জয়ী: রায়ের পরে সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। বুধবার দিল্লি সচিবালয়ে। ছবি: পিটিআই।
উপরাজ্যপাল সাংবিধানিক প্রধান হলেও, সুপ্রিম কোর্ট আজ স্পষ্ট করে দিল— দিল্লির আসল ক্ষমতা রয়েছে নির্বাচিত সরকারের হাতেই।
আজ প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র-সহ শীর্ষ আদালতের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ জানিয়ে দেয়— উপরাজ্যপাল নয়, কর্তৃত্ব বা অধিকারের প্রশ্নে মূল ক্ষমতা রয়েছে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারেরই হাতে। সুপ্রিম কোর্টের রায়কে অরবিন্দ কেজরীবাল জনগণের জয় বলে ব্যাখ্যা করলেও, পাল্টা যুক্তিতে বিজেপি বলছে— শীর্ষ আদালত আজ কেবল সরকার ও উপরাজ্যপালের ক্ষমতার সীমারেখাটির ব্যাখ্যা করেছে মাত্র। বিজেপির দাবি, উল্টে কেজরীবালের অরাজক মানসিকতার সমালোচনাতেই সরব হয়েছে শীর্ষ আদালত।
কেন্দ্রের নির্দেশে উপরাজ্যপাল দিল্লির নির্বাচিত সরকারের কাজে বাধা দিচ্ছেন ওই অভিযোগে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী কেজরীবাল। দিল্লির প্রশাসনে মুখ্যমন্ত্রী না উপরাজ্যপাল, কার ক্ষমতা বেশি— তা নিয়েই শুরু হয় আইনি যুদ্ধ। গত বছর ওই মামলায় কেজরীবাল সরকারের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছিল দিল্লি সরকার। কিন্তু আজ সুপ্রিম কোর্ট উপরাজ্যপাল তথা কেন্দ্র বনাম কেজরীবালের সংঘাতে ইতি টেনে জানিয়ে দিয়েছে, দিল্লির নির্বাচিত সরকারই সমস্ত ক্ষমতার অধিকারী।
উপরাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে মন্তব্য করে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, প্রশাসনের শীর্ষ পদে থাকলেও, তিনি কেবল একজন বাধাদানকারীর ভূমিকা নিতে পারেন না। উপরাজ্যপাল প্রশাসনিক প্রধান হওয়ায় মন্ত্রিসভা তাদের নেওয়া সমস্ত সিদ্ধান্তই তাঁকে জানাবে ঠিকই, কিন্তু তিনি জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারের সমস্ত সিদ্ধান্তকে নিজের ইচ্ছেমতো আটকে দিতে পারেন না। মন্ত্রিসভার কোনও সিদ্ধান্ত দেখে উপরাজ্যপাল যদি মনে করেন গুরুতর কোনও মতপার্থক্যের জায়গা তৈরি হয়েছে তবেই তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাতে পারেন। কেবল বাধাদানের উদ্দেশ্যে প্রতিটি সিদ্ধান্তকেই মতপার্থক্যের যুক্তি দেখিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো উপরাজ্যপালের উচিত নয়। উপরাজ্যপালের বিরুদ্ধে আদালতের করা পর্যবেক্ষণ স্বভাবতই খুশি আপ নেতৃত্ব। আপ নেতা রাঘব চাড্ডা বলেন, ‘‘দিল্লির উন্নয়ন যে কেন্দ্র ও উপরাজ্যপাল মিলে আটকে রেখেছিলেন, তা আদালতের রায়েই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’
আজকের রায়ে আগের মতোই আইনশৃঙ্খলা, জমি ও পুলিশ— তিনটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কেন্দ্রের হাতেই থাকবে বলে জানিয়ে দিয়েছে আদালত। যার ভিত্তিতে বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্রের যুক্তি, ‘‘ক্ষমতার কোনও পুনর্বিন্যাস হয়নি। কেন্দ্র ও রাজ্য— যার হাতে যা ক্ষমতা ছিল, তাই থাকছে। দিল্লির জন্য আইন বানাবে সংসদই। ’’
একই সঙ্গে আদালত অবশ্য কেজরীবাল সরকারকেও সতর্ক করে জানিয়েছে, স্বৈরতন্ত্রের যেমন জায়গা নেই, তেমনি অরাজকতারও কোনও জায়গা হতে পারে না। সম্প্রতি উপরাজ্যপালের বাড়িতে ৯ দিন ধর্নায় বসেছিলেন কেজরীবাল। বিজেপির মুখপাত্রের দাবি, এক জন মুখ্যমন্ত্রীর এ ভাবে উপরাজ্যপালের বাড়িতে ধর্না যে আদালত ভাল ভাবে নেয়নি, সেটা ওই মন্তব্যেই স্পষ্ট হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আশা করব ওই কথা শোনার পর নৈরাজ্যের রাজনীতি ছেড়ে দিল্লির উন্নয়নে মন দেবেন কেজরীবাল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy