ফাইল ছবি
যে সব রাজ্যে টিকাকরণের হার কম, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো দুর্বল, করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ছে— সেখানে কেন্দ্রীয় দল পাঠানোর নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওমিক্রন ঠেকাতে দেশের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে আজ বৈঠকে বসেছিলেন তিনি। করোনার এই অতি-সংক্রামক স্ট্রেনের সংক্রমণ রুখতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলিকে সমন্বয় করে এগোতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ দিকে, ওমিক্রনের বাড়বাড়ন্ত রুখতে এলাহাবাদ হাই কোর্ট আজ প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছে, তিনি যেন ভোটমুখী উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনী সভা নিষিদ্ধ করেন। ওই নির্বাচন পিছিয়ে দিতে নির্বাচন কমিশনকেও অনুরোধ করেছে বিচারপতি শেখর যাদবের বেঞ্চ।
আজকের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী রাজ্যগুলির স্বাস্থ্য পরিকাঠামো একেবারে জেলা স্তর থেকে মজবুত করায় জোর দেন। রাজ্যগুলিতে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা যথাযথ আছে কি না, স্বাস্থ্যকর্তাদের তা আলাদা করে খতিয়ে দেখতে বলেছেন তিনি। বৈঠকে স্বাস্থ্যকর্তারা জানান, টিকাকরণের হার বেশি হওয়া সত্ত্বেও নানা দেশ ওমিক্রনের শিকার। প্রধানমন্ত্রী তখন রাজ্যগুলিতে প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় দল পাঠাতে বলেন। যদিও বুস্টার ডোজ়, ছোটদের টিকা বা ওমিক্রন ঠেকাতে নতুন করে লকডাউনের ধাঁচে কোনও কঠোর পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না, বৈঠকের পরে তা স্পষ্ট করা হয়নি।
এ দিন সব রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবদের সঙ্গে আলাদা বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ বলেন, সাধারণ সর্দি-জ্বর এবং ওমিক্রন সংক্রমণের লক্ষণ প্রায়শই এক। তাই কোনও এলাকার সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের বেশি হলে অথবা স্থানীয় হাসপাতালে অক্সিজেনযুক্ত শয্যার ৪০ শতাংশে করোনা রোগী থাকলে সংক্রমণের উৎস চিহ্নিত করে এলাকাটিকে কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসাবে চিহ্নিত করাতে হবে। প্রয়োজনে এলাকাগুলিতে যাতায়াতের ক্ষেত্রে ১৪ দিনের জন্য বিধিনিষেধ জারি করে বাড়িতে গিয়ে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়াতে হবে। প্রতি একশোটি পরীক্ষার মধ্যে অন্তত ৬০টি যেন আরটি-পিসিআর হয়।
বড়দিন ও ইংরেজি নববর্ষের উৎসব ঘিরে সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে রাজ্যগুলিকে বড় জমায়েত এড়ানো এবং নাইট কার্ফু জারির পরামর্শও দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব। কর্নাটক ও দিল্লির পরে আগামী এক সপ্তাহ নাইট কার্ফু ঘোষণা করেছে মধ্যপ্রদেশও। আজ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী রাজ্যগুলিকে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো প্রস্তুত রাখতে বলেছেন। করোনার রোগীদের জন্য হাসপাতালের আলাদা ওয়ার্ড কিংবা ব্লক, প্রয়োজনে আলাদা হাসপাতাল চিহ্নিত করে রাখার পাশাপাশি করোনার চিকিৎসায় লাগে এমন জীবনদায়ী ওষুধ আগামী তিরিশ দিনের জন্য মজুত রাখতে বলা হয়েছে। এখনও দ্বিতীয় ডোজ় না নেওয়া প্রায় ১২ কোটি দেশবাসীর টিকাকরণ দ্রুত শেষ করতে বলা হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তাদের। যে জেলাগুলিতে টিকাকরণের হার জাতীয় গড়ের চেয়ে কম সেখানে তা বাড়ানো, ভোটমুখী পাঁচ রাজ্যের বাসিন্দাদের দ্রুত টিকাকরণের উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে।
এলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি শেখর যাদব যদিও স্পষ্ট বলেছেন, নির্বাচনী সভা বন্ধ না হলে পরিস্থিতি দ্বিতীয় ঢেউয়ের থেকেও খারাপ হবে। এ দিন তাঁর বেঞ্চের রায়ে বলা হয়েছে, ‘‘গ্রাম পঞ্চায়েত (উত্তরপ্রদেশে) এবং বাংলার নির্বাচনের ফলে বিরাট সংখ্যক মানুষ কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। অনেকে মারাও গিয়েছেন।’’ তাই প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনকেও তাঁর আর্জি, রাজনৈতিক দলগুলিকে জনসভার বদলে দূরদর্শন বা সংবাদপত্রের মাধ্যমে প্রচার চালাতে বলা হোক। প্রয়োজনে ফেব্রুয়ারির ভোট দু’এক মাস পিছিয়ে দেওয়া হোক। কারণ ‘জান হ্যায়, তো জহাঁ হ্যায়।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy