বায়ুসেনার আধিকারিকদের মৃত্যুর পর সরকারি সম্মাননা এবং সুবিধা সংক্রান্ত নীতিতে বদলের আর্জি জানালেন নিহত এক স্কোয়াড্রন লিডারের বাবা-মা। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে প্রশিক্ষণের সময়ে একটি বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় বায়ুসেনার স্কোয়াড্রন লিডার অভিমন্যু রাইয়ের। তাঁর অভিভাবকদের বক্তব্য, সন্তানের মৃত্যুর পরে সরকারি সম্মাননা এবং সুবিধা তাঁর স্ত্রীকেই দেওয়া হয়েছে। অভিমন্যু ছিলেন তাঁদের একমাত্র সন্তান। কিন্তু সন্তানহারা দম্পতিকে সমবেদনা জানাতেও কোনও শব্দ ব্যবহার হয়নি বলে দাবি বাবা-মায়ের। তাই এই সরকারি নীতিতে পরিবর্তনের দাবি তুলেছেন দম্পতি। তাঁরা মনে করছেন, এই ধরনের ক্ষেত্রে বায়ুসেনা আধিকারিকদের স্ত্রীর পাশাপাশি তাঁদের বাবা-মায়ের সুবিধা পাওয়া উচিত।
মৃত ওই বায়ুসেনার বাবা অমিতাভ রাই-ও একজন অবসরপ্রাপ্ত গ্রুপ ক্যাপ্টেন। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে তিনি জানান, দুর্ঘটনায় সন্তানের মৃত্যুর পর থেকে প্রায় দেড় বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বা প্রতিরক্ষামন্ত্রীর থেকে তিনি কোনও শোকবার্তা পাননি। অভিমন্যুর মা চিত্রলেখা জানিয়েছেন, বায়ুসেনার মৃত আধিকারিকদের এমন অন্তত ১২টি পরিবারকে তিনি চেনেন, যেখানে কেবল স্ত্রীই সরকারি সুবিধা পেয়েছেন। তাঁদের দাবি, অনেক সময়েই মৃত বায়ুসেনা আধিকারিকের স্ত্রীরা শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। কখনও আবার শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে যান। কখনও কখনও প্রয়াত স্বামীর পৈতৃক সম্পত্তির অংশ পেতে আদালতে মামলা পর্যন্ত করা হয়। দম্পতির প্রশ্ন, মৃতের স্ত্রীকে ‘বীর নারী’ সম্মান দেওয়া হলে, যিনি তাঁকে জন্ম দিয়েছেন, তাঁকে কেন সম্মান দেওয়া হবে না?
আরও পড়ুন:
এক দিকে যখন এই দাবি উঠছে, তখন আবার অন্য ধরনের একটি ছবিও ধরা পড়েছে দিন কয়েক আগে। সম্প্রতি গুজরাতের জামনগরে বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট সিদ্ধার্থ যাদব। দুর্ঘটনার মাত্র ১০ দিন আগেই বাগদান হয়েছিল তাঁর। সিদ্ধার্থের বাগদত্তা সানিয়ার কান্নার একটি ভিডিয়ো (যদিও ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম) প্রকাশ্যে এসেছে। শেষকৃত্যে আত্মীয়স্বজনের সামনেই কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় তরুণী। সেই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমেও। তাতেই দেখা যাচ্ছে, সিদ্ধার্থের দেহের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন সানিয়া। কখনও পাগলের মতো কাঁদছেন, বিলাপও করছেন। কখনও শেষ বারের মতো আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছেন তাঁকে। ভিডিয়োয় কাঁদতে কাঁদতে সানিয়া বলছেন, ‘‘আমাকে এক বার ওর মুখ দেখতে দাও। তুমি কেন আমাকে নিয়ে গেলে না? তুমি তো আমাকে কথা দিয়েছিলে।”