এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নয় এনআরসি নিয়ে। —ফাইল চিত্র।
দেশ জুড়ে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) চালু করা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছয়নি সরকার। বরং জনগণনা নিয়ে সচেতনতা গড়ে তোলাই এই মুহূর্তে একমাত্র লক্ষ্য। সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রতিবেদনে প্রশ্নের মুখে পড়ে এমনটাই মঙ্গলবার জানাল কেন্দ্র। সর্বভারতীয় একটি সংবাদংমাধ্যমের প্রতিবেদনে মঙ্গলবার তেমনই দাবি করা হয়েছে। এর আগে ডিসেম্বরেও সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে কেন্দ্র জানিয়েছিল, জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি এখনই হচ্ছে না।
১৯ নভেম্বর ২০২০ সালে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্যসভায় ঘোষণা করেছিলেন, সাড়া দেশ জুড়ে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি কার্যকর করা হবে। জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি নিয়ে মানুষের সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য সার্বিক পরিকল্পনা করা হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ওই কমিটিকে জানায়, কোভিডের ফলে শুধু জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জিই নয়, জনগণনার প্রথম দফাও আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
অতিমারির কালো মেঘ একটু হালকা হতেই জাতীয় নাগরিক পঞ্জি নিয়ে নতুন করে নানা প্রশ্ন মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে। বিশেষ করে জনগণনা এবং জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি (এনপিআর) তৈরির প্রস্তুতি যখন শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই নিয়ে সংসদের স্থায়ী কমিটির তরফে একটি প্রতিবেদন জমা পড়েছিল সংসদে। তাতে এনপিআর এবং জনগণনা নিয়ে আতঙ্ক দূর করতে কিছু সুপারিশ করা হয়েছিল।
সেই প্রতিবেদনের জবাবেই কেন্দ্র জানিয়ে দেয়, এনআরসি নিয়ে এখনও কিছু ঠিক হয়নি। কেন্দ্র জানিয়েছে, জনগণনায় প্রত্যেক ব্যক্তি সম্পর্কে যে তথ্য সংগ্রহ করা হয়, বিভিন্ন প্রশাসনিক দফতর ছাড়া সাধারণত গোপনই রাখা হয়। আগের মতোই জনগণনা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করায় জোর দেওয়া হবে, যাতে ২০২১-এর জনগণনাও সফল ভাবে সম্পূর্ণ হয়। জনগণনা এবং এনপিআর একসঙ্গে করা নিয়ে আগেই যাবতীয় প্রশ্নের জবাব দেওয়া হয়েছে। আগেও বার বার জানানো হয়েছে যে, জাতীয় নাগরিক পঞ্জি নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’’
জনগণনা এবং জনসংখ্যা পঞ্জি নিয়ে মানুষের মনে ভয়ের সৃষ্টি হয়েছে বলে গত বছর ফেব্রুয়ারিতেই দাবি করে কংগ্রেস সাংসদ আনন্দ শর্মা নেতৃত্বাধীন সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। মঙ্গলবার রাজ্যসভায় নিজেদের সুপারিশ জমা করে তারা। তা নিয়েই সাফাই দেয় কেন্দ্র। জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি এবং জনগণনা নিয়ে ভুয়ো খবর রুখতে সামাজিক মাধ্যম, খবরের কাগজ, টেলিভিশন, নেট দুনিয়ার সংবাদমাধ্যম—সর্বত্র প্রচার চালানো হবে বলে জানানো হয়েছে। তবে কোভিড আবহের কথা মাথায় রেখে পরবর্তী নির্দেশ না আশা পর্যন্ত জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি এবং জনগণনা স্থগিত রাখা হবে বলেও জানিয়েছে কেন্দ্র।
জনগণনার জন্য বিপুর পরিমাণ টাকা খরচ না করে, আধার তথ্য যাচাই করে নেওয়ার পরামর্শও দেয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কিন্তু সরকারের যুক্তি, জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি এবং আধার, দু’টি কর্মসূচি একেবারেই আলাদা। জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি -র মাধ্যমে বিশদ তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সেই তুলনায় মানুষ সরকারি প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন কি না, সেই কাজেই মূলত ব্যবহৃত হয় আধার।
কিন্তু আধারের তথ্য ধরে আসন্ন জনগণনা এবং জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি কর্মসূচির আওতায় প্রত্যেকের পরিবার সংক্রান্ত তথ্যও একত্রিত করা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে ওই কমিটি। জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি তৈরির প্রক্রিয়া কতটা স্বচ্ছ, প্রত্যেক রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সামনে তুলে ধরতে হবে এবং তারা রাজি হলে তবেই কাজ শুরু করা যাবে বলেও সুপারিশ করে ওই কমিটি।
এনআরসি এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ঘিরে বিতর্কের জেরে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু রাজ্য জানিয়ে দিয়েছে যে তারা জনসংখ্যা পঞ্জি তৈরি করতে দেবে না সরকারকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy