দীর্ঘ আড়াই দশক পরে আগামিকাল দিল্লিতে বিজেপির কোনও মুখ্যমন্ত্রী শপথ নিতে চলেছেন। এনডিএ-র শক্তি প্রদর্শনের লক্ষ্যে আগামিকাল মুখ্যমন্ত্রী পদে রেখা গুপ্তের ওই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে সব শরিক দলের নেতাদের, বিশেষ করে শরিক দলের দুই মুখ্যমন্ত্রী, অন্ধ্রপ্রদেশের চন্দ্রবাবু নায়ডু ও বিহারের নীতীশ কুমারকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বিজেপি। চন্দ্রবাবু আগামিকালের শপথে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেলেও রাত পর্যন্ত যা খবর, তাতে দিল্লি আসছেন না নীতীশ। অথচ এ বছরেই ভোট রয়েছে বিহারে। সেখানে জেডিইউয়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখার লড়াইয়ে নামবে বিজেপি। ঠিক তার আগে শপথগ্রহণের মঞ্চে শরিকি মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতি বিজেপির অস্বস্তি বাড়ানোর পক্ষে যথেষ্ট বলেই মনে করছেন রাজনীতিকরা।
স্বাভাবিক ভাবেই নীতীশের অনুপস্থিতি দুই শিবিরের মনোমালিন্য ও দূরত্ব বৃদ্ধির সম্ভাবনাকে নতুন করে উস্কে দিয়েছে। রাজনীতির অনেকের মতে, সামনেই বিহারে ভোট। তার আগে পরিকল্পিত ভাবে দিল্লির শপথে অনুপস্থিত থেকে দর কষাকষির রাস্তা খোলা রাখার কৌশল নিয়েছেন নীতীশ। যদিও সেই যুক্তি মানতে নারাজ বিজেপি নেতৃত্ব।
বিহার বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘এ নিয়ে অহেতুক জল্পনা শুরু হয়েছে। নীতীশ কুমার নিজের রাজ্যে ‘প্রগতি যাত্রা’য় ব্যস্ত রয়েছেন। আগামিকাল নীতীশের পূর্ব-নির্ধারিত কর্মসূচি থাকায় তিনি আসতে পারছেন না।’’ নীতীশের পরিবর্তে তাঁর দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব রঞ্জন সিংহ ও দলের কার্যনির্বাহী সভাপতি সঞ্জয় ঝা বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন।
বিহারে এ বারের ভোট নীতীশের নেতৃত্বে হবে বলে বিজেপি ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিলেও, নীতীশ খুব ভাল করেই জানেন ধীরে ধীরে রাজ্যে তাঁকে এবং তাঁর দলকে গুরুত্বহীন করে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই এগোচ্ছে বিজেপি। সেই কারণে ভোটের আগে থেকে পাল্টা চাপ বাড়ানোর রাস্তা বেছে নিয়ে এগোতে চাইছেন তিনি। রাজনীতিকদের একাংশের মতে, নীতীশ এই কারণেই পরিকল্পিত ভাবে কালকের শপথগ্রহণ এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল নিয়েছেন। বিজেপির জোট-শরিক হলেও দলের স্বার্থে তিনি যে আপসে রাজি নন, তা আগামিকালের অনুপস্থিতির মাধ্যমে নীতীশ বিজেপিকে বুঝিয়ে দিতে চান বলেই মনে করছেন রাজনীতিকেরা।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)