প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল ছবি।
এক সপ্তাহ আগেই রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট জানিয়েছে, গোটা বিশ্বের মধ্যে ভারতে অপুষ্টিতে ভোগা মানুষের সংখ্যা সবথেকে বেশি। ভারতে ১৯.৫ কোটি মানুষ অপুষ্টির শিকার। দেশের ৫৫.৬ শতাংশ মানুষের কপালে পুষ্টিকর খাবার জোটে না।
আর আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করলেন, দেশে এখন প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাদ্য রয়েছে। ভারত এখন আন্তর্জাতিক খাদ্য সুরক্ষার সমাধানের খোঁজ করছে।
দিল্লিতে আন্তর্জাতিক কৃষি অর্থনীতিবিদদের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী আজ বলেন, এক সময় ভারতের খাদ্য সুরক্ষা নিয়ে গোটা বিশ্বের চিন্তা ছিল। এখন ভারত বিশ্বের খাদ্য সুরক্ষা, পুষ্টির নিশ্চয়তার সমাধান খুঁজছে। ভারত এখন দুধ, ডাল, মশলা উৎপাদনে প্রথম। খাদ্যশস্য, ফল, আনাজপত্র, তুলো, চিনি ও চা উৎপাদনে দ্বিতীয়। ভারত মিলেট উৎপাদনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে। এই মিলেট, সরকার যার নাম দিয়েছে ‘শ্রী অন্ন’, তা বিশ্বের পুষ্টি সমস্যার সমাধান করে দিতে পারে।
এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই বিরোধীরা মনে করিয়েছেন, মোদী সরকার এখনও দেশের পুষ্টি সমস্যারই সমাধান করতে পারেনি। গত সপ্তাহেই রাষ্ট্রপুঞ্জের এফএও (ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজ়েশন)-এর ‘স্টেট অব ফুড সিকিউরিটি অ্যান্ড নিউট্রিশন ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’ রিপোর্ট জানিয়েছে, ভারতে ১৯.৫ কোটি মানুষ অপুষ্টির শিকার। বিশ্বের আর কোনও দেশে এত অপুষ্টিতে ভোগা মানুষ নেই। দেশের ৫৫.৬ শতাংশ মানুষের ভাগ্যে পুষ্টিকর খাবার জোটে না। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে গড়ে ৫৩.১ শতাংশ মানুষ পুষ্টিকর খাবার পান না। ভারতের ক্ষেত্রে এই হার তার মানে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির গড় হারের চেয়ে বেশি। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে একমাত্র পাকিস্তান এই মাপকাঠিতে ভারতের থেকে খারাপ জায়গায় আছে।
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে বলেন, ‘‘বিশ্বের চার জন অপুষ্টিতে ভোগা মানুষের মধ্যে একজন ভারতীয়। মোদী সরকারের এত বড় বড় দাবি সত্ত্বেও এটা লজ্জার কথা। যখন ইউপিএ সরকার খাদ্য সুরক্ষা আইন পাশ করিয়েছিল, তখন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদী এর বিরোধিতা করেছিলেন। পরে বিজেপি ইউ-টার্ন করে। মোদী সরকার জনগণনা না করার ফলে এখন ১০ কোটি মানুষ বিনামূল্যে রেশ পাচ্ছেন না। নরেন্দ্র মোদী কি এখন রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট নিয়েও প্রশ্ন তুলবেন?”
প্রধানমন্ত্রী নিজে অবশ্য আজ এও বলেছেন, সরকারের যাবতীয় নীতির মূলে রয়েছে কৃষকদের স্বার্থ। তিনি বলেন, কৃষি, জীবন ও খাদ্য নিয়ে ভারতের জ্ঞান হাজার বছরের
পুরনো। দু’হাজার বছর আগে ‘কৃষি পরাশর’ নামে এ দেশে বই লেখা হয়েছিল। এই গ্রন্থ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষআবাদের সামগ্রিক নথি। ভারতের কৃষি ক্ষেত্রে পরিবর্তন অন্য দেশের কাছে শিক্ষণীয়।
কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের অভিযোগ, মোদী সরকার চলতি বছরে ১৯৯টি জেলায় আবহাওয়া দফতরের জেলা কৃষি-আবহাওয়া শাখা বন্ধ করে দিয়েছে। এই শাখাগুলি কৃষকদের জন্য ব্লক স্তরে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিত। বছরে মাত্র ৪৫ কোটি টাকা খরচ হত। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর আপত্তি সত্ত্বেও এই শাখাগুলির বেসরকারিকরণ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy