প্রতিবন্ধী অধিকারের মুখ্য কমিশনার কমলেশ পান্ডে ডিসলেক্সিকদের প্রসঙ্গে মোদীর বক্তব্যে আপত্তিকর কিছু দেখছেন না। ছবি: পিটিআই।
ব্যগ্র হয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ডিসলেক্সিক পড়ুয়াদের জন্য নিজের উদ্যোগের কথা শোনাতে চাইছিলেন উত্তরাখণ্ডের এক বিটেক ছাত্রী। ক্লাসে পড়া বুঝতে ও লিখতে মন্থর, কিন্তু প্রখর বুদ্ধিধর, সৃষ্টিশীল ‘ডিসলেক্সিক’ বাচ্চাদের কথা বুঝিয়ে বলছিলেন তিনি।
তাঁর কথা কেড়েই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের নিয়ে রসিকতা শুরু করে দিলেন নরেন্দ্র মোদী। ওই ছাত্রীর পাশে বসা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়ারা তখন হো-হো করে হাসিতে ফেটে পড়ছেন। গোটা ছবিটাই দেশের জন্য অত্যন্ত অস্বস্তিকর বলে মনে করছেন প্রতিবন্ধী তথা বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের অধিকার নিয়ে সক্রিয় সমাজকর্মীরা। তবে প্রতিবন্ধীদের কেন্দ্রীয় কমিশন দাঁড়িয়েছে প্রধানমন্ত্রীর পাশেই।
প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে রবিবারেই দাবি জানিয়েছিল গোটা দেশে বিস্তৃত ‘ন্যাশনাল প্ল্যাটফর্ম ফর দ্য রাইটস অব দ্য ডিসএবেল্ড’ (এনপিআরডি) মঞ্চ। সোমবার বিভিন্ন রাজ্যে তাদের সহযোগীদের যৌথ বা একক ভাবে প্রতিবাদ-কর্মসূচিতে শামিল হওয়ার ডাক দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিবন্ধী অধিকারের মুখ্য কমিশনার কমলেশ পান্ডে ডিসলেক্সিকদের প্রসঙ্গে মোদীর বক্তব্যে আপত্তিকর কিছু দেখছেন না।
Just came across a video of our @narendramodi taking political potshots using the name of dyslexic people.
— Siddaramaiah (@siddaramaiah) March 4, 2019
Shame on you Modi!!
You just can't go below this. Your insensitivity can't be washed away by dipping in any river. They may be slow in learning but not heartless like you.
আনন্দবাজারের প্রশ্নের জবাবে ই-মেলে তিনি জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী অন্যায় কিছু বলেননি। কারা তাঁর বক্তব্যের লক্ষ্য ছিল, সবাই বুঝেছে।’ মোদীর ওই অনুষ্ঠানের ভিডিয়ো হোয়াটসঅ্যাপ করেও কমলেশ বোঝানোর চেষ্টা করেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দোষ। মোদীর মন্তব্য নিয়ে কিছু বলতে চাননি জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের সভাপতি প্রিয়াঙ্ক কানুনগো।
কয়েক দিন আগে ভাটনগর পুরস্কারের মঞ্চে পাকিস্তানকে খোঁচা দিয়ে মোদীর রসিকতায় হেসেছিলেন বিজ্ঞান জগতের বিশিষ্টজনেরা। এ বার রাহুল গাঁধী-সনিয়া গাঁধীদের নিয়ে রসিকতার জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের সঙ্গে ভিডিয়ো-সম্মেলনের মঞ্চ বেছে নেন মোদী। এ বারেও হাততালি দিয়েছে তরুণ ছাত্রসমাজ। দু’টি ছবি বিশ্লেষণ করে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ জয়রঞ্জন রামের পর্যবেক্ষণ: ‘‘সমাজের বিভিন্ন স্তরেই আমরা কেমন কর্তাভজা হয়ে উঠছি, দলবাজ হয়ে উঠেছি। এটা ভাল লক্ষণ নয়।’’ লোকসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী তথাকথিত অরাজনৈতিক পরিসরেও রাজনীতির গন্ধ আমদানি করছেন দেখেও ব্যথিত সমাজকর্মীরা।
‘‘একেই তো ডিসলেক্সিকদের বিষয়ে সচেতনতা খুবই কম। তার উপরে সেই বিষয়ে আলোচনার সময়ে প্রধানমন্ত্রী রসিকতা করলে পুরো বিষয়টাই খেলো হয়ে যায়,’’ বলছেন ডিসলেক্সিয়ার স্পেশ্যাল এডুকেট লিপিকা ভট্টাচার্য এবং কলকাতার সমাজকর্মী দিব্যা জলান। ২০১৬-র প্রতিবন্ধী অধিকার আইনে স্পষ্ট বলা আছে, জনপরিসরে প্রতিবন্ধীদের কেউ অপমান করলে তাঁর ছ’মাস থেকে পাঁচ বছরের জেল ও জরিমানা হবে। সেই আইন যাতে কার্যকর হয়, তা দেখার কথা কেন্দ্রীয় প্রতিবন্ধী কমিশনের। এনপিআরডি-র সর্বভারতীয় যুগ্ম সম্পাদিকা শম্পা সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে সরকারি কমিশনের ভূমিকা দুর্ভাগ্যজনক।’’
এর আগে বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়ের একটি সভায় এক ব্যক্তিকে মেরে হাতে ক্রাচ ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি নিয়ে বিতর্কেও কমিশন কিছু করেনি। গত লোকসভা ভোটের প্রচারেও মোদী দৃষ্টিহীন, বধির ও পঙ্গুদের প্রতি অপভাষা ব্যবহার করেছিলেন। মোদীকে ‘স্কিৎজ়োফ্রেনিক’ বা ‘দ্বিখণ্ডিত ব্যক্তিত্ব’ বলে কটাক্ষ করেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল। এনপিআরডি-র সভাপতি মুরলীধরনের বিবৃতিতে এই সবই মনে করানো হয়েছে। সমাজকর্মী রত্নাবলী রায়ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় গণস্বাক্ষর-অভিযানের ডাক দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy