(বাঁ দিকে) মহারাষ্ট্রের সেই আমলা-পুত্র তথা বিজেপির যুবনেতা অশ্বজিৎ গায়কোয়াড়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা তরুণী প্রিয়া সিংহ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
‘প্রেমিকা’কে গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনায় অবশেষে পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলের হাতে গ্রেফতার হলেন মহারাষ্ট্রের আমলা-পুত্র অশ্বজিৎ গায়কোয়াড়। ঘটনার দিন যে গাড়িটিকে ব্যবহার করা হয়েছিল সেটিকেও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। অশ্বজিতের পাশাপাশি তাঁর দুই সঙ্গী রোমিল পাটিল এবং সাগর শেড়গেকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনায় প্রথমে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠলেও পরে তদন্ত শুরু করে ঠানে পুলিশ। গঠন করা হয় বিশেষ তদন্তকারী দল(সিট)। জ়োন ৫-এর ডিসিপি অমরসিংহ যাদব বলেন, “ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৭৯, ৩৩৮, ৩২৩, ৫০৪ এবং ৩৪ ধারায় মামলা করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। সাক্ষ্যপ্রমাণ জোগাড়ের চেষ্টা চলছে। এখনও পর্যন্ত তিন জন সাক্ষীর বয়ান নথিভুক্ত করা হয়েছে।”
অশ্বজিতের গ্রেফতারির আগেই প্রিয়া দাবি করেন তাঁকে ভয় দেখানো হচ্ছে। তিনি বলেন, “শনিবার রাতে কয়েক জন পুলিশকর্মী বাড়িতে এসে আমাকে একটি কাগজে সই করতে বলেন। সেই মুহূর্তে বাড়িতে কেউ না থাকায় এবং আমার উকিল সেই সময় উপস্থিত না থাকায় আমি সই করতে রাজি হইনি। এর পর তাঁরা রাগ দেখিয়ে আমার বাড়ি থেকে চলে যান।” তিনি আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর উপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে। আমি ন্যায় বিচার চাই।”
কী হয়েছিল সে দিন?
ঘটনাটি মহারাষ্ট্রের ঠাণে জেলার। অশ্বজিতের প্রেমিকা প্রিয়া সিংহ ইনস্টাগ্রামে গোটা ঘটনাটির বিবরণ দিয়েছেন। তিনি নিজের ভাঙা পায়ের ছবি দিয়ে জানিয়েছেন, গত ১১ ডিসেম্বর ভোর ৪টের সময় তিনি প্রেমিকের ডাকে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন। তাঁদের বাড়িতে পারিবারিক অনুষ্ঠান চলছিল। কিন্তু যুবক প্রথম থেকেই তাঁর সঙ্গে অস্বাভাবিক আচরণ করছিলেন বলে দাবি করেছেন প্রিয়া। যুবকের এক বন্ধু তাঁকে অপমান করেন। তার প্রতিবাদ করতে গেলেই যুবকের সঙ্গে তাঁর ঝামেলা শুরু হয়। প্রিয়া সমাজমাধ্যমের পোস্টে অভিযোগ করেছেন, তাঁকে তাঁর প্রেমিক বেধড়ক মারধর করেন। পরে তাঁকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে নিজের গাড়ির চালককে নির্দেশ দেন, তাঁর পায়ের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যেতে। প্রিয়ার আরও দাবি করেন, তাঁর সঙ্গে অশ্বজিতের গত সাড়ে চার বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে।
যদিও এই সমস্ত অভিযোগ করেন অশ্বজিৎ। এমন কি প্রিয়াকে নিজের ‘প্রেমিকা’ মানতেও অস্বীকার করেন তিনি। অশ্বজিতের অভিযোগ, একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে ভোরবেলা মত্ত অবস্থায় হাজির হয়ে সেখানে উপস্থিত লোক জনকে বিরক্ত করতে শুরু করেন প্রিয়া।
কী ভাবে গাড়ি চাপা পড়লেন তরুণী? অশ্বজিৎ জানিয়েছেন, তিনি গাড়ির সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁর চালক তাঁকে সরে যেতে বলেছিলেন। গাড়ি ঘোরাতে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে কোনও ভাবেই দুর্ঘটনাটি ইচ্ছাকৃত ছিল না বলে দাবি করেছেন তিনি। অশ্বজিৎ আরও জানান, তাঁর কাছ থেকে টাকা হাতানোর উদ্দেশ্যে এই গল্প তৈরি করা হয়েছে।
মহারাষ্ট্র সরকারের রাজ্য সড়ক উন্নয়ন কর্পোরেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অনিল গায়কোয়াড়ের পুত্র অশ্বজিৎ বিজেপি নেতাও বটে। তিনি ঠাণে জেলার বিজেপি যুবমোর্চার প্রেসিডেন্ট। আমলা-পুত্রের বিরুদ্ধে ‘প্রেমিকা’কে হেনস্থার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে আলোড়ন তৈরি হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy