Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

নিজ দলেরই ৮! মন্ত্রিসভা বাড়িয়ে ‘জবাব’ নীতীশের

গত কাল বিকেল পর্যন্ত ঠিক ছিল চার জনকে মন্ত্রিসভায় নেওয়া হবে। তিন জন জেডিইউয়ের এবং এক জন লোক জনশক্তি পার্টির। কিন্তু আচমকাই রাতে বদলে যায় সিদ্ধান্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পটনা শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৯ ০৩:২৯
Share: Save:

মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ করলেন নীতীশ কুমার। নিলেন আট জনকে। সকলেই তাঁর নিজের দলের। রাজ্য রাজনীতির অনেকে একে নীতীশের ‘মাস্টার স্ট্রোক’ হিসেবেই দেখছেন।

গত কাল বিকেল পর্যন্ত ঠিক ছিল চার জনকে মন্ত্রিসভায় নেওয়া হবে। তিন জন জেডিইউয়ের এবং এক জন লোক জনশক্তি পার্টির। কিন্তু আচমকাই রাতে বদলে যায় সিদ্ধান্ত। আট জন শপথ নেবেন বলে রাজ্যপালকে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ দেখা গেল আট জনই জেডিইউয়ের। বিজেপি থেকে এক জনকে মন্ত্রী করার ‘প্রস্তাব’ দেওয়া হয়েছিল বটে, বিজেপি আপাতত তাতে সাড়া দেয়নি। জানিয়ে দিয়েছে, দল তাদের কোটার শূন্য মন্ত্রীর পদ ভবিষ্যতে পূরণ করবে।
এনডিএ শরিক লোক জনশক্তি পার্টির ছেড়ে যাওয়া মন্ত্রীপদটিও রামবিলাসের দলকে দিতে চাননি নীতীশ। যা নিয়ে তাঁর উপরে ক্ষুব্ধ রামবিলাস পাসোয়ান এবং তাঁর ভাই পশুপতি পারস।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় একটি মাত্র পূর্ণমন্ত্রীর পদ দেওয়ায় প্রস্তাব দেওয়ায় আগে থেকেই ক্ষুব্ধ ছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। তার উপরে সেই মন্ত্রীর পদ কাকে দেওয়া হবে, তা নিয়ে দলের মধ্যেও গোলমাল শুরু হয়। নরেন্দ্র মোদীর শপথ অনুষ্ঠানের পরে বিহারে ফিরে আচমকাই রাজ্য মন্ত্রিসভা বিস্তার করার সিদ্ধান্ত জানান নীতীশ।

বিজেপি নেতারাও ঘনিষ্ঠ মহলে স্বীকার করেছেন, লোকসভা নির্বাচনে দেশ জুড়ে দলের বিপুল জয়ের পরে তাঁদের ব্যবহারে বিমর্ষ হয়ে পড়েছেন নীতীশ। এটা উভয় পক্ষের কাছেই স্পষ্ট, আসন বণ্টনে বিজেপি যথেষ্ট উদারতা দেখিয়েছিল। জোটসঙ্গীদের ইচ্ছামতো বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রার্থী দেওয়ার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছিল। কিন্তু মন্ত্রিসভায় আসন দেওয়ার ব্যাপারে তারা ততটা উদার হয়নি। প্রত্যেক জোটসঙ্গী দলকে ‘প্রতীকী প্রতিনিধিত্ব’ দেওয়ার নামে একটি করে পূর্ণমন্ত্রীর পদ দেওয়া হয়েছে। কোন দল কত আসন পেয়েছে তা দেখা হয়নি। নীতীশ মন্ত্রিসভায় সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের পক্ষে ছিলেন। কিন্তু বিজেপি তাতে আমল না-দেওয়ায় মোদীয় দ্বিতীয় দফার সরকারে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে জেডিইউ। নীতীশ এ বার নিজের রাজ্যে তারই জবাব দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। নীতীশ বলেছেন, ‘‘আমরা জোট গড়েছিলাম বিহারের স্বার্থে। কোনও প্রতীকী প্রতিনিধিত্বের ইচ্ছা আমাদের নেই। তবে আমরা বিজেপিকে জানিয়েছি, আমরা তাদের সঙ্গে আছি।’’

বিহার বিধানসভায় ২৪৩ জন সদস্য রয়েছেন। মন্ত্রিসভায় সর্বোচ্চ ৩৬ জনের ঠাঁই হতে পারে। গত কাল পর্যন্ত ছিলেন ২৫ জন মন্ত্রী। জেডিইউয়ের বক্তব্য, তাঁদের কোটায় ন’জন এবং বিজেপির কোটায় দু’জনকে মন্ত্রী করা যেতে পারে। নিজেদের কোটার আটটি পদ পূরণ করলেও বিজেপির এক জনকে মন্ত্রী করার পরামর্শ দিয়েছিলেন নীতীশ। কিন্তু তাতে পত্রপাঠ না করে দেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা সুশীল মোদী টুইট করে জানান, “নীতীশ কুমার বিজেপিকে শূন্য মন্ত্রীপদ পূরণের প্রস্তাব দিয়েছেন। বিজেপি তা ভবিষ্যতে পূরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।” অন্য দিকে জেডিইউ মহাসচিব তথা প্রধান মুখপাত্র কে সি ত্যাগী এ দিন বলেন, “এনডিএতে থাকলেও আগামীতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় যোগ দেবে না আমাদের দল।”

রাজ্যের নতুন আট মন্ত্রীর মধ্যে জাতি সমীকরণ বজায় রাখার চেষ্টা করেছেন নীতীশ। উচ্চবর্ণ, ওবিসি, ইবিসি এবং দলিত সম্প্রদায় থেকে দু’জন করে প্রতিনিধি বেছেছেন তিনি। প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী অশোক চৌধরি, নরেন্দ্র কুমার যাদব, লক্ষ্মেশ্বর রায়, রামসেবক সিংহ, শ্যাম রজক, বীমা ভারতী, নীরজ কুমার এবং সঞ্জয় ঝা এ দিন শপথ নিয়েছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Nitish Kumar Bihar CM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy