প্রশান্ত কিশোর। —ফাইল চিত্র।
আগামী লোকসভা ভোটে বিজেপি বিরোধী জোট গঠনের উদ্যোগকে কিছু দিন আগেই কটাক্ষ করেছিলেন তিনিয় ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে) এ বার সাধুবাদ জানালেন নরেন্দ্র মোদী সরকারের ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি রূপায়ণের উদ্যোগকে। সোমবার পিকে বলেন, ‘‘সঠিক উদ্দেশ্য নিয়ে প্রণয়ন করা হলে ‘এক দেশ এক ভোট’ জাতীয় স্বার্থের অনুসারী।’’
‘এক দেশ এক ভোট’ কার্যকরী হলে জাতীয় ব্যয় এবং ভোটারদের ক্লান্তি কমবে বলেও দাবি করেন তিনি। পাশাপাশি তিনি বলেন, এই উদ্যোগের ফলে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আসতে পারে। পিকের কথায়, ‘‘ভারতের মতো বড় একটি দেশে প্রতি বছর প্রায় ২৫ শতাংশ ভোট আসে। তাই যাঁরা সরকার পরিচালনা করেন, তাঁদের অনেকেই এই নির্বাচনের বৃত্তে ব্যস্ত থাকে। এই ভোট প্রক্রিয়া যদি এক বা দু’বারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে তবে ভাল হবে।’’
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের মাস সাতেক আগে আবার ‘এক দেশ এক ভোট’ (ওয়ান নেশন ওয়ান ইলেকশন) নীতি কার্যকরের পক্ষে তৎপরতা শুরু করেছে মোদী সরকার। ওই নীতি কার্যকরের দিকগুলি খতিয়ে দেখার দেখার জন্য গত শুক্রবার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে একটি কমিটি গড়েছে কেন্দ্র। লোকসভা ভোটের সঙ্গেই সব রাজ্যের বিধানসভা ভোট সেরে ফেলার নেপথ্যে মোদী সরকারের যুক্তি হল, এতে নির্বাচনের খরচ কমবে। একটি ভোটার তালিকাতেই দু’টি নির্বাচন হওয়ায় সরকারি কর্মীদের তালিকা তৈরির কাজের চাপ কমবে। ভোটের আদর্শ আচরণ বিধির জন্য বার বার সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ থমকে থাকবে না। নীতি আয়োগ, আইন কমিশন, নির্বাচন কমিশনও এই ভাবনাকে নীতিগত সমর্থন জানিয়েছে বলে কেন্দ্রের দাবি।
যদিও বিরোধী দলগুলি গোড়া থেকেই ‘এক দেশ এক ভোট’ পদ্ধতির সমালোচনায় মুখর। মুম্বইয়ে ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন বিরোধী নেতারা। তাঁদের মতে, এই নীতি নিয়ে মোদী সরকার ঘুরপথে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ধাঁচের ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং সংসদীয় গণতন্ত্রিক ভাবনার পরিপন্থী বলেও বিরোধী নেতৃত্বের অভিযোগ। বিশেষত বিজেপি-বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলির আশঙ্কা, ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি কার্যকর হলে লোকসভার ‘ঢেউয়ে’ বিধানসভাগুলি ‘ভেসে যাবে’। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয়, সাংসদ এবং বিধায়ক নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেটুকু বৈচিত্রের সম্ভাবনা রয়েছে, বিজেপির আগ্রাসী প্রচারের মুখে তা ভেঙে পড়বে। ‘এক ভোট’ ব্যবস্থা চালুর পরে কেন্দ্রে বা কোনও রাজ্যে পাঁচ বছরের আগেই নির্বাচিত সরকার পড়ে গেলে কী হবে, প্রশ্ন রয়েছে তা নিয়েও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy