দেশে প্রতি চারটির মধ্যে একটি শিশু যৌন নির্যাতনের অভিযোগের নেপথ্যে আছে রোম্যান্টিক সম্পর্ক। যেখানে দেখা যায় নির্যাতিতা নাবালিকার সঙ্গে অভিযুক্তের প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক ছিল। আর এই রকম পকসো মামলায় এগিয়ে আছে বাংলা, অসম এবং মহারাষ্ট্র। এমনই জানাচ্ছে ইউনিসেফ-ইন্ডিয়া এবং এনফোল্ড প্রোঅ্যাক্টিভ হেল্থ ট্রাস্টের একটি যৌথ সমীক্ষা। ওই সমীক্ষার কথা তুলে ধরে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি
ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।
সংশ্লিষ্ট সমীক্ষাটি বলছে, পকসো মামলায় এমন প্রণয়ঘটিত সম্পর্কের প্রমাণ মিলেছে তার ৪৬.৬ শতাংশ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে নির্যাতিতার বয়স ১৬ থেকে ১৮ বছর। প্রধান বিচারপতি বলছেন, এই মামলাগুলির বিচারপ্রক্রিয়ায় প্রচণ্ড অসুবিধার মুখোমুখি হতে হয় বিচারপতিদের। তিনি জানান, নাবালক ও নাবালিকার সম্পর্ক এবং সেখান থেকে অপরাধের মামলার তদন্ত এবং বিচার করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে।
২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মোট ৭,০৬৪টি পকসো মামলার রায় হয়েছে। ওই মামলাগুলি ঘেঁটে সমীক্ষক স্বাগতা রাহা এবং শ্রুতি রামকৃষ্ণণ দেখাচ্ছেন, ১,৭১৫টি মামলায় দেখা যাচ্ছে নির্যাতিতা এবং অভিযুক্তের মধ্যে গভীর সম্পর্ক ছিল। ওই মামলার সিংহভাগ হয়েছে তিনটি রাজ্য থেকে— পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র এবং অসম।
আরও পড়ুন:
সমীক্ষাটি প্রকাশিত হয়েছে ১০ ডিসেম্বর। তাতে এ-ও দেখা যাচ্ছে ৮৭.৯ শতাংশ ক্ষেত্রে নির্যাতিতা স্বীকার করে নিয়েছে যে অভিযুক্তের সঙ্গে তার প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক ছিল। আবার বহু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, নাবালিকা সম্পর্কে আছে, এ কথা জানতে পারে জোর করে তার বিয়ে দিয়েছে পরিবার। এবং সেখানে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছে নাবালিকা। সমীক্ষকরা দাবি করেছেন, দেশে ১৮ বছরের কম বয়সি অপ্রাপ্তবয়স্কদের সম্মতিমূলক যৌন কার্যকলাপকে স্বীকৃতি না দিলেও আদালতগুলি এই ধরনের মামলায় নম্র দৃষ্টিভঙ্গি নেয়। সমীক্ষা প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলছেন, ১৮ বছরের কম বয়সিদের জন্য যে কোনও যৌন ক্রিয়াকলাপ অপরাধ। কিন্তু দুই নাবালক-নাবালিকার মধ্যে এমন সম্পর্কের পর যখন মামলা আদালতে পৌঁছয়, তখন তার বিচার করতে গিয়ে যথেষ্ট সমস্যার মুখে পড়তে হয় বিচারকদের।