(বাঁ দিকে) রাহুল গান্ধী, উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সাংসদ রামশঙ্কর কাঠেরিয়া (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
মোদী পদবি অবমাননা মামলায় গত ২৩ মার্চ কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে দু’বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল গুজরাতের সুরাতের আদালত। ২৪ মার্চ অর্থাৎ রায় দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করে দিয়েছিল লোকসভার সচিবালয়। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সাংসদ রামশঙ্কর কাঠেরিয়ার ক্ষেত্রে ৪৮ ঘণ্টা পরেও কেন সাংসদ পদ খারিজের মতো ব্যবস্থা হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা।
গত শনিবার আগরার সাংসদ-বিধায়ক আদালত ২০১১ সালের একটি মামলায় এটাওয়ার সাংসদ রামশঙ্করকে দু’বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানার সাজা শোনায়। সোমবার বেলা সওয়া ১টা পর্যন্ত বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপের কথা জানায়নি। এ নিয়ে বিরোধীরা লোকসভার সচিবালয়ের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। লোকসভায় কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরী আনন্দবাজার অনলাইনকে সোমবার বলেন, ‘‘এটাই বিজেপি। রাহুলজির ক্ষেত্রে অতিসক্রিয়তা দেখিয়েছিল লোকসভার সচিবালয়। নিজেদের সাংসদের ক্ষেত্রে সে সব হল না!’’ অধীর আরও বলেন, ‘‘রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ করার ঘটনা ছিল পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। সত্যের জয় হয়েছে।’’ কিন্তু রামশঙ্করের ক্ষেত্রে হল না কেন? আধীর বলেন, ‘‘হয়তো ওরা (পড়ুন) জানে হাই কোর্টে খারিজ হয়ে যাবে, সেই কারণেই করছে না।’’ প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর সোমবার রাহুলের সাংসদ পদ ফিরিয়ে দিয়েছে লোকসভার সচিবালয়। তার পর কংগ্রেসের নেতা সংসদেও গিয়েছেন।
প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ দিগ্বিজয় সিংহও রামশঙ্করের ঘটনায় লোকসভার সচিবালয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এই পক্ষপাত, দল দেখে পৃথক নিয়ম— এই সবই সংসদের গরিমা নষ্ট করছে।’’ তৃণমূলের আইনজীবী-সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভার সচিবালয়ের ‘নিরপেক্ষতা’ নিয়ে প্রশ্ন না তুললেও তিনি বলেছেন, ‘‘রাহুল গান্ধীর ক্ষেত্রে হলে এই (রামশঙ্কর) ক্ষেত্রেও হওয়া উচিত।’’
নিয়ম হল, কোনও মামলায় যদি কোনও সাংসদকে দু’বছরের কারাদণ্ডের সাজা দেয় আদালত, তা হলে তাঁর সাংসদ পজ খারিজ হয়ে যায়। ২০১১ সালে আগরার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে লোকলস্কর নিয়ে ঢুকে সেখানকার কর্মীদের মারধর করার অভিযোগ ছিল রামশঙ্করের বিরুদ্ধে। সেই মামলাতেই গত শনিবার অধুনা বিজেপি সাংসদ রামশঙ্করকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। এখন দেখার, লোকসভার সচিবালয় কবে তাঁর বিষয়ে পদক্ষেপ করে। নাকি তার আগেই উচ্চ আদালতে গিয়ে রেহাই পান রামশঙ্কর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy