—প্রতীকী ছবি।
মাঝারি আয়ের দেশের ফাঁদ টপকে ২০৪৭-এ ‘বিকশিত ভারত’ বা উন্নত অর্থনীতির লক্ষ্যে পৌঁছতে হলে আগামী ২০ থেকে ৩০ বছর নিরন্তর ৭ থেকে ১০ শতাংশ আর্থিক বৃদ্ধি প্রয়োজন। তা হলেই স্বাধীনতার শতবর্ষে ভারতে মাথা পিছু আয় ১৮ হাজার ডলার এবং অর্থনীতির বহর ৩০ লক্ষ কোটি ডলারে পৌঁছনো সম্ভব বলে জানাল নীতি আয়োগ।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বাধীনতার শতবর্ষ ২০৪৭-এ ‘বিকশিত ভারত’ বা উন্নত অর্থনীতির লক্ষ্য স্থির করেছেন। কী ভাবে সে লক্ষ্যে পৌঁছনো যাবে, তার ‘ভিশন ডকুমেন্ট’ তৈরির জন্য আজ নীতি আয়োগ প্রাথমিক রূপরেখা নিয়ে একটি ‘অ্যাপ্রোচ পেপার’ তৈরি করেছে। প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে সেই প্রাথমিক রূপরেখা পেশ করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে রাজ্যগুলি নিজের ‘ভিশন ডকুমেন্ট’ তৈরি করবে। মুখ্যমন্ত্রীদের মতামত, রাজ্যগুলির কী ভূমিকা হবে তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে।
আজ পশ্চিমবঙ্গ বাদে বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলি-সহ মোট ১০টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গরহাজির ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেছেন, ‘জ়িরো পভার্টি’ বা দারিদ্রশূন্য ভারতের লক্ষ্য নিতে হবে। সরকারি কর্মসূচির স্তরে দারিদ্র দূরীকরণের বদলে গ্রামের স্তরে, প্রতিটি ব্যক্তির দারিদ্র দূরীকরণকে অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার। কেন্দ্র-রাজ্যের মধ্যে সমন্বয়, লগ্নির জন্য সব দিক থেকে সহায়ক পরিবেশ তৈরির কথাও বলেছেন তিনি।
এত দিন ‘বিকশিত ভারত’-এর লক্ষ্যই স্থির ছিল না। আজ নীতি আয়োগ জানিয়েছে, অর্থনৈতিক দিক থেকে উন্নততর ভারতের জন্য জিডিপি ৩০ লক্ষ কোটি ডলারে নিয়ে যেতে হবে। দেশের বর্তমান জিডিপি ৩.৩৬ লক্ষ কোটি ডলারের প্রায় নয়গুণ। এখন ভারতে মাথা পিছু আয় বছরে ২,৩৯২ ডলার। বিশ্ব ব্যাঙ্কের সংজ্ঞা অনুযায়ী, ২০২৩-এ যে সব দেশের মাথা পিছু আয় ১৪,০০৫ ডলার ছিল, তাদের উন্নত অর্থনীতি বা বেশি আয়ের দেশ বলা হবে। ভারতকে ২০৪৭-এ মাথা পিছু আয় এখনকার তুলনায় ৮ গুণ বাড়িয়ে ১৮ হাজার ডলারে নিয়ে যেতে হবে। জিডিপি-তে শিল্পের অবদান হবে ৩৪ শতাংশ। যা বর্তমানে মাত্র ২৮ শতাংশ। সামাজিক লক্ষ্য হিসেবে সাক্ষরতার হার এখনকার ৭৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০০ শতাংশ, চাকরিরত কর্মী সংখ্যায় মহিলাদের অনুপাত এখনকার ৩৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৭ শতাংশ ও প্রশিক্ষিত কর্মীর হার ৩২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০০ শতাংশ করতে হবে।
নীতি আয়োগের অনুমান, ২০৪৭-এ ভারতের জনসংখ্যা এখনকার ১৪০ কোটি থেকে বেড়ে ১৬৫ কোটি হবে। কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা ৯৬ কোটি থেকে বেড়ে ১১২ কোটিতে পৌঁছবে। কিন্তু সে সময় জনসংখ্যার মাঝামাঝি বয়স এখনকার ২৯ বছর থেকে বেড়ে ৩৭ বছর হবে। ফলে এখন যে তরুণ জনসংখ্যার সুবিধে মিলছে, তখন বুড়িয়ে যাওয়া জনসংখ্যার সমস্যা তৈরি হবে বলে আজ মেনে নিয়েছেন নীতি আয়োগের সিইও বি ভি আর সুব্রহ্মণ্যম।
এত দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে আরএসএসের সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের কথা বলেছিলেন। কিন্তু নীতি আয়োগের সিইও-র মতে, জন্মের হার কমছে। যত খানি জন্মের হার হলে জনসংখ্যা একই থাকে, দু’তিনটি বাদে প্রায় সব রাজ্যেই জন্মের হার তার থেকে কম। জনসংখ্যায় বৃদ্ধদের সংখ্যা বাড়বে। এখন যেটা জাপানের সমস্যা। সেই বৃদ্ধদের আর্থিক দায়িত্ব কী ভাবে নেওয়া হবে, তা চিন্তার বিষয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy