পুলিশের লাঠিতে আহত কৃষক। শনিবার রাহুল গাঁধী টুইট করেন ছবিটি। ছবি: টুইটার
প্রতিবাদী কৃষকদের উপরে পুলিশের লাঠিচার্জকে ঘিরে শনিবার ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল কৃষক আন্দোলনের মঞ্চ। বিক্ষোভ ওঠাতে গিয়ে পুলিশের বেপরোয়া মার জন্ম দিল রাস্তা অবরোধ এবং তীব্রতর আন্দোলনের। কৃষকদের মার খাওয়ার ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে যায় কিছুক্ষণের মধ্যেই। রাহুল গাঁধী টুইটে লেখেন, ‘‘আরও একবার কৃষকদের রক্ত ঝরল। লজ্জায় ভারতের মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে।’’
আজ সকালে বিজেপি-শাসিত হরিয়ানার কারনালে বস্তারা টোল প্লাজার কাছে জাতীয় সড়কে জড়ো হয়েছিলেন কৃষকরা। আসন্ন পুরসভা নির্বাচন উপলক্ষে এই পথ দিয়েই একটি সভায় হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরের যাওয়ার কথা ছিল বিকেলে। তাঁর এবং বিজেপির অন্যান্য নেতার কনভয় রুখে দেওয়ার লক্ষ্যে সকাল থেকেই চাষিরা কালো পতাকা নিয়ে রাস্তায় ভিড় জমান। কারনালের একটি হোটেলের বাইরে বিজেপির সভা চলছিল। চাষিরা সেখানেই পৌঁছতে চেয়েছিলেন। না পেরে কালো পতাকা নিয়ে টোল প্লাজা অবরোধ করেন তাঁরা। নেতাদের গাড়ি আটকাতে না পারলেও বিজেপি-বিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। তাঁদের হটাতে পুলিশ লাঠি চালাতে শুরু করে। চাষিদের রক্তে ভেজা জামা, ব্যান্ডেজ বাঁধা আহত চাষিদের ছবি-ভিডিয়ো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সমাজমাধ্যমে। অন্তত দশ জন চাষি আহত বলে সংবাদমাধ্যমে খবর।
এক দিকে আহত চাষিদের ভিডিয়ো অন্য দিকে এক আইএএস অফিসারের ভিডিয়ো, দুয়ে মিলে পরিস্থিতি আরও উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে। ভাইরাল ওই ভিডিয়োয় দেখা যায়, ঘটনাস্থলে ২০১৮ ব্যাচের আইএএস আয়ুষ সিংহ পুলিশকে নির্দেশ দিচ্ছেন, ‘প্রত্যেক প্রতিবাদীকে ধরে পেটাও! উঠা উঠাকে মারো পিছে সবকো।’ আয়ুষ বর্তমানে কারনালের এসডিএম। তাঁকে এও বলতে শোনা যায়, ‘‘একটা লোকও যেন আমার কাছে পৌঁছতে না পারে। যদি বা পৌঁছয়, তার মাথা যেন ফাটিয়ে দেওয়া হয়। ক্লিয়ার হ্যায় আপকো?’’ পঞ্জাবের অমৃতসরেও এ দিন মোদী-বিরোধী কৃষক সমাবেশে লাঠি চলেছে বলে অভিযোগ।
কিন্তু পুলিশের ভূমিকায় প্রতিবাদের আঁচ কমার বদলে আরও বেড়ে যায়। ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের নেতা গুরনাম সিংহ চাধুনি ভিডিয়ো মারফত বার্তা দিয়ে বস্তারা টোল প্লাজায় আরও লোক জমা হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি নিজেও বস্তারায় যান। হরিয়ানা জুড়েই শুরু হয়ে যায় রাস্তা অবরোধ। বস্তারা টোল প্লাজার পাশাপাশি কুরুক্ষেত্রের শাহবাদ এবং কালকা-জিকরপুর সড়কের সুরজপুর টোল প্লাজাও অবরুদ্ধ হয়ে যায়। চাষিরা রাস্তায় খাটিয়া পেতে বসে পড়েন। প্রায় তিন কিলোমিটার লম্বা যানজট তৈরি হয়ে যায় জাতীয় সড়ক জুড়ে। বিরোধী দলের নেতানেত্রীরা সমাজমাধ্যমে মুখ খুলতে শুরু করেন। রাহুল টুইট করেন। হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিংহ হুডা বলেন, ‘‘বর্বরোচিত আক্রমণ। বিজেপির সভাস্থল থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে শান্তিপূর্ণ ভাবে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন চাষিরা। তাঁদের উপরে যে ভাবে আক্রমণ হল, তার নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া দরকার।’’ কৃষক নেতা চাধুনির দাবি, সরকার যদি চাষিদের কাছে এসে কথা না বলে, অনির্দিষ্ট কাল ধরে অবরোধ চলবে। তাঁর কথায়, ‘‘দরকার হলে আমরা রাস্তাতেই মরব। কিন্তু দেশকে বেচতে দেব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy