প্রতীকী ছবি।
পেট্রল-ডিজেলে তেল সংস্থাগুলি লিটার প্রতি আড়াই থেকে তিন টাকা পর্যন্ত মুনাফা রাখছিল। কিন্তু পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তেলের দাম থমকে ছিল টানা ২৪ দিন। চলতি সপ্তাহে তা সামান্য হলেও কমেছে। এর জেরে তেল সংস্থাগুলিকে পেট্রল-ডিজেলে ওই আড়াই থেকে তিন টাকা পর্যন্ত মুনাফার আশা ছাড়তে হবে বলে সরকারি সূত্রের খবর।
পেট্রল-ডিজেলের দাম কমতে শুরু করার পরে এ বার বিজেপি নেতারা চাইছেন, রান্নার গ্যাসের দামও কমানো হোক। সাধারণত মাসের প্রথমেই রান্নার গ্যাসের দামে অদলবদল হয়। বিজেপি নেতারা আশা করছেন, শনিবার প্রথম দফার ভোটগ্রহণের আগে না হলেও ১ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় ভোটগ্রহণের আগেই রান্নার গ্যাসের দাম কমবে।
সূত্রের খবর, ভোটমুখী রাজ্যের বিজেপি নেতারা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন, প্রচারে নেমে রান্নার গ্যাস ও পেট্রল-ডিজেলের দাম নিয়েই তাঁদের সবথেকে বেশি সমালোচনার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। পেট্রলের দাম যদিও বা গাড়ির মালিক উচ্চবিত্তের সমস্যা বলে এড়িয়ে যাওয়া যায়, কিন্তু ডিজেল বা রান্নার গ্যাসের দামের ক্ষেত্রে ক্ষোভ এড়ানো যাচ্ছে না। বিজেপি নেতারা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন, উজ্জ্বলা যোজনায় নিখরচায় রান্নার গ্যাসের সংযোগ পাওয়া গরিব মানুষও সিলিন্ডারের দাম বৃদ্ধির জেরে ফের কাঠকুটো জ্বালাচ্ছেন। ফলে শুধু মধ্যবিত্ত নয়, গ্রামেও এর রাজনৈতিক আঁচ পড়ছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের এক শীর্ষকর্তার বক্তব্য, ‘‘শনিবার ভোট শুরু হচ্ছে। এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত দফায় দফায় বিভিন্ন রাজ্যে ভোটগ্রহণ চলবে। তত দিন তেলের দাম বাড়ানো মুশকিল। ফলে আপাতত পেট্রল-ডিজেলে যে মুনাফা হচ্ছিল, তা ভুলে যেতে হবে।’’ রান্নার গ্যাস নিয়ে তাঁর বক্তব্য, তেল সংস্থাগুলিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। তবে দাম আর বাড়ানোর কোনও প্রশ্নই নেই। বরং কিছুটা কমানো হবে বলেই আশা করা যায়।
সরকারি ভাবে অবশ্য তেল সংস্থার কর্তারা বলছেন, অশোধিত তেলের দাম কিছুটা কমেছে বলেই তেলের দাম গত এক মাসে আর বাড়েনি। বরং চলতি সপ্তাহে কিছুটা কমেছে। মার্চের গোড়ায় ভারতে আমদানি করা অশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৭০ ডলারের ঘরে ছিল। এখন তা ৬৩ ডলারের ঘরে নেমে এসেছে। তেল মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, অশোধিত তেলের দাম কমে যাওয়ার পরেও দাম কমেনি। সেই সুবাদে পুরনো লোকসান অনেকটাই পুষিয়ে নিয়েছে তেল সংস্থাগুলি। এখন দাম কমলেও তাঁদের মুনাফা স্বাভাবিক হারেই হবে। সর্বোপরি ফের কোভিডের ঢেউয়ে ইউরোপে নতুন করে বিধিনিষেধ জারি হওয়ায় জ্বালানির চাহিদা কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই কারণে অশোধিত তেলের দাম আরও কমবে। সুয়েজ খালে জাহাজ আটকে গিয়ে পণ্য চলাচলে বাধা তৈরি হওয়ায় ভারতে আমদানি করা অশোধিত তেলের দাম বাড়বে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও চাহিদা কমার আশঙ্কায় অশোধিত তেলের দাম শুক্রবারেও কমেছে।
ভোটমুখী রাজ্যের বিজেপি নেতারা রান্নার গ্যাসের দাম কমানোর জন্য দিল্লিতে জরুরি বার্তা পাঠাচ্ছেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ আজ অভিযোগ তুলেছেন, জ্বালানির দাম বৃদ্ধিতে গরিব মানুষ আরও গরিব হয়ে পড়ছে। শিবসেনার অভিযোগ, এত দিন মানুষকে যন্ত্রণা দিয়ে এখন ভোটের ফায়দা তুলতে পেট্রল-ডিজেলের দাম কমানো হচ্ছে। বিরোধীদের আশঙ্কা, একই ভাবে অনেকটা দাম বাড়িয়ে সামান্য সুরাহা দিয়ে ভোট মরসুমে রান্নার গ্যাসের দামও কমানো হবে। তেল মন্ত্রক সূত্রের অবশ্য যুক্তি, রান্নার গ্যাসের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের দাম ও প্রোপেন-বুটেনের দামের উপরে নির্ভর করে। শীতের সময়ে প্রোপেন-বুটেনের দাম বাড়লেও গরমে তা কমতে শুরু করেছে। সব দিক দেখেই রান্নার গ্যাসের দাম ঠিক হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy