দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের সঙ্গে রাজঘাটের অনশন মঞ্চে রাহুল গাঁধী। ছবি: পিটিআই।
দলিতদের ক্ষোভকে সামনে রেখে লোকসভা ভোটের আগে দলকে চাঙ্গা করতে চেয়েছিলেন রাহুল গাঁধী। আর আজ কংগ্রেসের দেশব্যাপী অনশন কর্মসূচি পণ্ড করতে দিনভর ব্যস্ত ছিল বিজেপি।
এ দিন রাজঘাটে অনশনে বসেছিলেন রাহুল নিজে। কিন্তু তার আগেই বিজেপি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি ছড়িয়ে দেয়, সকালে রেস্তোরাঁয় বসে ছোলে-বাটোরা খাচ্ছেন দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অজয় মাকেন-সহ জনা কয়েক নেতা।
বিপত্তি তার পরেও। সকাল এগারোটায় অনশন শুরুর কথা থাকলেও রাহুল আসেন একটা নাগাদ। তা নিয়েও কটাক্ষ করে বিজেপি। ১৯৮৪-র শিখ-বিরোধী দাঙ্গা অভিযুক্ত দুই কংগ্রেস নেতা জগদী. টাইটলার এবং সজ্জন কুমারের উপস্থিতি নিয়েও তৈরি হয় বিতর্ক।
তবে সেই সব ধাক্কা সামলে বিজেপি-কে পাল্টা আক্রমণ করতে রাহুল শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছেন বলেই দাবি কংগ্রেসের। এই মুহূর্তে দলিত কাঁটা বিঁধে রয়েছে বিজেপির গলায়। দলীয় সভাপতি হিসেবে প্রথম দেশব্যাপী কর্মসূচির শেষে সেই দলিত-ক্ষতে ঘা দিয়ে রাহুল বলেন ‘‘নরেন্দ্র মোদী জাতপাতে বিশ্বাসী। তিনি দলিত-বিরোধী। তাঁর মনে দলিতদের জন্য কোনও জায়গা নেই। এটি আর কোনও গোপন বিষয় নয়। একেবারে স্পষ্ট। ২০১৯ সালে তাঁকে হারিয়ে দেখাব।’’
কংগ্রেস সূত্রের খবর, বারাণসীতে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে অখিলেশ যাদবকে প্রার্থী করতে চাইছে সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টির একটি অংশ। গত কালই সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব জানিয়েছিলেন, ২০১৯ সালে বিরোধীরা মহাজোট করেই এগোবেন। আর সেই সুরকে আরও জোরালো করে রাহুল দাবি করেন, সব দল একসঙ্গে লড়লে বারাণসী থেকে নরেন্দ্র মোদীকেও পরাস্ত করা সম্ভব। রাহুল আজও বিরোধী শিবিরকে ঐক্যের বার্তা দিতে চেয়েছেন বলে মনে করছেন রাজনীতিকেরা। শুধু তাই নয়, চলতি মাসে দিল্লিতে দলিত সম্মেলন ডেকেছেন তিনি। মাসের শেষে আর একটি দেশব্যাপী আন্দোলনের কর্মসূচি রয়েছে কংগ্রেসের। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া ক্ষোভকে পুঁজি করতে তিনি লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যেতে চান বলে জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতারা।
আরও পড়ুন: অনশনের আগে ছোলে, বাটোরে
গত কালের সুরকে আরও চড়িয়ে রাহুল বলেন, ‘‘বিজেপির এক নেতা (অমিত শাহ) বিরোধীদের ‘জানোয়ার’ বলেন। কিন্তু সত্য হল, দেশের আজ সব ব্যক্তি সরকারের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে। মোদী সরকার দলিত-আদিবাসী-সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে।’’ পরিস্থিতি সামলাতে শেষ বেলায় রাজনাথ সিংহকেও আসরে নামায় বিজেপি। তিনি দাবি করেন, ‘‘এখনই দলিতেরা সবচেয়ে সুরক্ষিত।’’
বিজেপি নেতারা মুখে যা-ই বলুন, উত্তরপ্রদেশের পরিস্থিতি নিয়ে যে তাঁরা উদ্বিগ্ন তা-ও আজ ফের বোঝা গিয়েছে। ফুলপুর-গোরক্ষপুরে হারের পরে ওই রাজ্যের দলিত সাংসদেরা ক্ষোভ প্রকাশ করায় প্যাঁচে পড়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কাল পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে উত্তরপ্রদেশ যাচ্ছেন অমিত শাহ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy