গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
দীপাবলির আগে পশ্চিমবঙ্গ এবং দিল্লির প্রবীণদের কাছে ক্ষমা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর অভিযোগ, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আম আদমি পার্টি (আপ) পরিচালিত দিল্লি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী অতিশীর অসহযোগিতার কারণে কেন্দ্রের ‘আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প’ সেখানে কার্যকর হচ্ছে না।
প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ মঙ্গলবার বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলায় স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প চালু রয়েছে। রাজ্যের সমস্ত পরিবারের সবাই এই প্রকল্পের আওতায় রয়েছেন। তাঁরা সুবিধা পাচ্ছেন। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্র্রী আয়ুষ্মানের কোনও নিয়মকানুন উল্লেখ করেননি। ওই প্রকল্পে সকলে স্বাস্থ্যবিমার সুযোগ পান না। দুর্ভাগ্যজনক হল, বাংলা এবং দিল্লিতে রাজনৈতিক ভাবে প্রত্যাখ্যাত হয়ে প্রধানমন্ত্রী ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন।’’
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্প সংক্রান্ত একটি কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি দিল্লির এবং পশ্চিমবঙ্গের ৭০ বছরের বেশি বয়সি সমস্ত প্রবীণের কাছে ক্ষমা চাইছি যে আমি আপনাদের সেবা করতে সক্ষম হব না।’’ এর পরে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি তাঁদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী, যে তাঁরা কেমন আছেন, সে বিষয়ে কোনও তথ্যই আমি পাব না। তাই কোনও সাহায্যও করতে পারব না। এর কারণ হল পশ্চিমবঙ্গের সরকার এবং দিল্লির সরকার এই আয়ুষ্মান যোজনায় যোগ দিচ্ছে না।’’
মোদী সরকারের ‘আয়ুষ্মান ভারত’ স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্পের অধীনে ৫৫ কোটি মানুষকে নিয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা স্থির হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ ও দিল্লি এখনও এই প্রকল্পে যোগ দেননি। তাই এখনও পর্যন্ত ৩৫ কোটি ৩৬ লক্ষ মানুষকে ‘আয়ুষ্মান ভারত’-এর আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে বলে সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের একটি রিপোর্টে অভিযোগ করা হয়েছিল। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আধিকারিকদের যুক্তি, বিহারও অনেক পরে আয়ুষ্মান প্রকল্পে যোগ দিয়েছে। নবীন পট্টনায়কের আমলে ওড়িশাও এই কেন্দ্রীয় প্রকল্পে যোগ দেয়নি। এখন ওড়িশায় বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরে নতুন সরকার আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে যোগ দেওয়া নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে।
২০১৮ সালে মোদী সরকারের ‘আয়ুষ্মান ভারত’ চালু হয়। পরিবার পিছু বছরে ৫ লক্ষ টাকার বিনামূল্যে চিকিৎসার সুবিধা মেলে এই প্রকল্পে। নীতি আয়োগের সদস্য ভিকে পলের অধীনে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি এখন এই বিমার মূল্য বাড়ানো সম্ভব কি না তা খতিয়ে দেখছে। ১২.৩৭ কোটি পরিবার আয়ুষ্মান ভারতে যোগ দিয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ ও দিল্লির ১০ থেকে ১১ কোটি মানুষ এই আয়ুষ্মান ভারতের সুবিধা পেতেন। কিন্তু রাজ্য সরকার আয়ুষ্মান ভারতে যোগ না দেওয়ায় লক্ষ্যপূরণে খামতি থেকে গিয়েছে।
এ ক্ষেত্রে একতরফা ভাবে কেন্দ্রের পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়। কারণ রাজ্যকে এই প্রকল্পের ৪০ শতাংশ খরচ বহন করতে হয়। ঘটনাচক্রে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘স্বাস্থ্য সাথী’র মতোই দিল্লি আপ সরকারেরও নিজস্ব স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্প রয়েছে। তাই তারা ৪০ শতাংশ খরচ বহন করে মোদী সরকারের একতরফা প্রচারে উৎসাহী নয় বলে এ রাজ্যের শাসকদলের একটি সূত্রের দাবি, পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি হাসপাতাল ‘আয়ুষ্মান ভারত’-এর তালিকাভুক্ত। সেখানে অন্য রাজ্যের মানুষ গিয়ে এই বিমা প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে চিকিৎসা করাতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy