কঙ্গনা রানাওত। ফাইল চিত্র।
‘১৯৪৭ সালে যা এসেছিল, তা ভিক্ষা। ভারতপ্রকৃত স্বাধীনতা পেয়েছে ২০১৪ সালে।’
একটি টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে এমনই মন্তব্য করলেন সদ্য পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত, বিজেপি-ঘনিষ্ঠ অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওত। আর এই মন্তব্য ঘিরেই দিনভর তোলপাড় হল নেটমাধ্যম ও রাজনীতির ময়দান। অনেকেই বলছেন, প্রচার পাওয়ার লোভে বিজেপি-সঙ্ঘ পরিবার ঘনিষ্ঠ এই অভিনেত্রী আগেও নানা বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। কিন্তু এই মন্তব্য তো সত্যিকারের দেশদ্রোহের সামিল! কঙ্গনার ওই মন্তব্য নিয়ে আপ নেত্রী প্রীতি শর্মা মেনন মুম্বই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন। প্রীতির দাবি, উস্কানিমূলক ও দেশবিরোধী মন্তব্য করেছেন কঙ্গনা। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৪, ৫০৫, এবং ১২৪এ ধারায় কঙ্গনার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করবার জন্য আবেদন জমা দিয়েছেন আপ নেত্রী।
বিজেপি-ঘনিষ্ঠ কঙ্গনার মন্তব্য নিছক প্রচারের লোভে, নাকি দেশের স্বাধীনতা নিয়ে সঙ্ঘের একাংশের তত্ত্ব প্রচারের উদ্দেশ্যে করা, সে প্রশ্ন উঠল বারবার। একাংশের বক্তব্য, রাফাল যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে নতুন কেলেঙ্কারি সামনে আসতেই তাকে আড়াল করতে দলের অতি ঘনিষ্ঠ অভিনেত্রীকে দিয়ে এমন তত্ত্ব প্রচার করাচ্ছে বিজেপি। তবে বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার সুকৌশলে এই প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে যে, ২০১৪-য় মোদী ক্ষমতায় আসার পরেই ভারত প্রকৃত স্বাধীনতা পেয়েছে। এরই সূত্র ধরে ক’দিন আগে এক বিজেপি নেত্রী একটি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে দাবি করেছিলেন, ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা পায়নি, ‘লিজ’ পেয়েছিল। বিরোধীদের বক্তব্য, দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ না দেওয়া সঙ্ঘ ও বিজেপি নেতারা গোটা স্বাধীনতা আন্দোলনকেই খাটো করে দেখাতে মরিয়া।
বিজেপি শিবিরের তরফে কঙ্গনার মন্তব্য নিয়ে কেউই রা কাড়েননি। তবে চুপ থাকেননি পিলিভিটের বিজেপি সাংসদ বরুণ গাঁধী। সরাসরি কঙ্গনাকে আক্রমণ করে তাঁর মন্তব্য, ‘উনি কখনও গাঁধীজির আত্মত্যাগকে অসম্মান করেন। কখনও গাঁধীজির খুনির প্রশংসা করেন। এ বার দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসকে অবজ্ঞা করলেন। ভুলে গেলেন
রানি লক্ষ্মীবাই, চন্দ্রশেখর আজাদ, নেতাজি, ভগৎ সিংহ-সহ লক্ষাধিক স্বাধীনতা সংগ্রামীর আত্মত্যাগ। এই ধরনের ভাবনাকে পাগলের প্রলাপ বলব, না দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা বলব?’
নেটিজেনদের একাংশ সরাসরি কঙ্গনার যাবতীয় জাতীয় সম্মান এবং পদ্মশ্রী কেড়ে নেওয়ার দাবি তুলে সরব হয়েছেন। কেউ কেউ আবার বলেছেন, মোদী জমানায় বিজেপি সরকার বা মোদীর সমালোচনা করলেই দেশদ্রোহের মামলা করা বা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে দিয়ে নাগরিকদের হেনস্থা করা হয়। আমজনতার সমালোচনার
অধিকারও কেড়ে নেওয়া হয়। অথচ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সমালোচনা করলেও মোদী সরকার চুপ করে থাকে। এক কংগ্রেস নেতা টুইটারে বলেন, ‘আরএসএস
কোনও দিন এই বিষয়টা মানতে পারেনি যে, ওদের ব্রিটিশ
প্রভুরা ১৯৪৭ সালে ভারত ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল। ওদের দাসত্বের শেষ নেই। এটাতেও আশ্চর্য হই না, যে ওরা প্রায় ৫০ বছর ধরে তিরঙ্গা উত্তোলন করেনি। ২০১৪ সালে পরাধীনতা ফিরে আসাটা ওদের কাছে আসল স্বাধীনতা, কঙ্গনা রানাওত ওদেরই এক জন।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy