Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
CBI

‘বর্মার বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনও প্রমাণ নেই,’ বললেন তদন্তে নজর রাখা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি

বর্মার বিরুদ্ধে ১০ দফা অভিযোগ ছিল। তার মধ্যে ৪টি ‘ভিত্তিহীন’ বলে জানিয়েছে ভিজিল্যান্স কমিশন।

অলোক বর্মা।—ফাইল চিত্র।

অলোক বর্মা।—ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৯ ১২:৫৯
Share: Save:

অলোক বর্মাকে সিবিআই ডিরেক্টর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রশ্নে অস্বস্তি বাড়ল মোদী-সরকারের। বিরোধী আক্রমণ তো ছিলই, এ বার মুখ খুললেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ কে পট্টনায়েক। বললেন, অলোক বর্মাকে সরিয়ে দেওয়াটা হঠকারী সিদ্ধান্ত। দাবি করলেন, তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনও প্রমাণই মেলেনি।

বর্মার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যাসত্য যাচাইয়ে গঠিত সিভিসি-র অন্যতম সদস্য ছিলেন পট্টনায়েক। তাঁর নজরদারিতেই তদন্ত হয়েছিল। শুক্রবার সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, যে রিপোর্টের ভিত্তিতে অলোক বর্মার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাঁকে সিবিআই ডিরেক্টর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল, সিভিসির সেই রিপোর্টেই তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনও প্রমাণই ছিল না! এ বিষয়ে তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য,সিভিসি-র রিপোর্ট সিভিসি-রই। তাঁর নয়।

বৃহস্পতিবার রাতে সিভিসি-র রিপোর্টের ভিত্তিতেই উচ্চ পর্যায়ের বাছাই কমিটি বর্মাকে সিবিআই ডিরেক্টরের পদ থেকে ডিজি (ফায়ার সার্ভিসেস, সিভিল ডিফেন্স, হোম গার্ড) পদে বদলি করে দেয়। ওই পদের দায়িত্ব নিতে অবশ্য অস্বীকার করেন বর্মা। তিনি শুক্রবারই কর্মিবর্গ দফতরের সচিব সি চন্দ্রমৌলিকে পদত্যাগের চিঠিও পাঠিয়ে দিয়েছেন। যদিও সেই ইস্তফা চিঠি গ্রহণ করা হবে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়।

আরও পড়ুন: লাইভ: ‘মোদী-অমিতের ঘুম ছোটাতে’ জোট ঘোষণা মায়াবতী-অখিলেশের​

যেহেতু তাঁর নজরদারিতে সিভিসি তদন্ত হয়েছিল, তাই বৃহস্পতিবার রাতে উচ্চ পর্যায়ের বাছাই কমিটির এই সিদ্ধান্ত সামনে আসার পরই অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ কে পট্টনায়েকের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।তাঁদের প্রশ্নের উত্তরে পট্টনায়েক বলেন, “ওই রিপোর্টের যাবতীয় অনুসন্ধান সিভিসির-ই। আমি শুধুমাত্র নজরদারির দায়িত্বে ছিলাম। ওই রিপোর্টে অলোক বর্মার বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনও প্রমাণ আমি পাইনি। পুরো রিপোর্টটাই বানানো হয়েছিল রাকেশ আস্থানার অভিযোগের ভিত্তিতে। অথচ বিবৃতি দিতে রাকেশ আস্থানা আমার সামনে হাজিরই হননি। এ বিষয়ে আমার নিজস্ব মত সুপ্রিম কোর্টকে সমস্ত লিখে জানিয়েছিলাম।’’

সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বে গঠিত দুই সদস্যের বেঞ্চকে নিজের রিপোর্ট লিখে জানিয়েছিলেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ কে পট্টনায়েক। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত হওয়া সেই দুই পাতার রিপোর্টের সারমর্ম এই,‘৯.১১.২০১৮ তারিখে রাকেশ আস্থানার সই করা একটি বিবৃতি সিভিসি আমাকে ফরওয়ার্ড করেছে। এই বিবৃতি রাকেশ আস্থানা আমার উপস্থিতিতে দেননি।’নিজের ইস্তফা পত্রে বর্মা নিজেও লিখেছেন,সিভিসি আসলে রাকেশ আস্থানার বিবৃতিটাই তুলে দিয়েছে। এমনকি অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ কে পট্টনায়েকের নজরদারিতে সিভিসি তদন্ত হলেও, তাঁর সামনে আস্থানা হাজিরই হননি।

আরও পড়ুন: মঞ্চে মোদী উঠতেই ঝিমিয়ে গেল তালি!​

যেহেতু সিভিসি-র রিপোর্টে তিনি অলোক বর্মার বিরুদ্ধে কোনওরকম দুর্নীতির প্রমাণ পাননি, তাই অলোক বর্মাকে সরিয়ে দেওয়াটা খুব হঠকারী সিদ্ধান্ত বলে বিচারপতি পট্টনায়েকের মত।

সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, বর্মার বিরুদ্ধে ১০ দফা অভিযোগ ছিল। তার মধ্যে ৪টি ‘ভিত্তিহীন’ বলে জানিয়েছে ভিজিল্যান্স কমিশন। ৪টি অভিযোগে আরও তদন্তের সুপারিশ করা হয়েছে। দু’টি অভিযোগ ‘সঠিক’ বলে জানিয়ে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা বা ফৌজদারি তদন্তের সুপারিশ করেছে কমিশন। এক, মাংস ব্যবসায়ী মইন কুরেশির থেকে দু’কোটি টাকা ঘুষ নেওয়া। দুই, আইআরসিটিসি কেলেঙ্কারির তদন্ত থেকে এক অভিযুক্তর নাম বাদ দেওয়া। যে কেলেঙ্কারিতে লালুপ্রসাদ ও তাঁর ছেলে তেজস্বী যাদব জড়িত। বর্মার আয় বহির্ভূত সম্পত্তি, বেনামি কোম্পানির একটি তালিকাও গত দু’সপ্তাহ ধরে দিল্লিতে ছড়ানো হয়েছে। বিরোধীদের অবশ্য দাবি, রাফাল চুক্তি-সহ মোট ৭টি দুর্নীতির ফাইল বর্মার টেবিলে ছিল। যা খুলতে শুরু করলে মোদী সরকারের অনেক মাথাতেই টান পড়ত। সে জন্য তড়িঘড়ি তাঁকে সরানো হল।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE