পুলিশি ধরপাকড় ঠেকাতে মরিয়া সিএএ-প্রতিবাদী। শুক্রবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: রয়টার্স।
অটোযাত্রীর শুধু নামার অপেক্ষা— চড়ো বাসে!
বাড়ি ফিরবেন বলে অপেক্ষমাণ ব্যক্তিকে ঠেলে তোলা হল বাসের ভিতরে! হাসপাতালে যাচ্ছিলেন এক তরুণ, তাঁকে বলা হল, ‘‘আগে বাসে ওঠো, তার পরে কথা!’’
আজ বেলা বাড়তেই এটা ছিল চাণক্যপুরীর ডিপ্লোমেটিক এনক্লেভে পুলিশি তৎপরতার চিত্র। সিএএ এবং এনআরসি-বিরোধী বিক্ষোভ ঠেকাতে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখেনি পুলিশ। সিএএ এবং এনআরসি-র প্রতিবাদে প্রশাসনের যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে আজ রাজধানীর রাজপথে নামেন কয়েকশো বিক্ষোভকারী। জামা মসজিদের সামনেও আজ ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘টুকড়ে গ্যাং’, তথ্য চেয়ে প্রশ্ন কেন্দ্রকে
চাণক্যপুরী এলাকায় আজ বেলা ৩টে নাগাদ উত্তরপ্রদেশ ভবন ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছিলেন জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। ঘেরাও রুখতে সেখানে আসা বিক্ষোভকারী থেকে ব্যক্তিগত কাজে আসা আমজনতা কাউকে রেওয়াত করেনি নিরাপত্তা বাহিনী। আটক করা হয় শ’খানেক ব্যক্তিকে। তাঁদের একাংশকে মন্দির মার্গ থানা ও বাকিদের মহারানি বাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
জামা মসজিদের সামনে বিক্ষোভে কংগ্রেস নেত্রী অলকা লাম্বা। ছবি: পিটিআই।
পুলিশি ধরপাকড়ে বাসের মধ্যেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন আটক ব্যক্তিরা। এক ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, আধাসেনার এক জওয়ান এক মহিলা বিক্ষোভকারীর গায়ে হাত দিতেই, ক্ষোভে ফেটে পড়েন ওই মহিলা। তিনি বলতে থাকেন, ‘‘কেন ওই পুরুষ কর্মী আমার গায়ে হাত দিচ্ছেন?’’ তখন অবশ্য বাসে ছিলেন দিল্লি পুলিশের মহিলাকর্মীরাও। প্রশ্ন ওঠে তা সত্ত্বেও কেন ওই জওয়ান মহিলাকে ধাক্কা দিলেন। এক বিক্ষোভকারীকে বলতে শোনা যায়, কী কারণে তাঁদের এ ভাবে বাসে তোলা হচ্ছে? তিনি জানতে চান, ‘‘দিল্লিতে কি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের অধিকার নেই।’’ অবশ্য দিল্লি পুলিশের যুক্তি, গোলমালের আশঙ্কায় বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়া হয়। যদিও আমজনতার হেনস্থা নিয়ে মুখ খোলেনি তারা। এরই মধ্যে আজ শিমলায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘‘অতীতে পাকিস্তান থেকে ‘আলিয়া-মালিয়া-জামালিয়া’-রা এসে জওয়ানদের হত্যা করে চলে যেত। আমাদের সরকার তা রুখেছে।’’
আজ ছিল শুক্রবারের নমাজ। অশান্তির আশঙ্কায় সকাল থেকেই তৎপর প্রশাসন। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে ভোর থেকেই শুরু হয় ফ্ল্যাগ মার্চ। জামা মসজিদ, জামিয়া নগর, চাণক্যপুরীর উত্তরপ্রদেশ ভবনের সামনে মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশবাহিনী। জাফরাবাদ ও সীলমপুরের মতো সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় মোতায়েন করা হয় আধাসেনা। জামা মসজিদ-সহ একাধিক এলাকায় নজরদারিতে ড্রোন ব্যবহার করা হয়।
সকলে মিলিয়া: জামা মসজিদের সামনে নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ। শুক্রবার দিল্লিতে। ছবি: এএফপি।
বজ্রআঁটুনির মধ্যেও আজ পুলিশকে অস্বস্তিতে ফেলে চন্দ্রশেখর আজাদের ভিম আর্মি। বিক্ষোভকারীদের প্রত্যেকের দু’হাত ছিল বাঁধা। বলা হয়, যাতে পুলিশ পরে অভিযোগ না করতে পারে যে বিক্ষোভকারীরা ঝামেলা পাকিয়েছে। জোড়বাগ ক্রসিং-এ তাদের আটকে দিতেই ওই মিছিলটি প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দিকে এগোতে শুরু করে। তড়িঘড়ি জোড় বাগ ও লোককল্যাণ মার্গের সংযোগকারী রাস্তাটি আটকে দেওয়া হয়। বন্ধ হয়ে যায় লোককল্যাণ মার্গ মেট্রো স্টেশন।
আজ জামা মসজিদ চত্বরের পরিস্থিতি ছিল অপেক্ষাকৃত শান্ত। নমাজের পরে হাজার খানেক বিক্ষোভকারী মসজিদ চত্বরে জড়ো হয়েছিলেন। উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক অলকা লম্বা ও প্রাক্তন বিধায়ক শোয়েব ইকবাল। অলকা বলেন, ‘‘বেকারত্ব দেশের সমস্যা। কিন্তু আপনি (প্রধানমন্ত্রী) নোট বাতিলের মতোই এখন এনআরসির জন্য লোককে লাইনে দাঁড় করাতে চাইছেন।’’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের পাল্টা, ‘‘কংগ্রেস পরিকল্পিত ভাবে গোটা দেশে ঝামেলা পাকাতে চাইছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy