রাহুল গান্ধী। ফাইল চিত্র।
তুঘলক লেনের বাংলোর সঙ্গে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে। চার বারের সাংসদ রাহুল গান্ধী বহু বছর ধরেই রয়েছেন। বাড়ির সামনের রাস্তায় অনেকবারই তাঁকে সাইকেল চালাতে দেখা গিয়েছে। সেই বাড়ি খালি করার চিঠি পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাহুল গান্ধী জানিয়ে দিলেন, তিনি নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সরকারি বাংলো ছেড়ে দেবেন।
সোমবার রাহুল গান্ধীকে লোকসভার সচিবালয় থেকে নোটিস পাঠিয়ে জানানো হয়েছিল, সাংসদ হিসেবে তিনি যে সরকারি বাংলোয় থাকছেন, সেই ১২ তুঘলক লেনের বাড়ি ২২ এপ্রিলের মধ্যে খালি করতে হবে। মঙ্গলবারই রাহুল লোকসভার সচিবালয়ের উপসচিব মোহিত রজনকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, তিনি সরকারি নির্দেশ অনুযায়ীই কাজ করবেন। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘‘গত চার বারের লোকসভার সদস্য হিসেবে, এই বাড়িতে কাটানো সুখস্মৃতির জন্য আমি মানুষের ভোটের কাছে ঋণী।’’
সরকারি নির্দেশ মেনে বাংলো খালি করলেও রাহুল গান্ধী ফের আদানি-কাণ্ড নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কংগ্রেস সূত্রের খবর, আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতারণার ও গৌতম আদানিকে নরেন্দ্র মোদীর নানা ভাবে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে
কংগ্রেস ইতিমধ্যেই ১০০টি প্রশ্ন তুলেছে। এই ১০০টি প্রশ্ন প্রচারের জন্য তৈরি পুস্তিকা আকারে প্রকাশিত হবে। রাহুল নিজে সেই পুস্তিকা প্রকাশ করে ফের ‘মোদী-আদানি সম্পর্ক’ নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন বলে পরিকল্পনা চলছে।
সুরাতের ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট মোদী পদবি নিয়ে মানহানির মামলায় রাহুল গান্ধীকে সাজা শোনানোর পরেই শুক্রবার লোকসভার সচিবালয় রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। এখনও রাহুলের তরফে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দায়রা আদালতে মামলা করা হয়নি। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ আজ বলেছেন, ‘‘আইনজীবীরা ঠিক সময়ে সব দিক দেখে দায়রা আদালতে আর্জি জানাবেন। সেখানে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ চাওয়া হবে। ৩০ দিনের সময় রয়েছে।’’
রাহুল কবে দায়রা আদালতে যাবেন, তা নিয়ে কংগ্রেসের থেকে বিজেপি নেতারা বেশি চিন্তিত। তাঁরা বুঝতে পারছেন, সাংসদপদ খারিজ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকারি বাড়ি ছাড়ার নোটিস মেনে নেওয়ায় রাহুলের দিকে সহানুভূতির হাওয়া বইতে শুরু করেছে। ১৮টি বিরোধী দল কংগ্রেসের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। প্রথমে বিজেপি নেতারা প্রশ্ন তুলেছিলেন, সুরাতের আদালতের রায়ের সঙ্গে সঙ্গে কংগ্রেস তাতে স্থগিতাদেশ চাইতে গেল না কেন? এ দিন রাহুলকে নিশানা করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি বলেছেন, তুঘলক লেনের বাংলো রাহুলের নয়, জনতার সম্পত্তি। কংগ্রেস শিবির থেকে পাল্টা যুক্তি দেওয়া হচ্ছে, প্রবীণ বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশীরা সাংসদ বা সরকারি পদে না থেকেও সরকারি বাংলোয় রয়েছেন। গুলাম নবি আজ়াদ দু’বছর আগে সংসদ পদ থেকে বিদায় নিলেও তাঁকে উৎখাত করা হয়নি। কারণ তিনি কংগ্রেস ছেড়ে নিজের দল গড়ে বিজেপিকে সাহায্য করছেন।
রাহুল ‘জ়েড প্লাস’ নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন। রাহুলের আগে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরাকেও লোদী এস্টেটের সরকারি বাংলো থেকে উৎখাত করা হয়েছিল। তিনি বেসরকারি আবাসনে থাকেন। রাহুল কোথায় থাকবেন? তিনি নিজে ভারত জোড়ো যাত্রায় বলেছিলেন, ৫২ বছর বয়স হয়ে গেলেও তাঁর নিজস্ব বাড়ি নেই। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে বলেন, ‘‘বিজেপি রাহুলকে দুর্বল করার সব রকম চেষ্টা করবে। রাহুল বাংলো ছাড়লে উনি মায়ের সঙ্গে থাকতে পারেন। আমি একটা বাংলো ছেড়ে দিতে পারি। কিন্তু সরকারের মনোভাব, হেনস্থা, অপমান করার চেষ্টার নিন্দা করছি।’’
রাহুলের সাংসদ পদ খারিজের পরে কংগ্রেস রাজঘাটে সত্যাগ্রহে বসেছিল। মঙ্গলবার কংগ্রেস নেতারা দিল্লির লাল কেল্লা থেকে টাউন হল পর্যন্ত ‘গণতন্ত্র বাঁচাও মশাল শান্তি মিছিল’-এ যোগ দেন। দিল্লি পুলিশ কংগ্রেস নেতাদের আটক করে। বুধবার থেকে কংগ্রেস গোটা এপ্রিল মাস গোটা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচির পরিকল্পনা নিয়েছে। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে দিল্লিতে ‘মহা-সত্যাগ্রহ’-এর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy