মুখতার আব্বাস নকভি। ফাইল চিত্র।
কার্যত থমকে যাওয়ার পথে প্লাজ়মা পরীক্ষা।
গত রবিবারেই করোনা আক্রান্ত আশঙ্কাজনক রোগী প্লাজ়মা প্রয়োগে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন বলে দাবি করেছিল দিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতাল। তার পরেই দেশ জুড়ে প্লাজ়মা দিতে এগিয়ে আসেন করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা একাধিক রোগী। গত কাল প্লাজ়মা দেন করোনা সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠা তবিলিগি জামাতের একাধিক সদস্য। আজ হঠাৎই তবলিগিদের এই প্লাজ়মা দেওয়ার তীব্র সমালোচনা করেন নরেন্দ্র মোদী সরকারের মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি। ঘটনাচক্রে তার পরেই প্লাজ়মা পরীক্ষার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিতর্ক বাড়িয়ে দিল স্বাস্থ্য মন্ত্রক। গোটা বিষয়টিতে সরকারের সংখ্যালঘু বিরোধী মনোভাব দেখছেন অনেকেই। প্রশ্ন উঠছে, এত দিন যে প্লাজ়মা পরীক্ষাকে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) ছাড়পত্র দিচ্ছিল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখ খোলার পরেই কেন তারা সুর বদলাল? জবাবে মুখে কুলুপ স্বাস্থ্যকর্তাদের।
প্লাজ়মা থেরাপি পদ্ধতিতে করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর রক্ত থেকে প্লাজ়মা (রক্তরস) নিয়ে তা কোনও আশঙ্কাজনক রোগীকে দেওয়া হয়। সম্প্রতি দিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতাল দাবি করে, করোনা সংক্রমণে ভেন্টিলেশনে চলে যাওয়া রোগী প্লাজ়মা প্রয়োগে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এর পরে নড়ে বসে একাধিক হাসপাতাল। প্লাজ়মা দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয় সুস্থ হয়ে ওঠা করোনা রোগীদের কাছে। গত কালই করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা লখনউয়ের এক চিকিৎসক নিজে প্লাজ়মা দান করে অন্যদেরও এগিয়ে আসতে বলেন। প্লাজ়মা দেন দিল্লির নিজামুদ্দিনের জমায়েতে এসে আক্রান্ত হওয়া ১০ তবলিগি সদস্য।
এ নিয়েই আজ তবলিগিদের তীব্র সমালোচনা করেন নকভি। টুইট করে বলেন, ‘ওই তবলিগিরা করোনা ছড়িয়ে পাপ করে এখন নিজেদের করোনা যোদ্ধা বলে দাবি করছেন। অদ্ভুত।’
আরও পড়ুন: ভরসা দিতে ফের বার্তা দিলেন শক্তিকান্ত
আরও পড়ুন: ছত্তীসগঢ় থেকে হেঁটে পাঁচ দিনে শহরে
নকভির বক্তব্য ঘিরে মুসলিম সমাজে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। সরব হন নেটিজেনদের একাংশও। তার মধ্যেই বিকেলে নিত্যদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল হঠাৎ প্লাজ়মা পরীক্ষার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘‘এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ এর কোনও প্রমাণিত চিকিৎসাব্যবস্থা নেই। আইসিএমআর কেবল গবেষণা ও পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য প্লাজ়মা প্রয়োগে ছাড়পত্র দিয়ে থাকে।’’ লবের দাবি, সঠিক ভাবে চিকিৎসা না হলে এতে প্রাণ যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তিনি বুঝিয়ে দেন, আইসিএমআরের সবুজ সঙ্কেত ছাড়া এ ধরনের কোনও পরীক্ষা স্বাস্থ্য মন্ত্রকের চোখে বেআইনি বলে গণ্য হবে। কিন্তু এত দিন কেন সম্মতি দেওয়া হচ্ছিল? এই প্রশ্নে নীরব স্বাস্থ্যকর্তারা। ফি দিনের সাংবাদিক সম্মেলনে আইসিএমআরের প্রতিনিধি থাকলেও আজ তাঁদের জন্য রাখা আসনগুলি ছিল খালি!
তবলিগিদের প্লাজ়মা দেওয়া ও প্লাজ়মা পরীক্ষা কার্যত বন্ধ করে দেওয়া— দু’টির মধ্যে আপাত দৃষ্টিতে কোনও সম্পর্ক না থাকলেও এর মধ্যে অন্য গন্ধ পাচ্ছেন অনেকে। সরাসরি কিছু না বললেও এক কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘‘তবলিগিরা ভুল করেছিল। কিন্তু তা নিয়ে শুরু থেকেই বিজেপি সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করছে। এখন রক্তদান নিয়েও প্রশ্ন তুলছে।’’ তাঁর প্রশ্ন, এত দিন তো আইসিএমআর প্লাজ়মা পরীক্ষার অনুমতি দিচ্ছিল। তবলিগিরা প্লাজ়মা দেওয়ার পরেই কেন সুর বদল হল, তা স্পষ্ট করুক ওই সংস্থা।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy