Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Suvendu Adhikari

বারুইপুরের পথে ‘বিশ্বাসঘাতক’ শুভেন্দু এবং রাজীবকে কালো পতাকা দেখাল তৃণমূল

শুভেন্দু বিকালের উড়ানে দিল্লি রওনা হচ্ছেন। অমিত শাহের বাড়িতে তাঁকে যে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তা কয়েকদিন আগেই লিখেছিল আনন্দবাজার ডিজিটাল।

 শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৫:২৭
Share: Save:

বারুইপুরে যোগদান মেলায় যাওয়ার পথে শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে কালো পতাকা দেখাল তৃণমূল। পদ্মপুকুর এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। তবে তা নিয়ে কোনও গোলমাল বা সমস্যা হয়নি। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা নিয়ে নির্বিঘ্নেই সভাস্থলে পৌঁছন রাজ্যের দুই প্রাক্তন মন্ত্রী। তাঁদের কনভয় যাওয়ার সময় তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবেই কালো পতাকা দেখান। বারুইপুরের সভায় গিয়েছিলেন মুকুল রায়ও।

পরে রাজীব বলেন, ‘‘হতাশা থেকে তৃণমূলের লোকজন এখন আমাদের কালো পতাকা দেখাচ্ছে। তৃমমূল শেষ হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে। কালো পতাকা দেখানো তারই পরিচয়।’’ তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায় যার জবাবে বলেন, ‘‘এতদিন সরকারে থেকে যাঁরা দুধ-মধু খেয়ে দল ছেড়েছেন, তাঁদের প্রতি দলের নীচুতলার কর্মীদের ক্ষোভ থাকাটাই স্বাভাবিক। আর তারা তো কোনও গোলমাল করেনি। শান্তিপূর্ণ ভাবে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে কালো পতাকা দেখিয়েছে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘বিশ্বাসঘাতকদের সঙ্গে এমনই হয়।’’

প্রসঙ্গত, বারুইপুরের সভার পরেই শুভেন্দু বিকালের উড়ানে দিল্লি রওনা হচ্ছেন। অমিত শাহের বাড়িতে বঙ্গ বিজেপি-র নেতাদের নিয়ে বৈঠকে তাঁকে যে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তা কয়েকদিন আগেই লিখেছিল আনন্দবাজার ডিজিটাল। লেখা হয়েছিল, বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর এই প্রথম শুভেন্দুকে দিল্লির বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। বাস্তবে অন্যকিছু ঘটেনি।

বারুইপুরের ওই সভা র আয়োজন করা হয়েছিল বিজেপি-তে যোগদানের জন্য। যে সমস্ত সভাকে বিজেপি ‘যোগদান মেলা’ বলে অভিহিত করে থাকে। অর্থাৎ, যেখানে মেলা লোকজন বিজেপি-তে যোগ দেন (তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য মঙ্গলবার কটাক্ষ করেছেন, ‘‘যোগহীন মেলায় যোগদান করবে কে!’’)। মঙ্গলবারের সভায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দেন ডায়মন্ড হারবারের বিধায়ক দীপক হালদার-সহ অনেকে। কিন্তু যোগদানের পর্ব সরিয়ে রাখলে বাকিটা পুরোই রাজনৈতিক আক্রমণ সংক্রান্ত। বারুইপুরের সভা থেকে রাজ্য সরকার এবং প্রশাসনকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন রাজীব-শুভেন্দু। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বলেন, ‘‘বিজেপি ক্ষমতায় এলে বেকারদের জন্য স্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা হবে। চুক্তিভিত্তিক চাকরি দিয়ে বেকারদের হতাশা মোছার চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার।’’ তাঁর কথায়, ‘‘কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে যৌথ ভাবে কাজ করতে হবে। আপনাদের অনেক ধমক-চমক দেবে। ভয় দেখাবে। আপানার কোনও প্ররোচনায় পা দেবেন না।’’ পাশাপাশিই রাজীব ডুমুরজলার সভার মতোই স্লোগান তোলেন, ‘‘চলো পাল্টাই!’’ তার পর জনতার সঙ্গে স্লোগান দেন, ‘‘চুপচাপ, পদ্মে ছাপ!’’ তার পরেই বলেন, ‘‘যতই কুৎসা হবে, ততই আমাদের সাহস আর জেদ বাড়বে!’’

রাজীব যখন নীতিগত দিক দিয়ে তাঁর প্রাক্তন সহকর্মীদের রাজনৈতিক আক্রমণ করেছেন, তখন শুভেন্দু কঠোরতর আক্রমণ করেছেন মমতার সাংসদ ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল তো একটা রাজনৈতিক দল নয়, প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। দু’জন মিলে দল চালান। তাঁদের একজন হলেন তথাকথিত ভাইপো। এই দল চালাতে বিহার থেকে লোক আনা হয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূল চাল-চোর, আমপানের টাকা-চোর। কয়লা-চোর। আর এখন টিকা-চোর! আপনাদের লড়তে হবে।’’ তবে ওই রাজনৈতিক আক্রমণের পাশাপাশিই রাজ্য সরকারকেও বিঁধেছেন শুভেন্দু। বলেছেন, ‘‘চাকরি নেই। ৫ থেকে সাড়ে ৫ লক্ষ পদ তুলে দিয়েছে! প্রকৃত বেতন কেউ পায় না। সব চুক্তিভিত্তিক চাকরি। করোনা না এলে তো জানতেই পারতাম না, যে বাংলার গ্রামগঞ্জের এত লোক বাইরে কাজ করেন!’’

প্রসঙ্গত, রাজ্যে ‘পরিবর্তন’-এর সূচনা হয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা দিয়ে। ওই দু’টি জেলায় প্রথম জেলা পরিষদ দখল করেছিল তৃণমূল। তার পরে তারা গোটা রাজ্যে ক্ষমতা বিস্তার করে। বারুইপুরের সভায় সেই কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু। বলেছেন, ‘‘এটা নাকি তৃণমূলের দুর্গ!। কিন্তু এই জেলা থেকেই বিজেপি সবচেয়ে ভাল ফল করবে। সংখ্যালঘু ভাইয়েরা কি শুধু তোমাদের ভোট দেবে! নরেন্দ্র মোদীজি কি লকডাউনের সময় শুধু বেছে বেছে চাল দিয়েছেন? সংখ্যালঘু ভাই-বোনদের চাল দেননি? টাকা দেননি?

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC mukul roy Suvendu Adhikari Rajib Bandopadhyay
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy