Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
National News

সিএএ-প্রতিবাদে বিদেশি স্লোগান ‘ওকে বুমার’

সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক মাধ্যমেও দেদার ছড়িয়ে যাচ্ছে মিম: ‘ওকে বুমার’।

ক্লোয়ে সোয়ারব্রিকের কথা থেকেই ভাইরাল হয় ‘ওকে বুমার’।

ক্লোয়ে সোয়ারব্রিকের কথা থেকেই ভাইরাল হয় ‘ওকে বুমার’।

মধুমিতা দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:২২
Share: Save:

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ দেশের সীমায় আটকে নেই। অন্য দেশেও এর বিরুদ্ধে শোনা যাচ্ছে স্বর। সিএএ-র বিরুদ্ধে আন্দোলনে এ বার হাতিয়ার হয়ে উঠল বিদেশের একটি ধ্বনি: ‘ওকে বুমার’।

গত নভেম্বর থেকে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়া এই শব্দবন্ধ এখন ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করতে গিয়ে ব্যবহার করছেন অনেকে। সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক মাধ্যমেও দেদার ছড়িয়ে যাচ্ছে মিম: ‘ওকে বুমার’।

নিউজ়িল্যান্ডের ২৫ বছর বয়সি এমপি ক্লোয়ে সোয়ারব্রিক জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে নভেম্বরের প্রথমে সে-দেশের পার্লামেন্টে বক্তৃতা দেন। টড মুলার নামে অন্য এক এমপি সেই সময় সোয়ারব্রিককে প্রশ্ন করতে যান। বক্তৃতার মধ্যেই বর্ষীয়ান মুলারের উদ্দেশে সোয়ারব্রিক বলে ওঠেন, ‘‘ওকে বুমার।’’ তার পর থেকেই বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ‘ওকে বুমার’ ভাইরাল হয়ে যায়। নভেম্বরের শেষ দিকে আমেরিকায় দুই ‘আইভি লিগ বিশ্ববিদ্যালয়’ হার্ভার্ড এবং ইয়েল-এর মধ্যে ফুটবল ম্যাচ ছিল। ম্যাচের বিরতির সময় পড়ুয়া এবং প্রাক্তনীদের একাংশ দাবি জানাতে থাকেন, এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে ফসিল ফুয়েল কোম্পানিগুলির টাকা নেওয়া চলবে না। সেই বিক্ষোভে স্লোগান ওঠে ‘ওকে বুমার’। তার পরে ভারতেও ছড়িয়ে পড়ে এই ধ্বনি। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় এখন সামাজিক মাধ্যমে খুবই চল এই শব্দবন্ধের।

মূলত বয়স্কদের কটাক্ষ করতে ‘বুমার’ শব্দটি ব্যবহার করে থাকে পরবর্তী প্রজন্ম। ‘বুমার’ বলতে বোঝানো হয় তাঁদের, যাঁরা ১৯৪৬ সাল থেকে ১৯৬৪ সালের মধ্যে জন্মেছেন। ‘জেনারেশন এক্স’ হলেন তাঁরা, যাঁরা ১৯৬৫ থেকে ১৯৭৯ সালের মধ্যে ভূমিষ্ঠ হয়েছেন। ১৯৮০ থেকে নব্বইয়ের মাঝামাঝি জন্ম হলে ‘মিলেনিয়ালস’। ‘জেনারেশন জ়েড’ ধরা হয় তাঁদের, যাঁরা জন্মেছেন ১৯৯৫ এবং ২০১৫ সালের মধ্যে।

আরও পড়ুন: যোগীর রাজ্যে এক টুকরো ‘শাহিনবাগ’

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন-বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভাবে যুক্ত আছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের কাজরী মজুমদার। কাজরী অবশ্য মনে করেন, ‘ওকে বুমার’ বলে কারও বক্তব্য নস্যাৎ করার থেকে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করা প্রয়োজন। ‘‘কঠোর মনোভাবের বিজেপি হলে হয়তো বোঝানো যায় না। কিন্তু আলোচনা সব সময় দরকার,’’ বলছেন কাজরী। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্বের শিক্ষক অভিজিৎ কুণ্ডুর মতে, অন্যের মতামত ভুল, তাঁকে নস্যাৎ করা প্রয়োজন— এই মনোভাব ভাল। কিন্তু এর মধ্যে রয়েছে আলোচনার পরিসর রুদ্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা। তিনি বলেন, ‘‘এখন দেশে এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যুবসমাজ হয়তো কিছুটা অসহিষ্ণু হয়ে পড়ছে।’’ দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী সায়ন্তনী মুখোপাধ্যায়ের মতে, ‘ওকে বুমার’ বলে ঠিক কারও বয়স তুলে অপমান করা হচ্ছে না। যেটা করা হচ্ছে, সেটা তাঁর পুরনো মানসিকতার বিরোধিতা। খুবই পুরনো চিন্তাভাবনা, যা আজকের পরিস্থিতির সঙ্গে মোটেই খাপ খায় না, তারই বিরোধিতা। ‘‘কেউ কেউ এতটাই পিছিয়ে পড়া কথাবার্তা বলছেন যে, তাঁর সঙ্গে আর কথাই বাড়ানো যায় না। তাই ওকে বুমার বলে কথা শেষ করে দেওয়াই ভাল মনে হচ্ছে,’’ বলেন সায়ন্তনী।

অন্য বিষয়গুলি:

Chloe Swarbrick New Zealand OK boomer CAA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy