অভিনব: চিত্তরঞ্জন পার্ক দক্ষিণ পল্লির পুজোর ভাসান হয় এ রকম অস্থায়ী চৌবাচ্চায়। —নিজস্ব চিত্র।
প্রতিমা বিসর্জনের দূষণ থেকে যমুনা নদীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল অরবিন্দ কেজরীবালের সরকার। চেয়েছিল, যমুনার পরিবর্তে নিজেদের এলাকায় অস্থায়ী পুকুরের মতো জলা বানিয়ে সেখানেই প্রতিমা বিসর্জন দিক পুজো কমিটিগুলি। কিন্তু বিসর্জন কমিটিগুলির যৌথ আপত্তিতে আপাতত ব্যর্থ হল সেই প্রচেষ্টা। প্রতি বারের মতো এ বারও দিল্লি-নয়ডার অধিকাংশ প্রতিমার ভাসান হতে চলেছে যমুনাতেই। এক মাসের মধ্যে প্রথমে গণেশ ও তার পরে দুর্গা প্রতিমার জলযাত্রায় যমুনার দূষণ স্তর অনেকটাই বাড়বে বলে আশঙ্কা পরিবেশবিদদের।
দিল্লির ‘মিনি কলকাতা’ চিত্তরঞ্জন পার্কে বড় মাপের প্রায় ডজন খানেক পুজো হয় প্রতি বছর। ফলে ওই এলাকায় বিষয়টি বোঝানোর দায়িত্ব দেওয়া হয় স্থানীয় আম আদমি পার্টির বিধায়ক সৌরভ ভরদ্বাজকে। শুরুতে বেশ কিছু পুজা কমিটি উৎসাহ দেখালেও গর্ত করে প্রতিমা বিসর্জন করতে যে পরিমাণ জায়গার প্রয়োজন, তা সরকার দিতে না পারায় পিছিয়ে যায় অনেকেই। চিত্তরঞ্জন পার্কের নব পল্লি পুজো সমিতির সভাপতি উৎপল ঘোষের কথায়, ‘‘পরিবেশের প্রশ্নে আমরা রাজি হয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের ঠাকুরের যে উচ্চতা, সেই অনুপাতে যত বড় গর্ত খোঁড়া প্রয়োজন, তা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই পিছিয়ে আসা।’’ সাধারণত নদীতে প্রতিমা ভাসানের আগেই প্লাস্টিকের ফুল-মালা আলাদা করে রেখে দেওয়া হয়। পরিবেশবিদদের মতে মূল ক্ষতিটি হয় প্রতিমায় থাকা রঙের কারণে। তাই উৎপলবাবুদের পরামর্শ, ‘‘দরকারে নদীর চরে বড় গর্ত খুঁড়ে দেওয়া হোক। সেখানে ভাসান দিতে আমাদের আপত্তি নেই।’’
আরও পড়ুন:হাসপাতাল থেকেই ফলাহারী বাবা ধৃত
বহু দিন ধরেই যমুনায় প্রতিমা বিসর্জনে আপত্তি জানাচ্ছেন পরিবেশবিদেরা। এ নিয়ে আপত্তি রয়েছে জাতীয় গ্রিন ট্রাইবুন্যালেরও। তার ভিত্তিতেই উদ্যোগী হয়েছিল কেজরীবাল প্রশাসন। বিষয়টির সঙ্গে ধর্মীয় ভাবাবেগ জড়িয়ে থাকায় রাজনৈতিক ভাবে ঐকমত্যে পৌঁছনোর কৌশল নেয় সরকার। কিন্তু গণেশ ভাসানে ছাড় আর দুর্গা প্রতিমার ক্ষেত্রে অন্য নিয়মের কথা বলায় আপত্তি তোলে পুজো কমিটির উদ্যোক্তাদের একাংশ। এক দিকে ধর্মীয় ভাবাবেগ অন্য দিকে প্রাদেশিকতার সংঘাত— সব মিলিয়ে পিছিয়ে আসেন কেজরীরা। ঝুঁকি নিতে চায়নি বিজেপিও।
যদিও চিত্তরঞ্জন পার্কেই ব্যতিক্রমও রয়েছে। যমুনাকে দূষণের হাত থেকে বাঁচাতে গত চার বছর ধরে নিজেদের পুজো প্রাঙ্গনে অস্থায়ী বড় মাপের চৌবাচ্চা বানিয়ে বিসর্জন চালু করেছেন দক্ষিণ পল্লি পুজো সমিতির সদস্যরা।
পুজোর কর্ণধার অশোক বসুর কথায়, ‘‘দশমীর দিন সিঁদুর খেলার পরে ওই অস্থায়ী পুকুরগুলিতে গঙ্গা পুজো করে ভাসান দেওয়া হয়। লোহার পাইপ, ধাতব চাদর দিয়ে চৌবাচ্চাগুলি বানানো হয়।’’ কমিটির আর এক সদস্য অমিত চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘দু’দিন পরে সেখান থেকে কাঠামো তুলে নেওয়া হয়। জল ব্যবহার করা হয় মাঠ ও গাছের পরিচর্যায়।’’ পরিবেশ বাঁচাতে এমন উদ্যোগে সামিল হওয়ার জন্য নাম লেখাতে অনেকেই ইচ্ছুক বলে দাবি দক্ষিণ পল্লির উদ্যোক্তাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy