Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
National News

কেন বেকারি ও হিংসা? প্রশ্ন তুলুন: জয়পুরে রাহুল

জয়পুরে প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে রাহুল যা যা বললেন, তার সিংহভাগই মিলে গেল কিছু ক্ষণ আগে হয়ে যাওয়া মোদীর বক্তৃতার সঙ্গে। 

জয়পুরের সভায় রাহুল গাঁধী। মঙ্গলবার। ছবি: পিটিআই।

জয়পুরের সভায় রাহুল গাঁধী। মঙ্গলবার। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৪৩
Share: Save:

রাহুল গাঁধী যখন জয়পুর বিমানবন্দরে পা রাখলেন, দিল্লি বিমানবন্দরের কাছে নরেন্দ্র মোদীর বক্তৃতা শেষ হয়ে গিয়েছে। ফলে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা শোনার সুযোগ ছিল না রাহুলের। কিন্তু জয়পুরে প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে রাহুল যা যা বললেন, তার সিংহভাগই মিলে গেল কিছু ক্ষণ আগে হয়ে যাওয়া মোদীর বক্তৃতার সঙ্গে।

‘‘যে ব্যক্তি নোটবন্দির মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন..’’— এই বিস্ময় প্রকাশ করে রাহুল অভিযোগ করেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী বোধ হয় অর্থনীতি পড়েননি, তাই বোঝেন না। আমি বলছি, উনি জিএসটিও বুঝে উঠতে পারেননি। আট বছরের বালকও বলবে, এতো লোকসান হয়েছে।’’

জয়পুর থেকে শুরু হওয়া রাহুলের রাজ্যওয়াড়ি সফরের প্রথম দিনে কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতির লক্ষ্যই ছিল, বেকারি ও অর্থনীতির হালকে ফের প্রচারের কেন্দ্রে নিয়ে আসা। রুটি-রজির মতো প্রাথমিক বিষয়ের দিকে যুবকদের নজর টানা। সে কারণে জয়পুরের ঐতিহাসিক অ্যালবার্ট হল থেকে মোদীকে চ্যালেঞ্জ করে রাহুল বলেন, ‘‘বেকারি, দেশ বিভাজনের চেষ্টা আর দুনিয়ায় ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা নিয়ে যুবকদের মনে প্রশ্ন আছে। প্রধানমন্ত্রী পারলে যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে এর জবাব দিন। কিন্তু তিনি তা পারবেন না। কেন এত বেকারি? উত্তর দেবেন না। জবাব চাইলে গুলি চলবে, মারা হবে, চলবে দমন।’’ যুবকদের প্রতি তাই রাহুলের আবেদন, ‘‘প্রশ্ন তুলুন, ভয় পাবেন না। একসঙ্গে মিলে বদল আনব।’’

আরও পড়ুন: উহান থেকে উদ্ধারে প্রস্তুত এয়ার ইন্ডিয়া

রাহুল বলেন, ‘‘মোদী বছরে ২ কোটি রোজগারের কথা বলেছিলেন। কিন্তু গত বছরই ১ কোটি রোজগার গিয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী যেখানেই যান, লম্বা-লম্বা ভাষণ দেন। সিএএ, এনপিআর, এনআরসি-র কথা বলেন। কিন্তু দেশের সামনে সব থেকে বড় সমস্যা নিয়ে একটিও শব্দও বলেন না।’’

সত্যিই তাই। রাহুলের ঠিক আগেই দিল্লিতে এনসিসি ক্যাডেটদের সামনে প্রধানমন্ত্রী আগাগোড়া যে রাজনৈতিক বক্তৃতা করলেন, তাতে অর্থনীতি, বেকারত্ব নিয়ে একটিও শব্দ নেই। বরং যুবকদের সামনে ‘টক্কর’ নেওয়ার কথা শোনালেন। এর বিপরীতে জয়পুরে রাহুল তাঁর ২৪ মিনিটের বক্তৃতায় প্রায় তিরিশ বার ‘যুব’ শব্দটি ব্যবহার করেলন। ব্যাখ্যা করলেন, যুবকেরাই ভারতের আসল পুঁজি। এবং তাঁরাই এখন বেকারত্বের আশঙ্কায় ভুগছেন। চিনকে মোকাবিলা করতে ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশ ভারতে বিনিয়োগ করতে রাজি। তবু বিনিয়োগকারীরা পিছিয়ে যাচ্ছেন। কারণ, ভারত শান্তি ও প্রেমের দেশ বলে পরিচিত ছিল। পাকিস্তান হিংসার দেশ। কিন্তু ভারতে এখন রোজ হিংসা হচ্ছে। সরকারই তা ছড়াচ্ছে। একের বিরুদ্ধে অন্যকে লড়িয়ে দিচ্ছে। মোদী এই কাজ করছেন। এতে দুনিয়াতেও ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।

রাহুলের বক্তৃতাকে সফল করতে রাজস্থানের বিবদমান দুই নেতা, অশোক গহলৌত ও সচিন পাইলটও আজ এক মঞ্চে হাজির ছিলেন। বিজেপির অভিযোগ, স্কুল-কলেজ ছুটি করিয়ে ভিড় জড়ো করা হয়েছে। যদিও রাহুলের বক্তৃতায় খুশি নন কংগ্রেসের অনেকে। তাঁদের বক্তব্য, বক্তৃতায় অন্তত দু’বার মুখ ফস্কেছেন রাহুল। যুব আক্রোশ সভায় তিনি যুবকদের চাঙ্গা করবেন— সে প্রত্যাশাও মেটেনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Rahul Gandhi Unemployment Violence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE