রাজ্যসভা অচল রাখবেন বিরোধীরা। ফাইল চিত্র।
বারো জন সাংসদের সাসপেনশন সরকার প্রত্যাহার না করলে গোটা শীতকালীন অধিবেশনে রাজ্যসভা অচল রাখবেন বিরোধীরা। মঙ্গলবার সমস্ত বিরোধী দল এই মর্মে একমত হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সংসদে উপস্থিত সমস্ত বিরোধী সাংসদকে গাঁধী মূর্তির সামনে ওই বারো জনের পাশে ধর্না দিতে দেখা যাবে। সব মিলিয়ে সাসপেনশনের বিষয়টিকে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে একটি বড় রাজনৈতিক যুদ্ধের পর্যায়ে নিয়ে যেতে একমত সব বিরোধী নেতাই।
আজ দফায় দফায় রাজ্যসভা মুলতুবি হয়েছে বিরোধীদের হই-হট্টগোল এবং ওয়েলে নেমে স্লোগানের জেরে। বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের বক্তব্য, “যত দিন না সাসপেনশন প্রত্যাহার করা হবে, আমরা রাজ্যসভা চলতে দেব না। আমরা অধিবেশন কক্ষে বিক্ষোভ দেখাব। কিন্তু তার পরেও যদি সরকার গায়ের জোরে অধিবেশন চালাতে চায়, তা হলে আমরাও আন্দোলন বাড়াব।” আগামিকাল থেকেই রাজ্যসভার বিরোধী সাংসদদের ধর্নায় বসার কথা ঘোষণা করেছে কংগ্রেস, শিবসেনা এবং তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে মূল বিষয়টি (সাসপেনশন) যেহেতু অভিন্ন, তাই ধর্নার বিষয়ে তারা সব দলের সঙ্গে সমন্বয় করে চলছে। তারা কংগ্রেসের নেতৃত্বে চলছে না।
খড়্গে আজ বলেছেন, “আমরা বার বার রাজ্যসভার চেয়ারম্যান, মন্ত্রী পীযূষ গয়ালকে এ ব্যাপারে অনুরোধ জানিয়েছি। কিন্তু ওঁরা আমাদের কথা শুনছেন না। সংসদীয় নিয়মের বিরুদ্ধে গিয়ে ওই সাংসদদের সাসপেন্ড করা হয়েছে। প্রথমত, গত অধিবেশনের ঘটনার জেরে এই অধিবেশনে কোনও সাংসদকে সাসপেন্ড করা যায় না। তা ছাড়া সরকার এক লপ্তে একটি প্রস্তাব পাশ করিয়ে বারো জনকে সাসপেন্ড করতে পারে না। প্রত্যেকের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলে, কার কী গাফিলতি জানিয়ে, তাঁদের বক্তব্য শুনে তার পরে প্রস্তাব আনার কথা।” খড়্গের বক্তব্য, রাজ্যসভার চেয়ারম্যান সরকারের চাপে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি না, সেই প্রশ্নও উঠছে।
আজ তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদীয় দলের বৈঠকে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, সবাইকে সাসপেন্ড হওয়া সাংসদদের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে হবে। রাজ্যসভার বাইরে পরিস্থিতি অস্বাভাবিক। ফলে ভিতরে অধিবেশন চলতে দেওয়া যাবে না। প্রশ্ন ওঠে, রাজ্যসভায় সাধারণ মানুষের স্বার্থের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হলে সে ক্ষেত্রে তৃণমূলের ভূমিকা কী হবে? অভিষেকের নির্দেশ, এ ব্যাপারে কোনও ‘ধূসর এলাকা’ নেই। হয় কালো, নয় সাদা। যেহেতু বাইরে দলেরই সাংসদেরা ধর্না দিচ্ছেন, তাই রাজ্যসভায় আংশিক উপস্থিতির প্রশ্নই উঠছে না। দলীয় সূত্রের খবর, রাজ্যসভায় তৃণমূলের এক নতুন সাংসদ অভিযোগ করেন, তিনি অধিবেশনে কথা বলার এবং মতামত প্রকাশের সুযোগ পাচ্ছেন না। অভিষেক তাঁকে জানান, বিষয়টি সুযোগ পাওয়ার নয়। দলের দু’জন সাসপেন্ড হয়েছেন, এখন সবাইকে একই সঙ্গে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
আজও গাঁধী মূর্তির সামনে বিভিন্ন দলের সাংসদদের ধর্না দিতে দেখা যায়। আসেন এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার। তৃণমূলের সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ দোলা সেনের গণসঙ্গীত শুনে তাল দেন পওয়ার, জয়া বচ্চনেরা। ধর্নায় উপস্থিত ছিলেন অভিষেকও। দোলার গানের সঙ্গে সবার তাল দেওয়ার ভিডিয়োটি টুইটারে পোস্ট করে পওয়ার লেখেন, “আজ রাজ্যসভার বারো জন সাসপেন্ড হওয়া সতীর্থের সঙ্গে দেখা করলাম। ওঁরা সংসদ চত্বরে গাঁধী মূর্তির সামনে ধর্না দিচ্ছেন। আমার অকুণ্ঠ সমর্থন জানালাম তাঁদের। সাসপেনশন তুলে নেওয়ার দাবিতে আমরা তাঁদের পাশে রয়েছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy