Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in India

টিকার পরে সংক্রমণ নগণ্য, কম কামড়ও

স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণের দাবি, এখনও পর্যন্ত আইসিএমআর ও ভারত বায়োটেকের তৈরি প্রতিষেধক কোভ্যাক্সিন নিয়েছেন ১.১ কোটি জন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অনমিত্র সেনগুপ্ত
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২১ ০৭:১১
Share: Save:

প্রতিষেধক নেওয়ার পরেও তো সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা ঘটছে। তবে আর টিকা নিয়ে লাভ কী? জনমানসের একাংশে গেঁড়ে বসা এই ধারণাকে উপড়ে ফেলতে এ বার পরিসংখ্যান দিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। তা অনুযায়ী, প্রতিষেধক নেওয়ার পরে সংক্রমণের হার যেমন অনেক কম, তেমনই বেশি আক্রান্ত হলেও রোগের বাড়াবাড়ি না-হওয়ার সম্ভাবনা।

স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণের দাবি, এখনও পর্যন্ত আইসিএমআর ও ভারত বায়োটেকের তৈরি প্রতিষেধক কোভ্যাক্সিন নিয়েছেন ১.১ কোটি জন। তাঁদের মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার পরেও সংক্রমণের হার ০.০৪%। অর্থাৎ, প্রতি ১০ হাজার জনে ৪ জন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার তৈরি কোভিশিল্ড দেওয়া হয়েছে প্রায় ১১.৬ কোটি জনকে। সে ক্ষেত্রে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার পরে সংক্রমিতের সংখ্যা প্রতি দশ হাজার যথাক্রমে মাত্র ২ ও ৩।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনও প্রতিষেধকই ১০০% কার্যকারিতার দাবি করেনি। তাই দু’ডোজ নেওয়ার পরেও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কিন্তু সাধারণত তখন রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন পড়ে না। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাও চট করে হয় না। এক কথায়, জীবন নিয়ে টানাটানি না-হওয়ারই কথা।

প্রতি ১০ হাজার জনে মাত্র ৪ জনের সংক্রমিত হওয়ার অর্থ: ৯,৯৯৬ জনের আর তা না-হওয়া। অর্থাৎ, সম্ভাবনার পাল্লা সে দিকে অনেক বেশি ভারী। আর ঠিক এই কারণেই সকলে প্রতিষেধক নিতে থাকলে, তবেই সংক্রমণের শৃঙ্খল ভেঙে কোভিড-জয় সম্ভব বলে চিকিৎসকদের দাবি। আইসিএমআরের এপিডেমিয়োলজি অ্যান্ড কমিউনিকেবল ডিজ়িজ শাখার প্রধান সমীরণ পাণ্ডার মতে, প্রতিষেধক নেওয়ার পরেও আক্রান্ত হলে, সাধারণত শরীরে মৃদু উপসর্গ দেখা দেয়। চট করে জীবন সংশয় হয় না।

মন্ত্রকের পরিসংখ্যান, প্রতিদিন সংক্রমিতদের ১৫ শতাংশকে শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে হাসপাতালে ভর্তি করতে হচ্ছে। টিকাকরণ বাড়লে, সেই অনুপাত কমবে। তবে টিকা ঘিরে অনীহা নতুন নয়। সমীরণের বক্তব্য, ৭০ ও ৮০-র দশকে ব্রিটেনে হুপিং কাশির প্রতিষেধক নেওয়ায় অনীহা ছিল। ৯০-এর দশকে হাম-এ। ভারতে পোলিয়োর টিকার বিষয়ে একাংশের মনে ভীতি ও বিভ্রান্তিতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে সরকারকে। এই ডিজিটাল যুগে এক-দু’টি ঘটনার ভাইরাল হওয়া এবং অপপ্রচার এই সমস্যাকে আরও বাড়িয়েছে বলে তাঁর অভিমত।

১ মে থেকে ১৮ বছর ও তার বেশি বয়সি সকলের জন্য প্রতিষেধক নেওয়ার দরজা খুলে দিয়েছে কেন্দ্র। এরই মধ্যে আজ ‘সুখবর’ দিয়েছে আইসিএমআর। টুইটে দাবি, এ দেশে করোনাভাইরাসের যে তিনটি নতুন স্ট্রেন (ব্রিটেন, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকা স্ট্রেন) পাওয়া গিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে কোভ্যাক্সিন। এমনকি যে নতুন ডাবল মিউটেন্ট স্ট্রেন মিলেছে, সেটির বিরুদ্ধেও তা কার্যকর। ব্রিটেনে এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কোভিশিল্ড দক্ষিণ আফ্রিকা স্ট্রেনের বিরুদ্ধে কার্যকর নয়। এই পরিস্থিতিতে এই দাবি তাৎপর্যপূর্ণ। করোনাভাইরাসের একটি স্পাইক প্রোটিনের উপরে নির্ভর করে কোভিশিল্ড তৈরি হয়েছিল। বিজ্ঞানীদের একাংশের মতে, সেই স্পাইক প্রোটিনের চরিত্র পরিবর্তন হওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা স্ট্রেনের ক্ষেত্রে কার্যকর হচ্ছে না কোভিশিল্ড। কিন্তু কোভ্যাক্সিন পুরো একটি মৃত ভাইরাসকে ঘিরে টিকা তৈরি করায় চরিত্র বদলানো স্ট্রেনেও তা কার্যকরী বলে দাবি।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in India Ministry of Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy