ফাইল চিত্র।
সিএএ-এনআরসি নিয়ে তীব্র প্রতিবাদের জেরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, ‘‘এনআরসি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’’ সিএএ, এনপিআর-এর পরে গোটা দেশে এনআরসি হবে বলে হুঙ্কার দিয়েও পিছু হটেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আজ সরকার সুপ্রিম কোর্টে জানিয়ে দিল, দেশে এনআরসি দরকার।
সিএএ-র বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলার জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকই আজ হলফনামা দিয়ে জানাল, যে কোনও সার্বভৌম রাষ্ট্রে নাগরিকদের জাতীয় পঞ্জি (এনআরসি) একটি জরুরি প্রক্রিয়া। ২০০৩-এ নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে এনআরসি ও জাতীয় নাগরিক পরিচয়পত্র তৈরির প্রক্রিয়া বলে দেওয়া হয়েছে। বহু দেশেই এমন নাগরিক পঞ্জি রয়েছে। আফগানিস্তান, পাকিস্তান, বাংলাদেশেও নাগরিক পরিচয়পত্র দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। কেন্দ্রের স্পষ্ট বক্তব্য, দেশে তিন রকম মানুষ রয়েছেন— নাগরিক, অনুপ্রবেশকারী ও বৈধ ভিসায় থাকা বিদেশি। অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে আইন অনুয়ায়ী ব্যবস্থা নেওয়াটা কেন্দ্রের দায়িত্ব।
সিএএ-র বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে ১৪০টির বেশি মামলা হয়েছে। প্রতিটিরই মূল নির্যাস: নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রশ্নে ধর্মের ভিত্তিতে ভেদাভেদ করা হচ্ছে। এই আইন সংবিধান বিরোধী। পাল্টা জবাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে সুপ্রিম কোর্টে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, সিএএ কোনও ভারতীয় নাগরিকের ‘আইনি, গণতান্ত্রিক বা ধর্মনিরপেক্ষ অধিকার’-এ হস্তক্ষেপ করছে না। নির্দিষ্ট কিছু দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের সমস্যার সমাধানে এই আইন করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ করা হয়েছে, সিএএ সংবিধানের ১৪-তম অনুচ্ছেদের বিরোধী। ওই অনুচ্ছেদে বলা রয়েছে, দেশের ভৌগোলিক গণ্ডির মধ্যে ধর্মের ভিত্তিতে ভেদাভেদ করা যাবে না। কিন্তু সিএএ-তে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান থেকে ভারতে আসা মানুষের মধ্যে অ-মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়া হচ্ছে। এটা মুসলিমদের প্রতি বৈষম্য।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সুপ্রিম কোর্টে যুক্তি দিয়েছে, সিএএ আদৌ ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রে আঘাত হানছে না। ১৪-তম অনুচ্ছেদে যুক্তিসঙ্গত শ্রেণি বিভাজনের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিবেশী ওই তিন দেশের তুলনায় ভারত সংবিধান অনুযায়ীই ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। বহু সংখ্যালঘু মানুষ এ দেশের নাগরিক। সিএএ-তে ধর্মের ভিত্তিতে প্রাথমিক শ্রেণি বিভাজন করা হলেও, তা ধর্মনিরপেক্ষ নীতির বিরোধী নয়।
সিএএ-র বিরুদ্ধে আদালতে এই প্রশ্নও তোলা হয়েছে যে, পাকিস্তান-বাংলাদেশ-আফগানিস্তানে আহমদিয়া, শিয়া, হাজারা-রা মুসলিম হলেও সংখ্যালঘু। আবার ইহুদি, বালুচ বা নাস্তিকেরাও সংখ্যালঘু। তাদের জন্য নাগরিকত্বের বন্দোবস্ত নেই সিএএ-তে। কেন্দ্রের যুক্তি, এই সম্প্রদায়গুলির সঙ্গে ধর্মীয় সংখ্যালঘু বলে নির্যাতনের শিকার হওয়া মানুষদের তুলনা চলে না। তা ছাড়া নির্দিষ্ট কোনও সম্প্রদায়কে রাখা না-রাখার বিষয়টি কখনও আদালত বিচার করতে পারে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy