আহমেদ পটেল।
একদিকে গুজরাতের উন্নয়নের বাস্তব চিত্র নিয়ে প্রশ্ন। অন্য দিকে সংরক্ষণের দাবিতে দলিত ও পিছড়ে বর্গের আন্দোলন। সেই সঙ্গে জিএসটি নিয়ে সুরাত-রাজকোটের ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ। মূলত এই তিনটি বিষয়কে হাতিয়ার করেই হার্দিক পটেল, অল্পেশ ঠাকোরদের মতো তরুণ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে গুজরাত জয়ের লক্ষ্যে ঝাঁপিয়েছেন রাহুল গাঁধী।
এই ত্রিমুখী চাপের মুখে কিছুটা বেসামাল বিজেপিও। তাই নরেন্দ্র মোদীর গুজরাতে যেন তেন প্রকারে ভোটে জিততে তারা এ বার ‘মেরুকরণের রাজনীতি’-র আশ্রয় নিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন: কাশ্মীর নিয়ে উদ্বিগ্ন দীনেশ্বর
শুক্রবার রাতে আচমকাই গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণি কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেলকে নিশানা করে সনিয়া গাঁধীর দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগ তোলেন। সনিয়া গাঁধীর রাজনৈতিক সচিব পটেল একই সঙ্গে গুজরাত থেকে নির্বাচিত রাজ্যসভার সাংসদও। গুজরাতে কংগ্রেসের রাজনীতির অলিখিত নিয়ন্ত্রক। তাঁকে কাঠগড়ায় তুলে রূপাণি বলেন, ‘‘আইএসআইএস-এর সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ধৃত কাশিম স্টিম্বারওয়ালা ভারুচের সর্দার বল্লভভাই পটেল হাসপাতালে কাজ করতো। পটেল ওই হাসপাতালের অছি পরিষদের সদস্য, তিনিই হর্তাকর্তা।’’ রাজ্যসভা থেকে পটেলের পদত্যাগের পাশাপাশি এ বিষয়ে রাহুল গাঁধীরও জবাবদিহি দাবি করেন রূপাণি।
জবাবে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সূর্যেওয়ালা বলেন, ‘‘বিকাশ নিয়ে প্রশ্ন, সংরক্ষণের দাবিতে আন্দোলন, জিএসটি-নোট বাতিল নিয়ে সুরাত-রাজকোটের ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ থেকে নজর ঘোরাতেই এখন মেরুকরণ ও জাতীয়তাবাদের রাজনীতি করছে বিজেপি।’’ মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ উড়িয়ে পটেল বলেন, ‘‘ভোটের দিকে তাকিয়ে নিরাপত্তার মতো বিষয় নিয়েও রাজনীতি হচ্ছে!’’
রাহুল গাঁধী যখন গুজরাতে গিয়ে হার্দিক পটেল, অল্পেশ ঠাকোরদের এক জোট করে বিজেপিকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা শুরু করেছিলেন, তখনই রূপাণি বলেছিলেন, রাহুল এ বার হাফিজ সইদকেও দলে টানবেন! কংগ্রেস নেতাদের ব্যাখ্যা, বিজেপি যে মেরুকরণের চেষ্টা চালাবে, সেটা তখনই স্পষ্ট হয়েছিল। এবং সন্দেহ সত্যি প্রমাণ করে রূপাণি এ বার সরাসরি সেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন। তাই তিনি বারবার হিন্দু মন্দির, হিন্দু ‘গডম্যান’-এর উপর হামলা চালানোর পরিকল্পনার অভিযোগ করেছেন।
পটেল সম্পর্কে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর এমন অভিযোগের সত্যতা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, ওই হাসপাতালের অছি পরিষদ থেকে ২০১৩-তেই পদত্যাগ করেন পটেল। কাশিম ওই হাসপাতালের ল্যাব টেকনিসিয়ান হিসেবে কাজে ঢোকেন এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে। এবং পুলিশের হাতে ধরা পড়ার আগেই সে হাসপাতালের চাকরি ছেড়ে দিয়েছিল। তা ছাড়া হাসপাতালের কোনও কর্মী অপরাধে জড়িয়ে পড়লে, তার সঙ্গে পরিচালন কমিটির কর্তার কী সম্পর্ক, সে প্রশ্নও উঠছে। যদিও সে সবের তোয়াক্কা না করেই দিল্লিতে বিজেপির মঞ্চ থেকে মুখতার আব্বাস নকভির দাবি, অছি পরিষদ থেকে পদত্যাগ করলেও পটেল ওই হাসপাতালের সঙ্গে সক্রিয় ভাবে যুক্ত। গত বছর তিনি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কেও হাসপাতালের অনুষ্ঠানে নিয়ে গিয়েছিলেন।
এ বছর অগস্টে আহমেদ পটেলের রাজ্যসভায় যাওয়া ঠেকাতে মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছিল বিজেপি। তাদের বিরুদ্ধে পটেলকে ঠেকাতে বিপুল টাকা দিয়ে বিধায়ক কেনাবেচার চেষ্টা হয়েছিল বলেও অভিযোগ ওঠে। কংগ্রেস নেতা মনীশ তিওয়ারির ব্যাখ্যা, সেই হার হজম হয়নি বলেই কাদা ছেটানো হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে জঙ্গি-যোগের অভিযোগ তোলায় রূপাণির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার হুমকিও দিয়েছেন পটেল।
এ দিন কংগ্রেসের কপালে কিছুটা ভাঁজ ফেলেছেন পটিদার নেতা হার্দিক পটেল। হার্দিক জানিয়েছেন, ওবিসি কোটায় পটিদার সংরক্ষণ নিয়ে ৩ নভেম্বরের মধ্যে কংগ্রেস অবস্থান স্পষ্ট না করলে তাঁরা অন্য পথ নেবেন। কংগ্রেস নেতৃত্ব জানিয়েছেন, আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণি কোটায় পটিদারদের সংরক্ষণ দেবেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy