পটনার পরে আগামী ১৭ এবং ১৮ জুলাই বেঙ্গালুরুতে বিরোধীদের বৈঠক বসতে চলেছে। বিরোধী নেতৃত্ব জানাচ্ছেন, এখানেই শেষ নয়। চব্বিশের লোকসভা ভোটের আগে বারবার বিরোধী দলের শীর্ষ নেতারা নিজেদের মধ্যে বিজেপিকে হটানোর কৌশল নির্ধারণে বসবেন। কিন্তু শীর্ষ পর্যায়ে বৈঠকের পাশাপাশি সমান্তরাল ভাবে ছোট ছোট মঞ্চে (চার বা পাঁচটি বিরোধী দলের) দ্বিতীয় স্তরের নেতারাও নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন মঞ্চে যোগাযোগ বজায় রেখে চলবেন। আজ জনজাতির অধিকারের জন্য আন্দোলনকারী জেসুইট পাদ্রি স্ট্যান স্বামীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী ছিল তেমনই একটি বিরোধী মঞ্চ। তাঁর স্মরণসভায় ভিডিয়ো মাধ্যমে যোগ দিলেন কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিংহ, তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন, ডিএমকে-র কানিমোজি, সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি, আরজেডি-র মনোজ ঝা-র মতো নেতারা।
মহারাষ্ট্রের তালোজা জেলে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পরে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে স্বামী বম্বে হাই কোর্টের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। কিন্তু জামিনের শুনানির আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। প্রসঙ্গত তাঁর মৃত্যুর পরে কংগ্রেস-সহ একাধিক বিরোধী দল রাষ্ট্রপতির কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করে চিঠি পাঠিয়েছিল। চিঠিতে স্বাক্ষর করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়. ডিএমকে-র এম কে স্ট্যালিন, সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি, জেএমএম-এর হেমন্ত সোরেন, এনসিপি-র শরদ পওয়ার, এনসি-র ফারুক আবদুল্লা প্রমুখ। দাবি করা হয়েছিল, তালোজা জেল থেকে তাঁকে সরানোর বিষয়ে বারবার আবেদন করা হয়েছিল। কারণ সেখানে অতিমারির সংক্রমণ ছড়িয়েছিল। তার পরেও কোনও কথা কানে নেওয়া হয়নি। রাজনৈতিক সূত্রের মতে, স্ট্যান স্বামীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দু’বছর আগেই বিরোধী নেতারা এক ছাতার তলায় এসেছিলেন। ফলে এখন বিষয়টি নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ভিত তখনই তৈরি হয়ে গিয়েছিল।
পাশাপাশি চলছে বিরোধী দলের আসন্ন বেঙ্গালুরু বৈঠকের প্রস্তুতি। তার মাঝে ঘটে গিয়েছে মহারাষ্ট্রের এনসিপি ভাঙনপর্ব। তাৎপর্যের বিষয় এটাই যে পটনার বৈঠকে উপস্থিত এনসিপি-র প্রফুল্ল পটেল গত রবিবার ভোল বদল করে বিজেপির সঙ্গে হাত মেলালেন। তৃণমূলের পক্ষ থেকে পটেলকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে সে দিনই। আজ সেই প্রফুল্লই বিরোধীদের উপহাস করে বলেছেন, “শরদ পওয়ারের সঙ্গে পটনায় বিরোধীদের যৌথ বৈঠকে গিয়েছিলাম। ওখানের কাণ্ড দেখে আমার হাসি আসার জোগাড়। মোট সতেরোটি দল সেখানে হাজির, যাদের মধ্যে সাতটি দলের লোকসভায় মাত্র একটি করে সাংসদ। একটি দলের তো সাংসদই নেই। এই দলগুলি দাবি করছে তারা পরিবর্তন আনবে!”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)