগান।

তখন শাস্তির হুঁশিয়ারি দেন স্পিকার। মার্শালও ডাকেন আর তাঁদের সঙ্গেই সঙ্গে তুমুল ধস্তাধস্তি শুরু হয় কংগ্রেসের কেরলের দুই সাংসদ হিবি ইডেন এবং টি এন প্রতাপনের। শাসক শিবির থেকে ছুটে আসেন প্রহ্লাদ পটেল, জগদম্বিকা পালের মতো সাংসদেরা। কিন্তু ধস্তাধস্তি থামানো যায়নি। স্পিকার কংগ্রেসের দুই সাংসদকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। লোকসভা ভোটের পর এই প্রথম হট্টগোলের জেরে নিম্ন কক্ষের অধিবেশন মুলতুবি করতে হল। যে কক্ষে নরেন্দ্র মোদীর নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা। রাজ্যসভাতেও অশান্তি চরমে ওঠে। সেটিও মুলতুবি হয়।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ছিলেন ঝাড়খণ্ডে ভোটের প্রচারে। সংসদ ভবনে জরুরি বৈঠকে বসেন অমিত শাহ। অন্য দিকে বৈঠক করেন সনিয়াও। কেরল ও তামিলনাড়ুর দুই মহিলা সাংসদ— রম্যা ও এস জ্যোতিমণি সনিয়ার কাছে নালিশ জানান, পুরুষ নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁদেরও ধাক্কা দিয়েছেন। তাতে মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে, মহিলা ও সাংসদ হিসেবে। ক্ষুব্ধ সনিয়া স্পিকারের কাছে পাল্টা নালিশ জানান, মার্শালদের ‘অভদ্র’ আচরণের বিহিত চাই। অন্য দিকে, অমিতের নির্দেশে রাজনাথ সিংহ, রবিশঙ্কর প্রসাদেরা যান স্পিকারের কাছে। কংগ্রেসের সাংসদদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি তুলে। সরকারের এক সূত্রের মতে, স্পিকার কড়া শাস্তির পক্ষে। ফের এমন হলে পাঁচ বছরের জন্যই বার করে দেওয়া হবে সাংসদদের।

এর পর রাহুলকে দুষতে শুরু করেন বিজেপির সাংসদেরা। গিরিরাজ সিংহ বলেন, ‘‘রাহুল গাঁধী আজ আসার আগেই গোটা ঘটনা সাজিয়ে এসেছিলেন। নিজে বসে থেকে দলের সাংসদদের আটকানোর চেষ্টা করেননি। বরং নেতাদের গুন্ডাগিরি করতে দিয়েছেন।’’ রবিশঙ্করও বলেন, ‘‘যে কংগ্রেস মহারাষ্ট্রে অনৈতিক জোট গড়ছে, তারা গণতন্ত্র হত্যার কথা বলছে? আর তাদের নেতা বসে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন?’’ কংগ্রেসের মণীশ তিওয়ারির পাল্টা বক্তব্য, ‘‘মার্শাল দিয়ে সাংসদদের হুমকি দেওয়ানো কখনও দেখিনি। মহিলা সাংসদরাও ছাড় পেলেন না। নিন্দাজনক।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Congress Rahul Gandhi Sonia Gandhi Parliament
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy