এসসিও বৈঠকে যোগ দেবেন মোদীকে লাদেনের সঙ্গে তুলনা করা পাক বিদেশমন্ত্রী বিলাবল ভুট্টো জারদারি। ফাইল চিত্র।
মে মাসেই ভারতে আসতে চলেছেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী তথা পাকিস্তানের প্রয়াত রাষ্ট্রপ্রধান বেনজির ভুট্টোর পুত্র বিলাবল ভুট্টো জারদারি। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, গোয়ায় অনুষ্ঠিত শাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)-এর বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বিলাবলের নেতৃত্বেই পাকিস্তানের একটি প্রতিনিধিদল উপস্থিত থাকবে। পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মুমতাজ জারাহ বালোচ সাপ্তাহিক সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়েই পড়শি দেশে যাচ্ছেন বিলাবল। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শপথে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। তার পর বিগত ৯ বছরে আর কোনও পাকিস্তানি রাষ্ট্রপ্রধান কিংবা শীর্ষ নেতৃত্ব ভারত সফরে আসেননি।
আগামী ৪ থেকে ৫ মে গোয়ায় এসসিও বৈঠকের আসর বসতে চলেছে। রাশিয়া, চিন, পাকিস্তান, ভারতকে নিয়ে গঠিত এসসিও নিরাপত্তাগত দিক থেকে এবং রাজনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি গোষ্ঠী। ২০১৭ সালে ভারত এই গোষ্ঠীর পূর্ণ সদস্য হয়। এই গোষ্ঠীর পর্যবেক্ষক সদস্য দেশগুলি হল আফগানিস্তান, বেলারুস, ইরান এবং মঙ্গোলিয়া। এ ছাড়াও অন্যতম সহযোগী সদস্য হিসাবে রয়েছে আর্মেনিয়া, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, তুরস্ক, কম্বোডিয়া। আঞ্চলিক অথচ ভূরাজনীতির অন্যতম নিয়ন্ত্রক হিসাবে এই গোষ্ঠী সদস্য দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সামরিক বোঝাপড়া বাড়াতে কাজ করে।
পাকিস্তানের তরফে বিলাবলের সফর প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, এসসিও গোষ্ঠীর প্রতি তাদের দায়বদ্ধতার কথা মাথায় রেখেই তারা এই বৈঠকে যোগদান করবে। প্রসঙ্গত, এই বিলাবলই গত ডিসেম্বরে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে যোগ দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘ওসামা বিন লাদেন নিহত হয়েছেন। কিন্তু গুজরাতের কসাই এখনও জীবিত। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।’’ ১৬ ডিসেম্বর, বাংলাদেশ যুদ্ধে ভারতীয় সেনার নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনীর বিজয় দিবসে আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে পাক বিদেশমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের পরেই চড়ে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ।
বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে পাক বিদেশমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়, বিলাবলের দাদু জুলফিকর আলি ভুট্টোর প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়ই পাক সেনা ধর্ষণ, হত্যালীলা চালিয়েছিল পাকিস্তানে। অন্য দিকে, বিলাবলের মন্তব্যের বিরুদ্ধে নয়াদিল্লির পাক দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভও দেখায় বিজেপির যুব মোর্চা। অবশ্য এত কাণ্ডের পরেও নিজের মন্তব্যে অনড় থাকেন বিলাবল। তিনি বলেন, “পাকিস্তানকে ভয় দেখানোর জন্যই যদি এ সব করা হয়ে থাকে, তবে কোনও লাভ হবে না।” তিনি এ-ও বলেন যে, “আমরা মোদীকে ভয় পাই না, আমরা আরএসএসকে ভয় পাই না, আমরা বিজেপিকেও ভয় পাই না।” বিলাবলের মন্তব্যের পরই পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে যে শৈত্য চলছিল, তা আরও দীর্ঘায়িত হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy