মাওবাদীদের ‘কালো টাকা’ ব্যাঙ্কে ভাঙাতে গিয়ে পাকড়াও হলেন পেট্রোল-পাম্পের মালিক।
রাঁচীর কাছে বেরোর ঘটনা। ধৃতের কাছে মিলেছে নগদ ২৫ লক্ষ টাকা। রাঁচীর এসএসপি কুলদীপ দ্বিবেদী বলেন, ‘‘পিএলএফআই জঙ্গি সংগঠনের নেতা দীনেশ গোপ পেট্রোল-পাম্প মালিক নন্দকিশোর যাদবকে ২৫ লক্ষ টাকার নোট ব্যাঙ্কে বদল করার জন্য দিয়েছিল। সেই খবর পেয়ে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।’’
কালো টাকা রুখতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘোষণার জেরে মাওবাদীদের ডেরায় বস্তাবন্দি ৫০০ ও ১ হাজার টাকার নোটের ‘পাহাড়’ নিয়ে চিন্তায় পড়বে জঙ্গিরা— এমন সন্দেহ ছিল পুলিশের। ঝাড়খণ্ডের পুলিশকর্তাদের বক্তব্য ছিল, সংগঠনের বাইরের লোকদের দিয়ে সে সব নোট বদলানোর চেষ্টা করবে জঙ্গিরা। সেই আশঙ্কা যে অমূলক নয়, গত কাল তার প্রমাণ মিলল।
পুলিশের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় নির্দেশিকার পরিপ্রেক্ষিতে দু’দিন ধরে ৫০০ ও ১ হাজার টাকার নোট নিয়ে পেট্রোল-পাম্পে ভিড় জমাচ্ছেন অনেকেই। বেশিরভাগ পাম্পই খুচরো ফেরত না দিয়ে পুরো টাকার তেল দিচ্ছিল। রাঁচী-লোহারদাগা সড়কের লাগোয়া বেরোর ওই পেট্রোল-পাম্পেও ছিল যানবাহনের সারি।
ঝাড়খণ্ড পুলিশের আইজি (অপারেশন) এম এ ভাটিয়া বলেন, ‘‘পেট্রোল-পাম্পে পরিচিত কর্মীদের সাহায্য নিয়ে জঙ্গিরা কালো টাকা ব্যাঙ্কে বদলানোর চেষ্টা করবে বলে সন্দেহ ছিলই। সাদা পোশাকে বিভিন্ন জায়গায় টহলে ছিল পুলিশ। নজর ছিল পেট্রোল-পাম্পগুলির দিকে।’’ তিনি জানান, তখনই খবর আসে, বেরোর ওই পাম্পে পুরো দিনে ২৫ লক্ষ টাকার পেট্রোল বিক্রি হয়েছে। টাকা ব্যাঙ্কে জমা দিতে যাচ্ছেন নন্দকিশোর। রাঁচীর এসএসপি জানান, প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় এক দিনে ২৫ লক্ষ টাকার পেট্রোল বিক্রি হয়েছে শুনে সন্দেহ হয়। তিনি বলেন, ‘‘ওই পাম্পে যতই ভিড় হোক না কেন, দিনে ২৫ লক্ষ টাকার পেট্রোল বিক্রি হওয়া কার্যত অসম্ভব। দেরি না করে নন্দকিশোরকে আটক করে জেরা শুরু করা হয়।’’ আর এই জেরার মুখে ভেঙে পড়েন নন্দকিশোর। তিনি জানান, পাঁচশো ও ১ হাজার টাকার নোট মিলিয়ে ২৫ লক্ষ টাকা তাঁকে ব্যাঙ্ক থেকে বদলে নিয়ে আসতে বলেছিল পিএলএফআই নেতা দীনেশ।
পুলিশের অনুমান, নন্দকিশোরের সঙ্গে পিএলএফআই জঙ্গিগোষ্ঠীর যোগাযোগ রয়েছে। ‘বিশ্বস্ত’ বলেই তাঁর হাতে ২৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। নন্দকিশোর ধরা পড়ায় ওই জঙ্গিগোষ্ঠীর ডেরায় পৌঁছনো এ বার খুব একটা কঠিন কাজ হবে না বলে পুলিশের আশা। রাজ্য পুলিশের আইজি জানিয়েছেন, ওই ঘটনার জেরে ঝাড়খণ্ডের পেট্রোল-পাম্পগুলিতে নজরদারি আরও বাড়ানো হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy