ফাইল চিত্র।
রান্নার গ্যাস, পেট্রল, ডিজেল নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে রাগ তৈরি হচ্ছে। কিন্তু পরিকল্পিত ভাবে সেই ক্ষোভের স্বরকে দমন করার চেষ্টা হচ্ছে বলে আজ অভিযোগ তুললেন রাহুল গাঁধী। একই সঙ্গে তাঁর স্বীকারোক্তি, কোভিডের কথা মাথায় রেখে কংগ্রেসকেও সরকার-বিরোধী আন্দোলনে সাবধানে এগোতে হচ্ছে।
বুধবার থেকেই রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম ২৫ টাকা বেড়ে ৯১১ টাকা হয়েছে। পেট্রল, ডিজেলের দামেও সুরাহার ইঙ্গিত নেই। আজ কংগ্রেসের সদর দফতরে সাংবাদিক সম্মেলন করে রাহুল গাঁধী মোদী সরকারকে নিশানা করে বলেন, “সরকারের কাছে জিডিপি-র বৃদ্ধির অর্থ হল গ্যাস, পেট্রল, ডিজেলের দাম বৃদ্ধি।”
আজ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি নিয়ে মোদী সরকারকে নিশানা করে বলেন, “বিজেপি সরকার কতখানি সহানুভূতিহীন হয়ে পড়েছে, আর তাদের নীতি কতখানি জনবিরোধী, তা দেখে কষ্ট হয়। গ্যাস, পেট্রল, ডিজেলের দাম অভূতপূর্ব ভাবে বাড়ছে। সাধারণ মানুষ ও তাঁদের পরিবারের উপরে বোঝা চাপছে। এটা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।” রাহুল ও মমতা দু’জনেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে জ্বালানির দাম কমানোর দাবি জানিয়েছেন।
বিরোধীদের অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে বিজেপি। দলের মুখপাত্র সম্বিত পাত্রের কটাক্ষ, রাহুল যে বিষয়ে কথা বলছেন, তার কিছুই বোঝেন না। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের আবার যুক্তি, “গ্যাস, তেলের দাম বাড়ে, কমে। এটা নতুন কিছু নয়। সরকার এ নিয়ে চিন্তিত হলেও সরকারের হাতে সবটা নেই। তবে তেল বা গ্যাসের দাম বাড়লে অন্য রাজ্যের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে বেশি চর্চা হয়। কারণ এ রাজ্যে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কম।”
রাহুলের অভিযোগ, শুধু জ্বালানির দাম নয়, সার্বিক ভাবেই অর্থনীতিতে ১৯৯১ সালের মতো সঙ্কট তৈরি হয়েছে। আর্থিক বৃদ্ধি তলানিতে নেমে যাওয়া মোদী সরকার চক্রবৎ পরিবর্তন বলে দাবি করছে। আসলে সেটা কাঠামোগত সমস্যা। শেয়ার বাজারের সূচক বাড়ছে। কিন্তু তা শুধু ৫০টি সংস্থার জন্য। বাকি ৩০০ থেকে ৪০০ সংস্থার করুণ দশা। কিন্তু আসলে ওই সংস্থাগুলিই কর্মসংস্থান তৈরি করবে। রাহুল বলেন, “অর্থমন্ত্রীর কথা ছাড়ুন, উনি কিছু বুঝতেই পারেন না। প্রধানমন্ত্রীও বোঝেন না। ওঁদের উচিত বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলা। ওঁদের কাছে বিশেষজ্ঞ না থাকলে, আমরা আমাদের বিশেষজ্ঞদের পাঠিয়ে দিতে পারি।”
ইউপিএ জমানার শেষে জ্বালানির দাম কত ছিল আর মোদী জমানার সাত বছরে তা কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে, তা বোঝাতে তালিকাও তৈরি করে এনেছিলেন রাহুল। তাঁর অভিযোগ, এই গ্যাস, পেট্রল, ডিজেলের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারের দামের কোনও সম্পর্ক নেই। মোদী সরকার সাত বছরে জ্বালানিতে কর বসিয়ে ২৩ লক্ষ কোটি টাকা তুলেছে। এখন যদি সত্যিই আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেল বা গ্যাসের দাম বেড়ে যায়, তা হলে এখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
প্রশ্ন উঠেছে, মানুষের এই ক্ষোভ সত্ত্বেও ভোটে বিরোধীরা কেন তার ফায়দা তুলতে পারছেন না? রাহুল বলেন, “সংবাদমাধ্যমের মুখ বন্ধ করে রাখা হচ্ছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দখল করা হচ্ছে। ভয় দেখিয়ে, হুমকি দিয়ে কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। কিন্তু মানুষের রাগ বাড়বেই, তার জোর প্রতিক্রিয়াও হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy