ফাইল চিত্র।
পূর্ব লাদাখের সীমান্ত থেকে চিনা সেনারা সত্যিই ফিরে যাচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় যেতে চাইল প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। তবে বর্তমানে সীমান্তের যা পরিস্থিতি, তাতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় কমিটির সদস্যরা যেতে পারবেন কি না, সেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্র। এবং সেই সিদ্ধান্তে সায় দেওয়া নিয়ে কেন্দ্র বেশ দ্বিধায় বলেই জানাচ্ছে একাধিক সূত্র।
প্রায় ১১ মাস ধরে লাদাখ সীমান্তে ভারত-চিন সেনা পরস্পরের দিকে চোখে চোখ রেখে দাঁড়িয়ে থাকার পরে সদ্য দু’দিন হল সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে দু’দেশ। প্রথম ধাক্কায় ট্যাঙ্ক ও ভারী অস্ত্রশস্ত্র পিছিয়ে নেওয়া শুরু করেছে উভয় পক্ষ। তবে পদাতিক বাহিনী এখনও মোতায়েন রয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের দাবি অনুযায়ী, প্যাংগং লেকের উত্তরে ফিঙ্গার তিন ও ফিঙ্গার আটের মধ্যে বাফার জোন তৈরি হবে। চিন সেনা ফিঙ্গার ফাইভ থেকে ফিঙ্গার আটে ফিরে যাবে। চিন সত্যিই সেনা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে কি না, তা দেখতেই পূর্ব লাদাখের সীমান্তে যেতে চায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। ওই কমিটির চেয়ারম্যান হলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা জুয়েল ওরাম। তিরিশ সদস্যের ওই কমিটিতে রয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীও। ওই কমিটির সদস্যরা যে হেতু প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় যেতে চান, তাই তাঁদের কেন্দ্রের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। একে সীমান্তের পরিস্থিতি এখনও উত্তপ্ত, তায় কমিটিতে রাহুল গাঁধীর উপস্থিতি— ফলে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সফর করার প্রশ্নে কেন্দ্র কতটা সায় দেবে, তা নিয়ে গোড়া থেকেই প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে।
লাদাখে যখন বরফ গলার ইঙ্গিত, তখন চলতি সমস্যার জন্য বেজিং-এর মনোভাবকেই দায়ী করেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নরবণে। গতকাল একটি সম্মেলনে তিনি চিনের সম্প্রসারণবাদী মনোভাবের সমালোচনা করে বলেন, দুর্বল দেশগুলি যাতে তাদের উপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে, সেটিই অন্যতম লক্ষ্য বেজিং-এর। তিনি চিনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্পের সমালোচনা করে বলেন, বিভিন্ন দেশের মধ্যে দিয়ে যাওয়া ওই প্রকল্প এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে চিনা সংস্থাগুলিই কেবল এর লাভ ঘরে তুলতে পারে।
চিনের প্রভাব রুখতে দেশের উত্তর-পূর্বে ও আসিয়ান দেশগুলির মধ্যে আঞ্চলিক ও অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ বাড়ানোর উপরেও জোর দিয়েছেন সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়ানোর প্রশ্নে সময়ে প্রতিশ্রুতি রূপায়ণে ব্যর্থ হওয়া আমাদের সুযোগ কেড়ে নিচ্ছে। ভারতীয় বিনিয়োগে হওয়া মায়ানমারের কালাদান মাল্টি মোডাল যোগাযোগ ব্যবস্থা কিংবা ভারত-মায়ানমার ও তাইল্যান্ডের মধ্যে তিন দেশীয় সড়ক নির্মাণের কাজ দেরিতে হওয়ায় সময় ও খরচ দুই বেড়ে যাচ্ছে বলেই মত তাঁর। কার্যত একই সুরে চিনের বিরুদ্ধে ওই আলোচনা চক্রে সুর চড়িয়েছেন প্রাক্তন লেফটেন্যান্ট জেনারেল বিনোদ ভাটিয়া। তাঁর বক্তব্য, ভারতের সীমান্তে চিনের আগ্রাসন ও প্রতিবেশী দেশগুলিতে চিনের বিনিয়োগের পিছনে অন্যতম কারণ হল উপমহাদেশে ভারতের নেতৃত্ব দেওয়াকে রোখা। সেই কারণে ভারতকে ঘিরে থাকা প্রতিটি দেশে বিনিয়োগ করতে তৎপর হয়েছে বেজিং।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy