প্রশান্ত কিশোর। —ফাইল চিত্র।
বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েও হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে মধ্যপ্রদেশ। আপাতত তাই উপনির্বাচনকেই পাখির চোখ করতে চাইছে কংগ্রেস। তার জন্য ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের দ্বারস্থ হয়েছিল তারা। কিন্তু খালি হাতে ফিরতে হল তাদের। কংগ্রেসের সঙ্গে রাজ্যস্তরে তিনি কাজ করতে ইচ্ছুক নন বলে জানিয়ে দিলেন প্রশান্ত কিশোর।
জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ও তাঁর অনুগামীদের ভাঙিয়ে এনে চলতি বছরের মার্চে কমলনাথ নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে বিজেপি। জ্যোতিরাদিত্যের অনুগামীদের ছেড়ে যাওয়া আসন-সহ সব মিলিয়ে ২৪টি বিধানসভা আসনে খুব শীঘ্র উপনির্বাচন হতে চলেছে। তাতে যেন তেন প্রকারে বিজেপিকে মাত দেওয়ার চেষ্টা করছে কংগ্রেস।
সেই মতো প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে বলে মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমে জানান প্রদেশ কংগ্রেসের বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী পিসি শর্মা। তিনি বলেন, ‘‘উপনির্বাচনের রণনীতি ঠিক করতে প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে কথা চলছে। কী ভাবে প্রচার এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় কী রণনীতি হবে, তা ঠিক করতে দলকে সাহায্য করবেন উনি।’’
আরও পড়ুন: বঙ্গে অমিত শাহের ‘ভার্চুয়াল র্যালি’! সাজ সাজ রব রাজ্য বিজেপিতে
কিন্তু বুধবার একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলানোর জল্পনা উড়িয়ে দেন প্রশান্ত কিশোর। তিনি বলেন, ‘‘মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ ছাড়াও পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহও তাঁর কাছে উপনির্বাচনের রণনীতি তৈরি করার প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু আমি তা গ্রহণ করিনি। কংগ্রেসের হয়ে এই ধরনের খণ্ড খণ্ড কাজে আগ্রহী নই আমি।’’
২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনী প্রচারের দায়িত্ব সামলেছিলেন প্রশান্ত কিশোর। কিন্তু অমিত শাহের সঙ্গে মতান্তরের জেরে শেষমেশ বিজেপির সঙ্গে সমস্ত সংযোগ ছিন্ন করে দেন তিনি। বিহারে নীতীশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দল (জেডিইউ) লালুপ্রসাদের রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) এবং কংগ্রেসের ‘মহাজোট’-ও তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত। এমনকি জেডিইউয়ের সহ-সভাপতিও ছিলেন তিনি।
কিন্তু নীতীশ কুমার জোট ভেঙে বিজেপির হাত ধরার পর দু’জনের মধ্যে মতবিরোধ শুরু হয়। তার জেরে শেষমেশ জেডিইউ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন প্রশান্ত কিশোর। তার পর দিল্লিতে বিজেপির বিরুদ্ধে অরবিন্দ কেজরীবালের আম আদমি পার্টি (আপ)-র নির্বাচনী প্রচারের ভারও সামলান তিনি।
আরও পড়ুন: ফেসবুকের পর আরও তিন সংস্থার সঙ্গে চুক্তি প্রায় পাকা জিয়োর, বলছে সূত্র
এই মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ২০২১-এর বঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে রণনীতি তৈরি করতে ব্যস্ত প্রশান্ত কিশোর। তবে কংগ্রেসের বেলাতেই হাত তুলে নিলেন তিনি। যদিও এর আগে, ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশ ও পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের হয়ে নির্বাচনী রণকৌশল তৈরি করেছিলেন তিনি। তবে সে বার পঞ্জাবে বিপুল সাফল্য পেলেও, উত্তরপ্রদেশে মুখ থুবড়ে পড়েছিল কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টির (সপা) জোট।
সেই নিয়ে কোনও মতবিরোধের জেরেই কি কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলাতে ইতস্তত করছেন প্রশান্ত কিশোর? রাজনৈতিক মহলে এখন এমনই প্রশ্ন ঘুরছে। তবে দলের একটি সূত্র তাতে আমল দিতে নারাজ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক নেতা বলেন, ‘‘কংগ্রেসের সঙ্গে বৃহত্তর ও দীর্ঘস্থায়ী কাজে যুক্ত হতে চান প্রশান্ত কিশোর। আমরা ওঁর অনুভূতিটা বুঝি। কিন্তু এ ব্যাপারে দলের শীর্ষ নেতৃত্বই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy