নির্জোট সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন না নরেন্দ্র মোদী, যাচ্ছেন বেঙ্কাইয়া নায়ডু। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস
ফের নির্জোট (ন্যাম) সম্মেলন এড়াচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর বদলে সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু। মঙ্গলবার রাতের দিকে সরকারের তরফে এ খবর জানানো হয়েছে। এ বছর ২৫ ও ২৬ অক্টোবর এই সম্মেলন বসছে আজারবাইজানের বাকু-তে। পর পর দু’বার মোদীর এই সম্মেলন এড়ানোয় প্রশ্ন উঠেছে, ভারত কি তবে নির্জোট থেকে বহুজোট কূটনীতির দিকে এগোচ্ছে? তবে কি উন্নয়নশীল দেশগুলির সঙ্গে বিদেশনীতিতে ধীরে ধীরে বদল আনতে চলেছে মোদী সরকার?
উন্নত দেশগুলির বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক শোষণ, পেশিশক্তির আস্ফালন, ঔপনিবেশিকতা, বিদ্বেষ-সহ নানা বিষয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার উদ্দেশ্য নিয়ে ১৯৬১ সালে গঠিত হয় নন অ্যালাইনড মুভমেন্ট বা ন্যাম। পাশাপাশি নিজ নিজ দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক ঐক্য গড়ে তোলা এবং মজবুত করাও ছিল এই আন্তর্জাতিক সংগঠন গঠনের উদ্দেশ্য। যদিও বেশ কয়েকটি উন্নত দেশও এই আন্তর্জাতিক সংগঠনের সদস্য। বর্তমানে সদস্য সংখ্যা ১২০।
আরও পড়ুন: চ্যাম্পিয়নরা অত সহজে শেষ হয় না, ধোনি-প্রসঙ্গে নিজের তুলনা টানলেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ
উন্নয়নশীল দেশগুলির কাছে এই সম্মেলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিতান্ত কোনও অঘটন বা দেশে বড় কোনও জরুরি পরিস্থিতি না হলে কোনও দেশের রাষ্ট্রপ্রধান এই সম্মেলন যোগ দেননি, এমন নজির খুবই কম। ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী মোদীই সম্ভবত প্রথম বার সেই রীতি ভাঙেন। ওই বছর ভেনিজুয়েলায় ন্যাম সম্মেলনে যোগ দেননি।
এ বার ইতিমধ্যেই নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি ওলি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন বলে নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু এ বারও যাচ্ছেন না এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী। তার পরিবর্তে যোগ দেবেন বেঙ্কাইয়া নায়ডু। আগের বারও উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি যোগ দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: কলকাতায় বসে মার্কিনিদের প্রতারণা, জালে ১ মহিলা-সহ পাঁচ জনের চক্র
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তবে ন্যামের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা দেশ ভারতের কাছেই তার গুরুত্ব কমছে। কূটনৈতিক শিবিরের একাংশের ব্যাখ্যা, যে সময়ে এবং যে পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক এই সংগঠন গঠিত হয়েছিল, আজ তার আনেকগুলিই অপ্রাসঙ্গিক। বর্তমানে বরং মাথাচাড়া দিয়েছে সন্ত্রাসবাদ। ভারতের কাছে সেই সন্ত্রাসের সমস্যা আরও বড়। কিন্তু ন্যামের মতো সংগঠনের মাধ্যমে সেই সমস্যা দূর করা কার্যত অসম্ভব। আবার রাষ্ট্রপুঞ্জের মতো আন্তর্জাতিক সংগঠনেও ভারতের গুরুত্ব অনেক উপরের দিকে উঠে এসেছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতকে স্থায়ী সদস্য করার উদ্যোগ চলছে। এই পরিস্থিতিতে ন্যামের মতো সম্মেলন স্বাভাবিক ভাবেই ভারতের মতো দেশের কাছে গুরুত্ব হারিয়েছে। কিন্তু তুলনায় বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপের মতো দেশের কাছে তার গুরুত্ব এখনও আগের মতোই রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy