১০ লক্ষ টাকা অগ্রিম জমা দিতে পারেননি প্রসূতি। তাই তাঁকে ভর্তিই নিল না হাসপাতাল! বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হল তাঁর। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের পুণেতে ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনাচক্রে মৃতা আবার বিজেপি নেতা অমিত গোর্খের ব্যক্তিগত সহকারীর স্ত্রী। খবর প্রকাশ্যে আসতেই নানা মহলে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা। তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস।
আরও পড়ুন:
গত ২৮ মার্চ পুণের দীননাথ মঙ্গেশকর হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মৃতার নাম তানিশা ভিসে। বিজেপি নেতার ব্যক্তিগত সহকারী সুশান্ত ভিসের স্ত্রী তানিশা অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। চিকিৎসার জন্য পুণের ওই হাসপাতালে ভর্তি হতে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু অভিযোগ, হাসপাতালের ১০ লক্ষ টাকার বিল মেটাতে না পারায় তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এর পর প্রায় ২৫ কিলোমিটারেরও বেশি পথ পাড়ি দিয়ে শহরের আর একটি হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। সেখানে যমজ কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার পরেই মৃত্যু হয় তানিশার। তাঁর স্বামী সুশান্তের দাবি, ওই সময় তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার অনুরোধ করেছিলেন যে, চিকিৎসা শুরুর জন্য প্রাথমিক ভাবে আড়াই লক্ষ টাকা নেওয়া হোক, তিনি পরে সব টাকা যে ভাবে হোক মিটিয়ে দেবেন। কিন্তু অভিযোগ, কেউ তাঁর অনুরোধে কান দেননি। প্রসববেদনা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত স্বাস্থ্যেরও অবনতি হতে থাকে তানিশার। শেষমেশ উপায়ান্তর না দেখে স্ত্রীকে নিয়ে অন্য হাসপাতালে ছোটেন সুশান্ত। তাতেও শেষরক্ষা হয়নি।
আরও পড়ুন:
অভিযোগ খতিয়ে দেখতে হাসপাতালের তরফে চার সদস্যের একটি অন্তর্তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছিল। সেই কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, অভিযোগগুলি ‘বিভ্রান্তিকর’। ওই মহিলার গর্ভাবস্থা এমনিতেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। জন্মের পর তাঁর গর্ভস্থ দুই শিশুকেও এনআইসিইউ (নিকু)-তে রাখার প্রয়োজন পড়ত। এই চিকিৎসা যথেষ্ট ব্যায়সাপেক্ষ। সে কারণেই ওই দম্পতিকে পরামর্শ দেওয়া হয়, অর্থাভাব হলে তাঁরা রোগীকে সরকারি হাসপাতালের জটিল অস্ত্রোপচার বিভাগে ভর্তি করাতে পারেন। এর পর প্রসূতিকে নিয়ে হাসপাতাল ছেড়ে বেরিয়ে যান পরিজনেরা।
ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী ফডণবীস। গত সপ্তাহেই পুণের জয়েন্ট কমিশনার অফ চ্যারিটির নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মহিলার মৃত্যুর কারণ তদন্ত করে দেখবে ওই কমিটি। ফডণবীস বলেন, ‘‘নিহতের পরিবার আমার সঙ্গে দেখা করেছে। আমি তাদের আশ্বস্ত করে জানিয়েছি, ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির রিপোর্ট হাতে এলেই দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’