Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
PM Narendra Modi

Sonia Gandhi: সাভারকরের স্তুতি মোদীর, তোপ সনিয়ার

সাভারকরের নাম বা প্রসঙ্গ উল্লেখ না করেই সনিয়া জানিয়েছেন, ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃত করলে তা কোনও ভাবেই মেনে নেবে না কংগ্রেস।

মোদী-সহ বিজেপি নেতৃত্বকে একহাত নিলেন সনিয়া গান্ধী।

মোদী-সহ বিজেপি নেতৃত্বকে একহাত নিলেন সনিয়া গান্ধী। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০২২ ০৫:৫০
Share: Save:

‘নেহরুজি’-কে স্মরণ করলেন ঠিকই। কিন্তু ‘পূজনীয় বাপু’-র সঙ্গে একই বাক্যে টেনে আনলেন ‘বীর সাভারকর’-কে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ লাল কেল্লার প্রাচীর থেকে ৭৬তম স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় বলেন, “আমরা সমস্ত দেশবাসী পূজনীয় বাপু, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, বাবাসাহেব অম্বেডকর, বীর সাভারকরের প্রতি কৃতজ্ঞ। যাঁরা কর্তব্যের পথে নিজেদের জীবন ত্যাগ করেছেন। কর্তব্যের পথই তাঁদের জীবনের পথ ছিল।” এই বক্তৃতার কিছু ক্ষণের মধ্যেই স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে পাঠানো নিজের বার্তায় মোদী-সহ বিজেপি নেতৃত্বকে একহাত নিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী। সাভারকরের নাম বা প্রসঙ্গ উল্লেখ না করেই সনিয়া জানিয়েছেন, ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃত করলে তা কোনও ভাবেই মেনে নেবে না কংগ্রেস।

হিন্দু মহাসভার নেতা ও ‘হিন্দুত্ব’ মতাদর্শের জনক বিনায়ক দামোদর সাভারকরকে নরেন্দ্র মোদী-সহ বিজেপি-আরএসএসের নেতারা তাঁদের তাত্ত্বিক গুরু বলে মনে করলেও কংগ্রেস বারবারই মনে করিয়ে দেয়, মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীর হত্যায় সাভারকর অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন। প্রমাণের অভাবে তিনি ছাড়া পেয়ে যান। সেলুলার জেলে বন্দি থাকার সময়ে তিনি মুক্তি পেতে ব্রিটিশদের কাছে বারবার ক্ষমাপ্রার্থনাও করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী আজ একই বাক্যে গান্ধীর সঙ্গে সেই সাভারকরের প্রতি ‘দেশের কৃতজ্ঞতা’ জানানোর পরে কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা বলেছেন, “কে দেশের

স্বাধীনতার জন্য লড়েছিল, কে ব্রিটিশদের কাছে ক্ষমা চেয়েছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আমরা স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে নিচু স্তরের রাজনীতিতে যেতে চাই না।”

আজ কংগ্রেসের সদর দফতরে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে রাহুল গান্ধীকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি মুখ খুলতে চাননি। তবে কংগ্রেস সভানেত্রী তাঁর বার্তায় বলেছেন, “আজকের আত্মমুগ্ধ সরকার আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আত্মত্যাগ ও দেশের গৌরবময় ইতিহাসকে তুচ্ছ প্রমাণ করতে উঠে পড়ে লেগেছে। এ কোনও ভাবেই মানা যায় না। রাজনৈতিক লাভের জন্য ঐতিহাসিক তথ্য নিয়ে কোনও ভুল বক্তব্য পেশ করা হলে, গান্ধী-নেহরু-পটেল-আজাদের মতো দেশের মহান নেতাদের অসত্যের ভিত্তিতে কাঠগড়ায় তোলার চেষ্টা হলে, কংগ্রেস তার বিরোধিতা করবে।” সনিয়া আরও বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই দেশ দীর্ঘস্থায়ী ছাপ রেখেছে। বিশেষত বিজ্ঞান, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে প্রভূত সাফল্য অর্জন করেছে।’’

প্রধানমন্ত্রী আজ রাজেন্দ্র প্রসাদ, জওহরলাল নেহরুর সঙ্গে দীনদয়াল উপাধ্যায়, নানাজি দেশমুখের মতো জনসঙ্ঘ, বিজেপির নেতাদেরও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। কংগ্রেসের অভিযোগ, জনসঙ্ঘ, আরএসএসের স্বাধীনতা সংগ্রামে কোনও ভূমিকা ছিল না। প্রধানমন্ত্রী তাই ইতিহাসকে ‘হোয়াইট ওয়াশ’ করে ফেলতে চাইছেন। ১৪ অগস্ট বিজেপির ‘দেশ ভাগের বিভীষিকা স্মরণ দিবস’-এ বিজেপি নেতৃত্ব ঘুরিয়ে দেশ ভাগের সময়ে নেহরুর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। কর্নাটকে বিজেপি সরকারের স্বাধীনতা দিবসের বিজ্ঞাপনে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের তালিকায় নেহরু ছিলেন না। কিন্তু সাভারকরকে ‘বিপ্লবী’ তকমা দিয়ে স্মরণ করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী অবশ্য লাল কেল্লা থেকে রাজেন্দ্র প্রসাদ, সর্দার পটেলের সঙ্গে নেহরুকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের অভিযোগ, মোদী আজ যাঁকে গান্ধীজির সঙ্গে এক সারিতে বসিয়েছেন, সেই সাভারকরই দ্বিজাতি তত্ত্বের জনক। তার পরে মহম্মদ আলি জিন্না সেই তত্ত্বকে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে মুসলিম রাষ্ট্রের দাবি তোলেন। প্রসঙ্গত সাভারকরের একটি পোস্টার সরানো নিয়ে সংঘর্ষের জেরে কর্নাটকের শিবমোগায় ছুরিবিদ্ধ হয়েছেন এক ব্যক্তি। নিষিদ্ধ হয়েছে জমায়েত।

আজ রাহুল গান্ধী ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার নেতৃত্বে কংগ্রেস নেতারা দলের সদর দফতর থেকে তিস জানুয়ারি মার্গে ‘গান্ধী স্মৃতি’ পর্যন্ত ‘স্বাধীনতার গৌরব মিছিল’ করেন। রাহুল-সহ কংগ্রেস নেতারা ‘গান্ধী স্মৃতি’তে শ্রদ্ধা জানান। সনিয়া অসুস্থ থাকায় অম্বিকা সোনি আজ কংগ্রেস দফতরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। দুই বিক্ষুব্ধ নেতা গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মাও আজ মিছিলে অংশ নেন। গুলাম নবি সবে অসুস্থতা কাটিয়ে উঠেছেন। তা সত্ত্বেও তাঁকে পুরো রাস্তাটাই হাঁটতে দেখা যায়। রাহুল পরে টুইট করে বলেন, ‘আমরা শপথ করছি, কোনও ভাবেই দেশকে ঘৃণা, জাতি, ধর্ম, ভাষার ভিত্তিতে ভাগ হতে দেব না।’ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে টুইটারে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রিয়ঙ্কাও। লিখেছেন, ‘দেশের স্বাধীনতার জন্য যে সব নেতা-নেত্রী, স্বাধীনতা সংগ্রামী ও শহিদ জীবন দিয়েছিলেন, তাঁদের কথা আমাদের ভুললে চলবে না। একত্রে কাজ করে দেশকে অগ্রগতির পথে নিয়ে যেতে হবে।’

অন্য বিষয়গুলি:

PM Narendra Modi sonia gandhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy