সম্পত্তি কার্ডের সূচনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই
বিহারে বিধানসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। তাই কোনও সরকারি প্রকল্পে তার নাম শামিল করার উপায় আপাতত নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও রবিবার গ্রামের মানুষের হাতে সম্পত্তি-কার্ড তুলে দেওয়ার সরকারি অনুষ্ঠানের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্টে কৌশলে সেই বিহারকেই জড়িয়ে রাখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সৌজন্যে প্রয়াত সমাজবাদী নেতা জয়প্রকাশ নারায়ণের জন্মজয়ন্তী। তার সঙ্গে কৌশলে জুড়ে রাখলেন কার্যত বিপরীত মেরুর চিন্তাধারায় বিশ্বাসী নানাজি দেশমুখের নামও।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বামিত্ব’ প্রকল্পের প্রথম সুবিধাপ্রাপকদের হাতে সম্পত্তি-কার্ড তুলে দেওয়া হচ্ছে এমন দিনে, যা বিহারের সমাজবাদী নেতা জয়প্রকাশ নারায়ণ (যিনি ভারতীয় রাজনীতিতে জে পি নামে কিংবদন্তি) এবং সঙ্ঘের প্রয়াত মরাঠা নেতা নানাজি দেশমুখের জন্মজয়ন্তী। ভারতরত্নে সম্মানিত এই দু’জনই কাজ করেছেন দেশের গ্রাম-গরিব-কৃষকদের জন্য। লড়াই করেছেন দরিদ্র-পীড়িত-দলিত-বঞ্চিতদের অধিকার দখলের লক্ষ্যে। যা দেখে রাজনৈতিক মহলের অনেকের বক্তব্য, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই ছাড়া জেপি এবং নানাজির রাজনৈতিক বিশ্বাসের মধ্যে মিল সে ভাবে নেই বললেই চলে। কিন্তু এ দিন জেপি-র দেশব্যাপী সামাজিক আন্দোলনের সঙ্গে কৌশলে জুড়ে দিয়েছেন সঙ্ঘের নানাজিকে।
প্রকল্প পরিচিতি
প্রকল্পের নাম: স্বামিত্ব
বিষয়বস্তু: গ্রামের বাসিন্দাদের বাড়ি ও সংলগ্ন জমির অধিকার সংক্রান্ত নথি (কার্ড) রাজ্যের সহায়তায় তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া। এক-এক রাজ্যে এই সম্পত্তি-কার্ডের নাম ও চেহারা এক-এক রকম। কিন্তু আদতে আধার কার্ডের ধাঁচে তৈরি এই নথিতে থাকবে সম্পত্তির সুনির্দিষ্ট সীমানা ও বিবরণ।
প্রকল্পের উদ্বোধন: গত ২৪ এপ্রিল। জাতীয় পঞ্চায়েতিরাজ দিবসে।
রবিবারের অনুষ্ঠানে: কার্ড তুলে দেওয়া হল পাইলট প্রকল্পে শামিল ৬টি রাজ্যের (উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড ও কর্নাটক) ৭৬৩টি জেলার অন্তত এক লক্ষ জনের হাতে।
সামনে লক্ষ্য: ২০২৪ সালের মধ্যে দেশের প্রায় সমস্ত গ্রামে প্রত্যেক পরিবারের দরজায় এই সুবিধা পৌঁছে দেওয়া।
ড্রোন প্রযুক্তি: প্রকল্পে সম্পত্তির সীমানা নির্ধারণ থেকে শুরু করে পুরো গ্রামের ডিজিটাল মানচিত্র তৈরি হচ্ছে ড্রোনের সহায়তায়। কেন্দ্রের দাবি, এই পদ্ধতি তাই নিরপেক্ষ।
প্রধানমন্ত্রীর দাবি: প্রযুক্তিনির্ভর এই পদ্ধতিতে ঘুষ খাওয়ার সুযোগ নেই। এই কার্ড সবার হাতে এলে, সম্পত্তিজনিত বিবাদ কমবে। সরকারি সিলমোহর থাকায় কঠিন হবে কারও বাড়ি বা জমি দখল করা। আইনি অধিকারের কাগজ থাকায়, তা বন্ধক রেখে ধার নেওয়া যাবে ব্যাঙ্কের কাছে। সহজ হবে সম্পত্তি বেচা-কেনা। গ্রামের মানচিত্র আগাম তৈরি থাকলে, স্কুল-রাস্তা-সাঁকো ইত্যাদি তৈরির জন্য জমি বাছাইও করা যাবে চট করে।
বিহারে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার আগে ওই রাজ্যের জন্য প্রকল্প ঘোষণার প্রতি অনুষ্ঠানে জয়প্রকাশের কথা তুলতেন মোদী। এ দিনও শুরুতেই জেপিকে শ্রদ্ধা জানান তিনি। তার সঙ্গেই জুড়েছেন নানাজির নাম। অনুষ্ঠানে বলেছেন, “দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং গ্রাম-গরিবের জন্য আজীবন লড়েছেন জয়প্রকাশ ও নানাজি। এই আদর্শ থেকে যে বিপ্লবের ডাক জেপি দিয়েছিলেন, তার আওয়াজ উঠেছিল বিহারের মাটি থেকেই।” জয়প্রকাশের নামের সুতোয় বিহার ভোটের প্রচারের ঘুড়ি এই অনুষ্ঠানেও ওড়ালেন মোদী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy