Advertisement
২০ জানুয়ারি ২০২৫
World Book Fair

দিল্লি বিশ্ব বইমেলায় বাংলার স্টলে উৎসাহীদের ভিড়

‘শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা?’ জাঁকিয়ে পড়া শীত ও তার দোসর মাঝেমধ্যে হওয়া একপশলা বৃষ্টি শহরের শরীরে যতই ব্যাঙের রক্ত ঢুকিয়ে দিক, আপাতত শহর এখন শীতঘুমে নেই। রাজধানীর যাবতীয় মেলা ও প্রদর্শনীস্থল প্রগতি ময়দানে আয়োজিত হয়েছে বিশ্ব বইমেলা। শহরের সমস্ত ভিড় যেন উপচে পড়েছে প্রগতি ময়দানে।

বিশ্ব বই মেলা, দিল্লি, নিজস্ব চিত্র

বিশ্ব বই মেলা, দিল্লি, নিজস্ব চিত্র

রিমি মুৎসুদ্দি
শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৭ ১৬:২৯
Share: Save:

‘শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা?’ জাঁকিয়ে পড়া শীত ও তার দোসর মাঝেমধ্যে হওয়া একপশলা বৃষ্টি শহরের শরীরে যতই ব্যাঙের রক্ত ঢুকিয়ে দিক, আপাতত শহর এখন শীতঘুমে নেই। রাজধানীর যাবতীয় মেলা ও প্রদর্শনীস্থল প্রগতি ময়দানে আয়োজিত হয়েছে বিশ্ব বইমেলা। শহরের সমস্ত ভিড় যেন উপচে পড়েছে প্রগতি ময়দানে।

‘মানুষী-সাহিত্যের ভুবনে ভারতীয় নারী’, এই হল এ বছর বিশ্ব বইমেলার থিম। ‘‘ভারতীয় সাহিত্যে নারী লেখকেরা এক অনন্য স্থান অধিকার করেছেন। এক মহিলা লেখকের লেখায় নারীজীবনের খুঁটিনাটি চিত্রনাট্য, পাওয়া- না পাওয়া, আশা-নিরাশা অনেক পরিষ্কার ভাবে ফুটে ওঠে।” কেন্দ্রীয় উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী মহেন্দ্রনাথ পাণ্ডে বিশ্ব বইমেলা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বললেন। অনুষ্ঠানের আয়োজক ন্যাশনাল বুক ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া।

থিম প্যাভিলিয়ন জুড়ে বিভিন্ন ভারতীয় ভাষার প্রায় ৬০০ মহিলা লেখকের বই প্রদর্শিত হয়েছিল। এ ছাড়াও ইতিহাসের পাতায় যে সমস্ত নারী শুধু সাহিত্যেই নয়, সমাজ সংস্কার, দর্শন, বিজ্ঞান ও অন্যান্য ক্ষেত্রে অবদান রেখে গিয়েছেন, ছবির মধ্য দিয়ে তাঁদের কথা বর্ণনা করা আছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বক্তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ স্লোগানের জয়ধ্বনি ঘোষিত হয়েছিল। জ্ঞানপীঠ পুরস্কারপ্রাপ্ত ওড়িয়া সাহিত্যের লেখক প্রতিভা রে ছিলেন ওই দিনের ‘গেস্ট অফ অনার’। ভারতীয় সাহিত্যে অনুবাদের ভূমিকা বিষয়ে তিনি দীর্ঘ বক্তৃতা দেন। তাঁর কথায়: “ভারতীয় সাহিত্য অনুবাদের, বিশেষত ইংরেজি অনুবাদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ুক আন্তর্জাতিক স্তরে। নতুন যাঁরা লিখতে আসছেন, তাঁরা এই বিষয়টায় কাজ করতে পারেন।”

আরও পড়ুন- সত্রীয়া নাচ শিখছে স্পেনও

আড়াই হাজারেরও বেশি স্টল জুড়ে হিন্দি, ইংরেজি ও প্রায় ২০টি আঞ্চলিক ভাষার বই সাজানো রয়েছে। পেঙ্গুয়িন, হ্যাচেট, স্কোলাস্টিকের পাশাপাশি দরিয়াগঞ্জের বইবাজারের বিক্রেতাদের স্টলগুলিতেও ভিড় উপচে পড়ছে। তবে এ বছর আঞ্চলিক ও ছোট পাবলিশারদের স্টলে বিক্রিবাটায় একটু ভাটার টান। ক্যাশলেস অর্থনীতিতে শহরের মানুষ কিছুটা মানিয়ে নিলেও প্রযুক্তিগত অসুবিধার জন্য বেশির ভাগ বিক্রেতাই নগদে বই বিক্রি করছেন। এর ফলে ইচ্ছে থাকলেও ক্রেতাদের বড় পাবলিশিং হাউস অর্থাৎ সেই হোয়াইট কলার পাবলিশার্সদের থেকেই ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড অথবা পেটিএম ব্যবহার করে বই কিনতে হচ্ছে। ই-বিক্রেতাদের সঙ্গে টক্কর দিতে প্রত্যেক পাবলিশিং হাউস বইয়ের দামে দেদার ছাড় দিচ্ছে। এর ফলে বইপ্রেমীদের উৎসাহ দ্বিগুণ হয়েছে।

বাংলা থেকে দিল্লি বইমেলায় যোগ দিতে প্রায় ১০টি প্রকাশনী সংস্থা এসেছে। এদের মধ্যে পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ড থেকে শুরু করে কিছু লিটল ম্যাগাজিনও উপস্থিত রয়েছে। ত্রিপুরা থেকে বাংলা বইয়ের সম্ভার নিয়ে বইমেলায় এসেছে ত্রিপুরা পাবলিশার্স গিল্ড। উৎসাহী বাঙালি পাঠকের ভিড়ও লক্ষ্য করার মতো। “এখন তো নানা ই-বিক্রেতার সৌজন্যে বাড়িতে বসেই যে কোনও বই পাওয়া যায়। তবু প্রবাসে বইমেলায় আসতে, বিশেষত বাংলা বইয়ের স্টলে আসতে সব সময়েই ভাল লাগে।” জানালেন গুরগাঁও থেকে আসা এক আইটি কর্মী দেবস্মিতা চক্রবর্তী। সিআর পার্কের বাসিন্দা অনিরুদ্ধ ঘোষাল আবার বেশ কিছুটা নস্ট্যালজিক। “কলকাতা বইমেলায় যাওয়া হয় না প্রায় দশ বছর। এই ওয়ার্ল্ড বুক ফেয়ারেই বাংলা বইয়ের স্টলগুলোতে এলে দুধের সাধ ঘোলে মেটে।”

বইমেলায় ভিড় করা জনতার উচ্ছ্বাস ছাপিয়ে চোখে পড়ে বিক্রেতাদের দীর্ঘশ্বাস। বলা বাহুল্য, ইচ্ছে থাকলেও ক্রেতারা নগদে মন খুলে বই কিনতে পারছেন না। “প্রত্যেক বারই আসি, এই বছরেও এসেছি। তবে লাভের আশা দেখছি না।” হতাশা ঝরে পড়ছিল পশ্চিমবঙ্গ প্রকাশক সভার এক কর্মী অনিমেষ চক্রবর্তীর কথায়।

আরও পড়ুন- পাহাড় কেটে নিজের রাস্তা নিজেই বানালেন কেরলের পঙ্গু ‘বোকাবুড়ো’

অন্য বিষয়গুলি:

World Book Fair Delhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy