অভিবাদন: কর্নাটকে বিধানসভা ভোটের প্রচারে নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার বল্লারিতে। পিটিআই
অতীতে দেশবাসীকে ‘কাশ্মীর ফাইলস’ সিনেমা দেখার পরামর্শ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, যাতে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উপত্যকা থেকে চলে যাওয়ার বিষয়টি দেখানো হয়েছিল। আজ কর্নাটকের বল্লারিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ সিনেমা নিয়ে সরব হলেন মোদী। এই চলচ্চিত্রে লাভ জেহাদ, অন্য ধর্মের মেয়েদের মুসলিম ধর্মে ধর্মান্তরণ ও ধর্মান্তরিতদের আইএসের হয়ে সিরিয়ায় লড়তে যাওয়ার বিষয়ে দেখানো হয়েছে। কেরলে বামেদের পাশাপাশি কংগ্রেস গোড়া থেকেই ওই ছবির বিরোধিতা করায় আজ প্রধান বিরোধী দলকে আক্রমণ শানিয়ে মোদী বলেন, “কংগ্রেস ওই সিনেমা বন্ধ রাখার জন্য সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে।” অনেকের মতে, ভোটের মুখে কংগ্রেসের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সম্পর্কের বিষয়ে সরব হয়ে কর্নাটকের নির্বাচনের ঠিক আগে হিন্দু ভোট মেরুকরণের কৌশল নিলেন প্রধানমন্ত্রী।
‘কাশ্মীর ফাইলস’-এর মতো গোড়া থেকেই ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ওই সিনেমায় দেখানো হয়েছে অন্য ধর্মের মহিলাদের মগজধোলাই করে ধর্মান্তরিত করে সিরিয়ায় আইএস-এর হয়ে যুদ্ধে পাঠানো হচ্ছে। সিনেমায় দাবি করা হয়েছে, গত কয়েক বছরে প্রায় ৩২ হাজার মহিলা কেরল থেকে নিখোঁজ হয়েছেন। কেরল পুলিশ থেকে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন সাফ জানিয়েছেন, সিনেমার এই বিষয় ও হারিয়ে যাওয়া মহিলাদের সংখ্যা সম্পূর্ণ মনগড়া ও অবাস্তব। বিজয়ন অভিযোগ করেছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েই ভোটের আগে মিথ্যা তথ্যে ভরপুর এমন সিনেমা বাজারে আনছে সঙ্ঘ পরিবার ও বিজেপি। পুলিশ জানিয়েছে, কেরল থেকে তিন জন মহিলা একটা সময়ে সিরিয়ায় গিয়েছিল। আর কোনও মহিলা নিখোঁজও নেই। পরে সেন্সর বোর্ডের নির্দেশে ৩২ হাজার সংখ্যাটি বদলে ৩ করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পরিচালক সুদীপ্ত সেন।
গোড়া থেকেই ওই সিনেমা বানানোর প্রকৃত উদ্দেশ্যে নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব রয়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। এমনকি সঙ্ঘ পরিবারের নির্দেশে ওই সিনেমাটি বানানো হয়েছে বলে দাবি করেছে কংগ্রেস। আজ সিনেমার প্রসঙ্গ তুলে মোদী বলেন, “বিগত কিছু বছরে সন্ত্রাসের নতুন ধরনের স্বরূপ সামনে এসেছে। বোমা, বন্দুক, পিস্তলের আওয়াজ তো শোনা যায়। কিন্তু সমাজকে ভিতর থেকে দুর্বল করার ওই সন্ত্রাসের যড়যন্ত্রের কোনও আওয়াজ হয় না। এমনই ষড়যন্ত্র নিয়ে বানানো হয়েছে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ সিনেমা। কিন্তু দেশের কাছে দুর্ভাগ্যের হল যারা ওই সমাজকে ধ্বংস করতে ওই সন্ত্রাসবাদী ভাবধারা ছড়াচ্ছে, তাদের কংগ্রেস সমর্থন করে চলেছে। শুধু তাই নয়, সে সব শক্তির সঙ্গে পিছনের দরজা দিয়ে রাজনৈতিক দর কষাকষি করে চলেছে কংগ্রেস।”
প্রধানমন্ত্রীর ওই মন্তব্যকে হতাশার বহিঃপ্রকাশ বলেই ব্যাখ্যা করেছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। দলের বক্তব্য, ভোটের চার দিন আগে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে কর্নাটকে কংগ্রেস সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে চলেছে। আর তা বুঝেই বাধ্য হয়ে হিন্দু ভোটের মেরুকরণের উদ্দেশ্যে বাধ্য হচ্ছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির লক্ষ্যই হল, যে কোনও মূল্যে মেরুকরণের রাজনীতি করে হিন্দু ভোটকে নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসা। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, “জনমত সমীক্ষা বলছে কংগ্রেস কর্নাটকে ১২০-১৩২টি আসন পেতে চলেছে। তা বুঝেই প্রধানমন্ত্রী মরিয়া হয়ে পড়েছেন।” একই সঙ্গে মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে বলেন, “গত কয়েক দিন মণিপুর জ্বলছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দু’জনেই কর্নাটকে প্রচারে ব্যস্ত। মণিপুর নিয়ে কারও কোনও উদ্বেগ নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy