Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
PM Narendra Modi

দুর্নীতি রুখলেই তো চিৎকার: প্রধানমন্ত্রী

গুজরাতে মোদীর তিন দিনের সফরের আজ ছিল শেষ দিন। বছর শেষে গুজরাতের বিধানসভা ভোট। তার আগে মোদী আজ তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের অভিযোগ খণ্ডন করতে নামেন।

মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীর মহাকালেশ্বর মন্দিরে শ্রী মহাকালেশ্বর করিডরের প্রথম পর্যায়ের উদ্বোধনের আগে পুজো দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার। পিটিআই।

মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীর মহাকালেশ্বর মন্দিরে শ্রী মহাকালেশ্বর করিডরের প্রথম পর্যায়ের উদ্বোধনের আগে পুজো দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার। পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২২ ০৮:১৬
Share: Save:

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার মাধ্যমে ধারাবাহিক ভাবে তাঁদের নিশানা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ বিজেপি-বিরোধী দলগুলির নেতাদের। এনিয়ে গুজরাতের রাজকোটে আজ পাল্টা আক্রমণে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর দাবি, দুর্নীতিগ্রস্ত নেতা ও দলগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই বিরোধীরা চিৎকার জুড়ে দিচ্ছেন। ভোটের জনসভায় মোদী বলেন, ‘‘আপনারাই বলুন সরকার এই পদক্ষেপ করে ঠিক ব্যবস্থা নিচ্ছে কি না?’’ দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হতে আজ জয়প্রকাশ নারায়ণের জন্ম দিনটিকে বেছে নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

গুজরাতে মোদীর তিন দিনের সফরের আজ ছিল শেষ দিন। বছর শেষে গুজরাতের বিধানসভা ভোট। তার আগে মোদী আজ তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের অভিযোগ খণ্ডন করতে নামেন। বিরোধীদের দাবি, তাঁদের দুর্বল করতেই পরিকল্পিত ভাবে তদন্তকারী সংস্থাকে ব্যবহার করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস, বিহারে নীতীশ-লালুপ্রসাদের দল, মহারাষ্ট্রে উদ্ধব ঠাকরের দল, উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টি মোদী-অমিত শাহের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলেছে। কংগ্রেসও এনিয়ে সরব। প্রতিটি বিরোধী দলের নেতারই অভিযোগ, ক্ষমতা ধরে রাখতে বিরোধীদের কোণঠাসা করতে এই পথ বেছে নিয়েছেন মোদী। পাল্টা আক্রমণ করতে আজ জয়প্রকাশ নারায়ণের জন্মজয়ন্তীকে বেছে নিয়েছেন মোদী। ইন্দিরা গান্ধীর জরুরি অবস্থার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিরোধীদের একজোট করে আন্দোলনে নেমেছিলেন জয়প্রকাশ নারায়ণ। দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করার ডাক দিয়েছিলেন। আর আজ জয়প্রকাশ নারায়ণের নাম করেই মোদীর মুখে ছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই বিরোধীরা সরব হচ্ছেন। চিৎকার জুড়ে দিচ্ছেন। আজ জয়প্রকাশজী যদি দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেন, তাহলেও বিরোধীরা একই ভাবে চিৎকার করতেন।’’ স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে জনতার উদ্দেশে প্রশ্ন ছুঁড়ে মোদী জানতে চান, দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করে সরকার ঠিক করেছে কি না? জনতা হাত তুলে সমর্থন জানান মোদীকে। রাজনীতি অঙ্গনের অনেকেরই মতে, দুর্নীতি রোখার প্রশ্নে তাঁর সরকার যে অন্যায় কিছু করছে না, তদন্তকারী সংস্থা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছে— সেই ব্যাখ্যাই দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

তবে বিরোধীদের দাবি, ইউপি জমানায় দলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে তদন্তকারী সংস্থার অতি-সক্রিয়তা নিয়ে সরব হয়েছিল বিজেপি নেতৃত্বই। ২০১৩ সালে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা অরুণ জেটলি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অপব্যবহারের অভিযোগ নিয়ে যে চিঠি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে লিখেছিলেন— এখন তা সামনে আনছেন বিরোধীরা। জেটলি ওই চিঠিতে মনমোহনকে লিখেছিলেন, ‘তদন্তকারী সংস্থার পেশাদারিত্ব ও কাজের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা বজায় রাখার দায়িত্ব ও কর্তব্য শুধুমাত্র আপনার (প্রধানমন্ত্রীর)। বিরোধীদের পিছনে তদন্তকারী সংস্থাকে অপব্যবহার করার প্রবণতা যদি রোখা না যায়, তাহলে তা গণতন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকর দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।’ তৃণমূল নেতা সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘‘২০১৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে চিঠি লিখে সেদিনের বিরোধী দলনেতা অরুণ জেটলি বলেছিলেন, সোহরাবউদ্দিন হত্যা মামলা-সহ নানা অভিযোগ এনে ইউপিএ সরকার নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ ও অন্যান্য বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে যথেচ্ছভাবে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্হাগুলিকে ব্যবহার করছে। আর তার আট মাস পরেই ক্ষমতায় এসে বিজেপিও একই পথে হাঁটতে শুরু করে। মোদীর আট বছরের রাজত্বে এমন কোনও প্রতিবাদী বিরোধী দল নেই— যাদের নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে বিজেপি কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে লেলিয়ে দেয়নি। বিরোধী মাত্রই দুর্নীতিপরায়ণ, আর ওরা সব ঈশ্বরের সন্তান। তা শিবরাজ সিংহ চৌহান, হিমন্ত বিশ্বশর্মা বা ইয়েদুরাপ্পা যেই হোন না কেন।’’

আজ জয়প্রকাশ নারায়ণকে সামনে রেখে তাঁর দুই প্রাক্তন শিষ্য নীতীশ কুমার ও লালুপ্রসাদকে আক্রমণ শানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সম্প্রতি বিহারে বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে লালুপ্রসাদের আরজেডি ও কংগ্রেসের হাত ধরে সরকার গড়েছেন নীতীশ। আজ বিহারের সারণে জয়প্রকাশ নারায়ণের ১৫ ফুট উঁচু একটি মূর্তি উন্মোচন করেন অমিত শাহ। পরে জনসভায় তিনি বলেন, ‘‘জয়প্রকাশের মূল লড়াই ছিল দুর্নীতিগ্রস্ত কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। অথচ তাঁর দুই শিষ্য নীতীশ ও লালুপ্রসাদ এখন কংগ্রেসের কোলে বসে রয়েছেন। একমাত্র বিজেপিই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছে, আমরাই জয়প্রকাশের আদর্শকে বাস্তবে রূপায়িত করতে পেরেছি।’’ শাহ দাবি করেন, জয়প্রকাশ নারায়ণ সমাজের দুর্বল ও গরিবদের ক্ষমতায়নের উপরে জোর দিয়েছিলেন। অন্ত্যোদয় যোজনার মাধ্যমে প্রতিটি গরিব মানুষে ঘরে বিনামূল্যে খাবার দিয়ে জয়প্রকাশের স্বপ্নকে সফল করতে পেরেছে মোদী সরকার।

গান্ধীহত্যার প্রসঙ্গ তুলে এ দিন অবশ্য পাল্টা অমিতকে ঠুকেছেন নীতীশ কুমারও।

অন্য বিষয়গুলি:

PM Narendra Modi Corruption Rajkot
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy