ফাইল চিত্র।
অসমে চূড়ান্ত জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা এনআরসি-তে বাদ পড়েছে প্রায় ১৯ লক্ষ মানুষের নাম। সারা অসম বাঙালি যুব ছাত্র ফেডারেশনের দাবি, এর মধ্যে বাঙালি হিন্দুর সংখ্যা ১০ থেকে ১২ লক্ষ। বাঙালি মুসলিম বাদ পড়েছেন দেড় থেকে দু’লক্ষ।
এই ঘটনায় অস্বস্তিতে বিজেপি। কারণ তারা মনে করেছিল, বাদ পড়াদের তালিকায় মূলত সংখ্যালঘুদের নাম থাকবে। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে ঠিক উল্টো। যাঁরা বাদ পড়েছেন, তাঁদের অর্ধেকের বেশি হিন্দু, গোর্খা এবং স্থানীয় আদিবাসী সমাজের লোক। এঁদের নাম এনআরসি থেকে বাদ পড়ার ফলে আগামী দিনে দলের হিন্দু ভোট-ব্যাঙ্ক ধাক্কা খাবে বলে আশঙ্কা করছেন অসমের বিজেপি নেতারা। যদিও পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘‘সরকার নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে হিন্দুদের নাগরিকত্ব দিয়ে দেবে।’’
কিন্তু অসমের কংগ্রেস নেত্রী সুস্মিতা দেবের অভিযোগ, বিজেপি মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। কারণ, ১৯৭১ সালের আগে যারা অসমে এসেছেন, তাঁরা কোনও ভাবেই নাগরিকত্ব আইনের সুবিধে পাবেন না। তাঁর কথায়, ‘‘নাগরিকত্ব বিলে ১৯৭১ সালের পরে যাঁরা ভারতে এসেছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা রয়েছে। তার আগে যাঁরা এসেছেন, তাঁরা ওই সুযোগ পাবেন না।’’
সুস্মিতাদেবীর দাবি, এনআরসি-তে বাদ পড়া বাঙালিদের একটি বড় অংশ হলফনামা দিয়ে জানিয়ে রেখেছেন যে তাঁরা ১৯৭১-র আগে এ দেশে এসেছেন। ফলে তাঁদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত রয়েই গেল। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের রাজনীতি করছে বিজেপি।
এ দিকে, দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ করে এমন ত্রুটিপূর্ণ একটি তালিকা তৈরির পিছনে কারা রয়েছে, তা খুঁজে বার করার জন্য সিবিআই তদন্ত দাবি করেছে সারা অসম বাঙালি যুব ছাত্র ফেডারেশন। কাল দিল্লিতে হওয়া একটি আলোচনাচক্রে সংগঠনের পক্ষ থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়, ফের পরিকল্পিত ভাবে বাঙালিদের অসম ছাড়া করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
সংগঠনের সভাপতি উৎপল সরকার দাবি করেন, ‘‘অতীতে অস্ত্র দেখিয়ে অসম থেকে বাঙালিদের তাড়ানো হয়েছিল। এ বার কাগজে-কলমে নাম না তুলে ফের বাঙালিদের ভিটে থেকে উৎখাত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’’ উৎপলবাবুদের দাবি, কোনও পরিবারের বাবা-মায়ের নাম থাকলেও, ছেলের নাম এনআরসি-তে নেই। বাবা-মা ভারতীয় হলেও বলা হয়েছে, ছেলে বিদেশি। বড় ভাইয়ের নাম রয়েছে। ছোটর নেই। কেন, কোনও যুক্তি নেই। উৎপলবাবুর কথায়, ‘‘জনগণের টাকায় বাঙালি তাড়ানোর পিছনে কারা রয়েছে তা সিবিআইয়ের মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হোক।’’ একই সঙ্গে সংগঠনের আশ্বাস, নাম বাদ পড়া বাঙালি পরিবারদের প্রয়োজনে আইনি সাহায্য দেবে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy