বিরোধী স্বরের কণ্ঠরোধ দেশের অর্থনীতির মারাত্মক ক্ষতি করে দিতে পারে। অসহিষ্ণুতা ইস্যুতে মুখ খুলে মোদী সরকারকে এমনই ধাক্কা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের। নজিরবিহীন কড়া শব্দে বিজেপি-আরএসএসকে এ দিন আক্রমণ করেছেন মোদীর পূর্বসূরি। নাম না করে দেশের শাসক দলকে ‘হিংসাত্মক উগ্রবাদী গোষ্ঠী’ আখ্যা দিয়েছেন তিনি। মনমোহনের এই আক্রমণ সে দিনই এল, যে দিন দিল্লি ইকনমিকস কনক্লেভে মোদী সদর্পে দাবি করলেন, গত ১৭ মাসে অনেক এগিয়েছে দেশের অর্থনীতি।
জওহরলাল নেহরুর ১২৫তম জয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ দিন যোগ দিয়েছিলেন মনমোহন। বিশ্ববরেণ্য এই অর্থনীতিবিদের ভাষণে এ দিন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আর্থিক সমীক্ষক সংস্থা মুডি’জের সুর শোনা গিয়েছে। মুডি’জ গত সপ্তাহেই রিপোর্ট প্রকাশ করে জানিয়েছিল, নরেন্দ্র মোদী তাঁর দলের নেতা-মন্ত্রীদের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের ভাবমূর্তি ধাক্কা খাবে। নষ্ট হবে বিশ্বাসযোগ্যতা। সেই পরিস্থিতি তৈরি হলে ভারতীয় অর্থনীতিতে তার গভীর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, বলেছিল মুডি’জ অ্যানালিসিস। তার কয়েক দিনের মধ্যেই আর এক আর এক অর্থনীতিবিদ তথা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বর্তমান গভর্নর রঘুরাম রাজনও উদ্বেগ প্রকাশ করেন দেশে বাড়তে থাকা অসহিষ্ণুতার বিপদ নিয়ে। সেই তালিকায় এ বার যোগ হল আরও হেভিওয়েট নাম- মনমোহন সিংহ।
পড়ুন এই সংক্রান্ত আরও খবর
লখনউয়ে গাইতে এলে গুলাম আলির মুখে কালি ছেটানোর হুমকি শিবসেনার!
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘কিছু হিংসাত্মক উগ্রবাদী গোষ্ঠী যেভাবে মানুষের চিন্তা, বিশ্বাস, কথা বলা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নিচ্ছে তাতে গোটা দেশ গভীর উদ্বেগে।’’ তিনি বলেন, ‘‘ধর্ম প্রত্যেকের নিতান্ত ব্যক্তিগত বিষয় এবং কেউই, এমনকী রাষ্ট্রও, তাতে নাক গলাতে পারে না।’’ অর্থনীতির উপর এই অসহিষ্ণুতার প্রভাব প্রসঙ্গে মনমোহন সিংহ বলেন, ‘‘উদ্ভাবনী, নতুন উদ্যোগ এবং প্রতিযোগিতার প্রাথমিক শর্ত হল মুক্ত সমাজ ও উদার রাজনীতি যেখানে প্রত্যেকে নিজেদের চিন্তাভাবনা স্বাধীনভাবে প্রকাশ করতে পারেন। বিরোধী মত বা বাকস্বাধীনতার কণ্ঠরোধ তাই অর্থনীতির বিকাশের পক্ষে বিপজ্জনক।’’
প্রধীনমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবারই দাবি করেছেন, মনমোহন জমানার চেয়ে এখন দেশের আর্থিক প্রগতি অনেক বেশি। দিল্লি ইকনমিকস কনক্লেভে নিজের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মোদী এ দিন বলেন, ‘‘অর্থনীতির সব সূচকই বলছে ১৭ মাস আগে যখন আমরা সরকারের দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তখনকার চেয়ে ভারত এখন অনেক ভাল জায়গায় রয়েছে।’’ কিন্তু, একের পর এক অর্থনৈতিক সমীক্ষক বা অর্থনীতিবিদের বিশ্লেষণ বলছে, অসহিষ্ণুতা জারি থাকলে অর্থনৈতিক বিকাশ ধাক্কা খাবেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy