কংগ্রেসের অন্দরে দাবি উঠেছে, রাহুল ফের দায়িত্ব নিক।
কংগ্রেসের একটা বড় অংশ থেকে তাঁর কাছে দ্রুত সভাপতির পদে ফেরার দাবি উঠলেও, রাহুল গাঁধী এখনই এ বিষয়ে ইচ্ছুক নন।
রাহুলের ঘনিষ্ঠ শিবির সূত্রের খবর, রাহুল আগে কংগ্রেসের সংগঠনে বড় রকমের রদবদল চাইছেন। রাজস্থানে অশোক গহলৌত-সচিন পাইলট বিবাদ প্রকাশ্যে এসে যাওয়ার পরে বিভিন্ন রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকদের ভূমিকা নিয়েও তিনি বিরক্ত। রাজস্থানের দায়িত্ব থেকে অবিনাশ পাণ্ডেকে সরিয়ে অজয় মাকনকে বসানো হয়েছে। একই ভাবে আরও অন্তত আধ ডজন রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকদের ভূমিকা নিয়েও তাঁর ক্ষোভ রয়েছে। কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটিও ঢেলে সাজানো হতে পারে। রাজীব-জমানার পোড়খাওয়া নেতা গুলাম নবি আজাদকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেস সূত্র বলছে, কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক খুব দ্রুত ডাকা হবে। প্রথমে শনিবারই জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক হতে পারে বলে শোনা গিয়েছিল। কিন্তু তার পরে কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়, সোমবার বা তার পরে বৈঠক হতে পারে। বৈঠকে সনিয়াকেই অন্তর্বর্তী সভানেত্রী পদে আপাতত রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হওয়ারই সম্ভাবনা প্রবল। শেষ পর্যন্ত সব কিছু নির্ভর করবে ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা সভাপতি পদে নির্বাচন চেয়ে কতটা সরব হন, তার উপরে। সনিয়াকেই অন্তর্বর্তী সভানেত্রী পদে রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলে সেই মর্মে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।
গত ১০ অগস্ট অন্তর্বর্তী সভানেত্রী পদে সনিয়া গাঁধীর এক বছর হয়ে গিয়েছে। তার আগে থেকেই কংগ্রেসের অন্দরে দাবি উঠেছে, রাহুল ফের দায়িত্ব নিক। রাহুল অনিচ্ছুক হলে সভাপতি পদে নির্বাচনেরও দাবি তুলেছেন শশী তারুর, মনীশ তিওয়ারির মতো কংগ্রেস নেতারা। কিন্তু এআইসিসি-র নেতাদের যুক্তি, কংগ্রেসের সংবিধানের ১৮ (এইচ) অনুচ্ছেদ মেনে সনিয়াকে অন্তর্বর্তী সভানেত্রী করা হয়েছিল। সেখানে বলা রয়েছে, সভাপতির পদত্যাগ, মৃত্যুর মতো জরুরি পরিস্থিতিতে এআইসিসি-র প্রবীণতম সাধারণ সম্পাদক সভাপতির দায়িত্ব সামলাবেন। তার পর কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি কাউকে অস্থায়ী সভাপতি নিয়োগ করবে। সভাপতি পদে নির্বাচনের আগে পর্যন্ত তিনিই দায়িত্ব সামলাবেন। অর্থাৎ, অন্তর্বর্তী সভাপতি পদের কোনও মেয়াদ বাঁধা নেই। কিন্তু সংবিধানে বছরে অন্তত এক বার এআইসিসি-র অধিবেশনের কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু ২০১৮-র মার্চের পরে আর এআইসিসি-র অধিবেশন হয়নি।
আরও পড়ুন: ইএমআই স্থগিত সাময়িক ব্যবস্থা ছিল, চাপে সুর বদল শক্তিকান্তের?
কংগ্রেস সূত্রের ব্যাখ্যা, রাহুল দায়িত্ব নিতে তৈরি। কিন্তু নিজের শর্তে। নিজস্ব ‘টিম’ তৈরি করে। বেশ কিছু প্রবীণ নেতা, যাঁরা ইউপিএ-সরকারের মন্ত্রী ছিলেন, তাঁদের নিয়েও রাহুল শিবিরের ক্ষোভ রয়েছে। সম্প্রতি কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ বৈঠকে রাহুল ঘনিষ্ঠ রাজীব সতাভ সেই ক্ষোভই উগরে দিয়েছিলেন বলে সূত্রের ব্যাখ্যা। কিন্তু তার অর্থ এমন নয় যে প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি সব প্রবীণ নেতাকেই সরিয়ে তরুণ নেতাদের তুলে আনতে চাইছেন।
উদাহরণ হিসেবে কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, “এত দিন বলা হত, রাহুল শিবিরের সঙ্গে আহমেদ পটেলের শিবিরের লড়াই চলছে। আহমেদ ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চাইছেন। কিন্তু রাজস্থান পর্বে দেখা গেল, রাহুল, প্রিয়ঙ্কা আহমেদ পটেলের মাধ্যমের সাহায্যেই সচিন পাইলটকে বুঝিয়ে ঘরে ফেরালেন। আহমেদের সঙ্গে প্রিয়ঙ্কা মিলে সচিনের নালিশ শুনতে গেলেন।”
কিন্তু রাহুলের এ ভাবে পর্দার আড়াল থেকে দলের কাজকর্ম চালানো নিয়েই একাধিক প্রবীণ নেতাদের আপত্তি রয়েছে। তবে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে তাঁরা কতটা সরব হবেন, তা নিয়ে অবশ্য কেউই নিশ্চিত নন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy