রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
আরএসএস চাইলে পাঁচ মিনিটে নরেন্দ্র মোদীকে সরিয়ে দিতে পারে বলে দাবি করলেন রাহুল গান্ধী।
ইউরোপ সফরে গিয়ে প্যারিসের সায়েন্সেস পিয়ো বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় বলেছেন, বিজেপি ভোটের মেরুকরণ করে। বিদ্বেষ ছড়ায়। বিভাজন তৈরি করে। ধনী মুনাফাখোর শিল্পপতিরা বিজেপিকে আর্থিক মদত দেয়। বিজেপির পিছনে এই পরিকাঠামোটি কাজ করে। রাহুল বলেন, “নরেন্দ্র মোদী এই পুরো কাঠামোটা চালাচ্ছেন, এটা বলা অতি সরলীকরণ। আসলে নরেন্দ্র মোদী এই গোটা কাঠামোর একটি যন্ত্র। আমি নিশ্চিত, সঙ্ঘ পরিবার চাইলে পাঁচ মিনিটে নরেন্দ্র মোদীকে সরিয়ে দিতে পারে।”
প্রথমে বেলজিয়াম, তার পরে ফ্রান্স হয়ে রাহুল গান্ধী আজ নেদারল্যান্ডসে পৌঁছেছেন। দিল্লিতে জি২০ সম্মেলন ঘিরে গোটা প্রচারের আলো যখন মোদীর উপরে, তখন প্যারিস থেকে মোদীকে নিশানা করে তাঁর সঙ্গে ফের শিল্পপতি গৌতম আদানির সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। রাহুলের বক্তব্য, আদানির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর গভীর সম্পর্ক এখন সুপ্রতিষ্ঠিত। আদানি গোষ্ঠী ভারতের বাইরে টাকা পাচার করছে। নিজেদের সংস্থার শেয়ার দরে কারচুপি করে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে তুলছে। সেই টাকায় ভারতের সমস্ত সম্পত্তি দখল করেছে। কিছুটা হুঁশিয়ারির সুরেই রাহুল বলেছেন, “আদানিরা ছাড় পাবেন না। তাঁদের জবাবদিহি করতে হবে।” একই সঙ্গে ভারতে যাঁরা সংখ্যালঘু, দলিতদের উপরে হামলা চালাচ্ছে, যাঁরা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের নিরপেক্ষতা বিসর্জন দিচ্ছেন, তাঁদের সম্পর্কেও রাহুল বলেছেন, “যারা ভারতের অন্তরাত্মার উপরে আঘাত করছেন, তাদের মূল্য চোকাতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ ফের এই কাজ করার আগে ভাবনাচিন্তা করে।”
দলিত-সংখ্যালঘুদের উপরে হামলাকে ভারতের ‘সব থেকে বড় সমস্যা’ আখ্যা দিয়ে রাহুল বলেছেন, মোদী চাইলে যে কোনও সময়ে ধর্ম নিয়ে ছাতি ঠোকা, দলিত-সংখ্যালঘুদের উপরে হামলা বন্ধ করে দিতে পারেন। তিনি বলেন, “আমি গীতা পড়েছি। উপনিষদ পড়েছি। হিন্দু ধর্মগ্রন্থ পড়েছি। বিজেপি যা করে, তার মধ্যে কোনও হিন্দুত্ব নেই। কোনও বইয়ে লেখা নেই, দুর্বলকে তুমি ভয় দেখাও, আঘাত করো। হিন্দু জাতীয়তাবাদী বলে কিছু হয় না। ওরা আসলে যে কোনও মূল্যে ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়।”
জবাবে বিজেপি সাংসদ তেজস্বী সূর্য রাহুলকে নিশানা করে বলেছেন, উনি ভাবেন বই পড়ে হিন্দুত্ব পালন করা হয়। তা থেকেই বোঝা যায় ওঁর আমাদের ধর্ম সম্পর্কে ভাবনা কতখানি সঙ্কীর্ণ। তেজস্বী বলেন, “ভারত যখন জি২০-তে আন্তর্জাতিক ঐকমত্য তৈরি করে ফেলছে, তখন রাহুল দূরে ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে হাতে গোনা কিছু লোকের সামনে কান্নাকাটি করছেন, তা থেকে স্পষ্ট মানুষ গত এক দশক আগে কেন ওঁর রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করেছেন।” রাহুল অবশ্য প্যারিসে যুক্তি দিয়েছেন, ভারতের সংখ্যাগুরু হিন্দুরা সবাই বিজেপিকে ভোট দেয়, এই ভাবনাটাই ভুল। বিরোধীদের জোট ইন্ডিয়া ৬০ শতাংশ ভোট পায়। বিজেপিকে ৪০ শতাংশ লোকে ভোট দেয়। সংখ্যাগুরুরা অনেক বেশি সংখ্যায় বিরোধীদের ভোট দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy